• বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ খারিজ হওয়া সেই নিয়োগ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে ক্যাভিয়েট দাখিল
    আনন্দবাজার | ১১ অক্টোবর ২০২৩
  • কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ
    গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ আধ ঘণ্টার মধ্যে খারিজ করে শুক্রবার (৬ অক্টোবর) নজির
    গড়েছিল বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। ওই মামলায় মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে
    ক্যাভিয়েট দাখিল করল কলেজ সার্ভিস কমিশন। মামলাকারী যদি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ
    হয়ে শুনানির আবেদন জানান, তা হলে যাতে শুনানির সময় কলেজ সার্ভিস
    কমিশন তাতে অংশ নিতে পারে সে কারণেই এই ক্যাভিয়েট দাখিল। অর্থাৎ একতরফা শুনানি
    রুখতেই শীর্ষ আদালতে এই ক্যাভিয়েট দাখিল করা হয়েছে কলেজ সার্ভিস কমিশনের তরফে।

    শুক্রবার বিকেলে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ওই
    মামলায় একটি নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সেই নির্দেশ
    দেওয়ার আধ ঘণ্টার মধ্যে বিচারপতির নির্দেশ খারিজও করে দিল। একইসঙ্গে বেঞ্চ প্রশ্ন
    তুলল, ‘‘এই মামলা নিয়ে এত তাড়াহুড়ো করার কী ছিল? এই মামলা তো
    জরুরি ভিত্তিতে শোনার তো কথা ছিল না!’’

    স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির মতোই কলেজে নিয়োগে
    দুর্নীতির অভিযোগ এনে একটি মামলার শুনানি চলছিল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক
    বেঞ্চে। সেই শুনানিতেই শুক্রবার বিকেলে বিচারপতি বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটকে
    নির্দেশ দেন, ‘‘রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে কলেজ সার্ভিস কমিশনের
    চেয়ারম্যান দীপক করকে আদালতে নিয়ে আসুন।’’ কিন্তু আধ ঘণ্টার মধ্যেই হাই কোর্টের
    ডিভিশন বেঞ্চ খারিজ করে দেয় ওই নির্দেশ।

    বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের
    ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ‘‘মামলাটি শুরুতে বিচারপতি গঙ্গেপাধ্যায়ের বেঞ্চে
    ছিল না। মামলাটি চলছিল বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চে। অস্থায়ী বেঞ্চ হিসাবে ওই
    মামলাটি শুনানির জন্য বিচারপতি গঙ্গেপাধ্যায়ের বেঞ্চে পাঠানো হয়েছিল। তাই এ
    ব্যাপারে বিচারপতি চন্দ যে নির্দেশ দিয়েছিলেন তা-ই বহাল থাকবে।’’

    যদিও ডিভিশন বেঞ্চ তাঁর নির্দেশ খারিজ করার পরও
    রাত সাড়ে ৮টায় এজলাস বসিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু সেখানে তিনি
    বিশেষ কিছু বলেননি। এজলাসে বসে তিনি ঘোষণা করেন, ‘‘ডিভিশন বেঞ্চের
    নির্দেশ মতো আমি আর শুনানি করছি না।’’ তবে একই সঙ্গে কেন ওই মামলা তিনি
    শুনেছিলেন তার ব্যাখ্যাও দেন বিচারপতি। এজলাসে বসে তিনি বলেন, ‘‘আমার
    কোর্টে মামলা এসেছিল বলেই আমি শুনেছিলাম।’’

    শুরু কলেজে নিয়োগে অস্বচ্ছতা সংক্রান্ত একটি
    মামলা থেকে। কলেজে নিয়োগের প্যানেলে অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনেছিলেন এক
    চাকরিপ্রার্থী। তাঁর নাম মেনালিসা ঘোষ। তাঁর অভিযোগ ছিল ২০২০ সালের কলেজ সার্ভিস
    কমিশনের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে। ২০২৩ সালে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্যানেল প্রকাশিত
    হয়। কিন্তু শুধু নাম ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রকাশিত হলেও তাতে নম্বর প্রকাশ করা হয়
    নি। এ ব্যাপারেই আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ওই চাকরিপ্রার্থী। তাঁর দাবি ছিল,
    ওই নিয়োগের প্যানেলে প্রার্থীদের নম্বরও প্রকাশ করতে হবে।
    মামলাকারীর এই আবেদন শোনার পরই কলেজ সার্ভিস কমিশনকে বিচারপতি হলফনামা দিয়ে
    জানাতে বলেন, কেন প্যানেলে নম্বর রাখা হয়নি? প্যানেল
    প্রকাশের নিয়মই কী? কিন্তু কমিশন সেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই
    নির্দেশ না মেনে পাল্টা সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেছিল ডিভিশন বেঞ্চে।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)