• লালনের মৃত্যুর ঘটনায় দুই সিবিআই অফিসারের পলিগ্রাফ টেস্টের নির্দেশ
    বর্তমান | ২৭ জুলাই ২০২৩
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: বগটুই অগ্নিকাণ্ডে ধৃত লালন শেখের মৃত্যুর ঘটনায় এবার সিবিআইয়ের দুই অফিসারের পলিগ্রাফ টেস্ট করার নির্দেশ দিল রামপুরহাট আদালত। বুধবার সিটের আবেদনের ভিত্তিতে এমনই নির্দেশ দেন রামপুরহাট আদালতের এসিজেএম সৌভিক দে। 

    ২০২২ সালের ২১ মার্চ বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুন করা হয়। কিছুক্ষণ পরেই ভাদু অনুগামীরা বগটুই গ্রামে ১২টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয় দশজনের। ঘটনার নয়মাস পর ৩ ডিসেম্বর ঝাড়খণ্ডের পাকুর থানার নরোত্তমপুর থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার মূল অভিযুক্ত ভাদুর ছায়াসঙ্গী লালন শেখকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। প্রথমে লালনের ছয়দিনের সিবিআই হেফাজত হয়। ১০ ডিসেম্বর ফের তাকে আদালতে পেশ করা হলে দ্বিতীয়বার তিনদিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেয় বিচারক। ১২ ডিসেম্বর হার্ডডিস্কের খোঁজে লালনকে নিয়ে আসা হয় বগটুই গ্রামে। 

    মৃতের স্ত্রী অভিযোগে জানান, সেখানে লালন ও তাঁকে মারধর করেন সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার ভিলাস বি মাবগুট।  তিনি বলেন, হার্ডডিস্ক না মিললে স্বামীকে আর পাওয়া যাবে। এমনকী ৫০ লক্ষ টাকা দিলে সবাইকে বাঁচিয়ে দেব বলেন তাঁরা। ঠিক তার কয়েক ঘণ্টা পর সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পের বাথরুম থেকে লালনের গলায় গামছা জড়ানো ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। সিবিআইয়ের দাবি, লালন আত্মহত্যা করেছে। যদিও ওইদিন রাতেই মৃতের স্ত্রী সিবিআই অফিসার, কনস্টেবল সহ সাতজনের নামে স্বামীকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। প্রথমে পুলিস ও পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত শুরু করে সিআইডি। এরই মধ্যে ১ মে হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় সিআইডি নয়, লালন মৃত্যুর তদন্ত করবে বিশেষ তদন্তকারী দল সিট।

    এদিন সিটের প্রধান প্রিয়াঙ্কা মালিঠা ও মণিশংকর মজুমদার আদালতে তিনটি আবেদন জানান। একটি হল, হাইকোর্টের নির্দেশে রামপুরহাট আদালতে মৃতের স্ত্রী ও ভাগনি বুলটি বিবি সহ কয়েকজনের গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছিল। তার কপি পেতে চায় সিট। দ্বিতীয়ত, ওইদিন লালনের সঙ্গে সিবিআই হেফাজতে অগ্নিকাণ্ডে ধৃত অপর অভিযুক্ত জাহাঙ্গির শেখ ছিল। বর্তমানে সে রামপুরহাট জেলে রয়েছে। সিটের সদস্যরা জেলে গিয়ে জাহাঙ্গিরকে জেরা করে জানতে চায়, সেদিন ঠিক কী হয়েছিল। তৃতীয়ত, সিবিআই অফিসার ভাস্কর মণ্ডল সহ আরও একজনের পলিগ্রাফ টেষ্ট করতে চায় সিটের তদন্তকারী অফিসাররা। অর্থাৎ জেরা চলাকালীন তাঁরা মিথ্যা না সত্যি কথা বলছেন, তা জানতে লাই ডিটেক্টর মেশিনের সামনে ওই দুই সিবিআই অফিসারকে বসাতে চায় সিট। তবে এর মধ্যে ভাস্করের নাম এফআইআরে থাকলেও অপরজনের নাম নেই। উল্লেখ্য, লালন মৃত্যুর সিআইডি তদন্ত চলাকালীন সিবিআই বিভাগীয় তদন্ত করে তার ভিত্তিতে নিজেদের দু’জন অফিসার ও দু’জন কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করে। 

    সরকারি আইনজীবী সুরজিৎ সিনহা বলেন, সিটের তিনটি আবেদনেই সম্মতি জানিয়েছেন বিচারক। তবে পলিগ্রাফ টেষ্ট করার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে অভিযুক্তদের সম্মতি নিতে হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)