• জমি-বাড়ির ক্রেতা-বিক্রেতা টার্গেট করে প্রতারণা বাড়ছে
    বর্তমান | ২৭ জুলাই ২০২৩
  • সোহম কর, কলকাতা: দক্ষিণ কলকাতার এক বাসিন্দা হঠাত্ই দেখেন, ব্যাঙ্ক থেকে ৩ হাজার টাকা কেটে নেওয়ার মেসেজ এসেছে ফোনে। তিনি তো অবাক! সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঙ্কে ফোন করেন ওই ব্যবসায়ী। পুলিসেরও দ্বারস্থ হন তিনি। আধিকারিকরা তাঁকে আস্বস্ত করেন, টাকা ঠিকই পেয়ে যাবেন। তারপর জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি কাউকে পিন নম্বর দিয়েছিলেন? কোনও লিঙ্কে ক্লিক করেছিলেন? সব প্রশ্নের উত্তরেই সেই ব্যক্তি ‘না’ বলেন। দেখা যায়, ফোনে আসা মেসেজে ‘এইপিএস’-এর মাধ্যমে টাকা কাটার কথা উল্লেখ রয়েছে। পুলিস সূত্রে খবর, রাজ্যজুড়ে এইপিএস অর্থাত্ ‘আধার এনেবেলড পেমেন্ট সিস্টেম’-এর মাধ্যমে জালিয়াতির সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। গত কয়েক মাসে শুধু কলকাতা পুলিসের কাছেই কয়েকশোর বেশি অভিযোগ এসেছে বলে সূত্রের খবর। জালিয়াতদের হাত থেকে বাঁচতে ‘এম আধার’ অ্যাপ অথবা মাই আধার ওয়েবসাইটে বায়োমেট্রিক বা আধার লক করার পরামর্শ দিচ্ছে পুলিস।

    কলকাতা পুলিস সূত্রে খবর, সাইবার জালিয়াতির এটা একটা নতুন ট্রেন্ড। অভিযোগকারীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিস জানতে পেরেছে, মূলত যাঁরা গত কয়েক মাসে জমি-বাড়ি-ফ্ল্যাট বেচা-কেনা করেছেন, তাঁদের সঙ্গেই এমন প্রতারণা হচ্ছে। 

    এই আধার এনেবেলড পেমেন্ট সিস্টেম বিষয়টা কী? গ্রামে-গঞ্জে অনেক জায়গাতেই এটিএম থাকে না। সেই জায়গাগুলোতে ব্যাঙ্ক সহায়তা কেন্দ্র বা সিএসপি খোলে। গ্রাহকরা আধার নম্বর ও বায়োমেট্রিক দিলে সেই কেন্দ্র থেকে টাকা তুলতে পারেন। এখন তো সমস্ত অ্যাকাউন্টের সঙ্গেই আধার লিঙ্ক থাকে। তবে এই পদ্ধতিতে ১০ হাজারের বেশি টাকা একবারে তোলা যায় না। দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেই সিএসপি থেকেই টাকা তোলা হচ্ছে। পুলিস সূত্র বলছে, বায়োমেট্রিক তথ্য, আধার নম্বর দিয়ে এখন মানুষ বিভিন্ন জায়গায় পরিষেবা নিয়ে থাকেন। কোনওভাবে জালিয়াতরা সেই তথ্য চুরি করছে। সহায়তা কেন্দ্রগুলোতে সেই তথ্য দিয়ে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে। ব্যাঙ্কের লোকেরা সাধারণত গ্রাহকদের চেনেন। তাই অন্য লোক গেলে ব্যাঙ্ক কর্মীরা ধরে ফেলবেন। তাই সহায়তা কেন্দ্রগুলোকেই টার্গেট করছে জালিয়াতরা। 

    যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এইভাবে কেউ প্রতারিত হলে টাকা ফেরত পাওয়া যায়। কীভাবে? ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (এনপিসিআই) এই সংক্রান্ত অভিযোগ জানানোর জন্য একটি পোর্টাল তৈরি করেছে। সেখানে গিয়ে রেজিস্টার করলে সুরাহা পাওয়া যায়। কেউ প্রতারিত হলে, তবে এখানে অভিযোগ জানাতে হবে। তার আগে কী করবে সাধারণ মানুষ? পুলিসের পরামর্শ, উপায় একটাই। অ্যাপ অথবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আধার-বায়োমেট্রিক লক করতে হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)