• কয়লা তুলুক ইসিএল-ই, সভা করে দাবি
    আনন্দবাজার | ১১ অক্টোবর ২০২৩
  • কয়লা তুলতে হবে ইসিএলকেই, এই দাবিতে মঙ্গলবার চিনাকুড়ি তিন নম্বর কোলিয়ারি লাগোয়া এলাকায় মিছিল ও সভা করলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। যোগ দিয়েছিল কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনও। তাঁদের অভিযোগ, কোলিয়ারিকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত করছে ইসিএল। যদিও ইসিএল কর্তৃপক্ষের দাবি, বেসরকারিকরণের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়নি।

    এ দিন সকালে চিনাকুড়ি তিন নম্বর কোলিয়ারি থেকে সোদপুর এরিয়া অফিস পর্যন্ত কয়েকশো বাসিন্দা মিছিল করেন। পরে এরিয়া কার্যালয়ের সামনে সভাও করেন তাঁরা। সভায় যোগ দেন সিএমএসআই-র কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরী, আইএনটিইউসি নেতা চণ্ডী বন্দ্যোপাধ্যায়েরা। তাঁরা অভিযোগ করেন, চিনাকুড়ি তিন নম্বর কোলিয়ারিতে ভূগর্ভে প্রচুর কয়লা মজুত আছে। ইসিএল সেই কয়লা নিজে না তুলে একটি বেসরকারি ঠিকা সংস্থাকে দিয়ে উত্তোলন করানোর পরিকল্পনা করেছে। এর ফলে, স্থানীয়েরা সরকারি স্তরে কর্মসংস্থানের সুযোগ হারাবেন। এর প্রভাব পড়বে এলাকার অর্থনীতিতে। স্থানীয় বাসিন্দা নীহার চৌবে, রামকুমার প্রসাদেরাও জানান, তিরিশ বছর ধরে এই এলাকায় বসবাস করছেন। কোলিয়ারিকে কেন্দ্র করে এলাকার অর্থনীতি চাঙ্গা হয়েছে। কিন্তু বেসরকারি হাতে খনি তুলে দেওয়া হলে তাঁদের সবারই রুটি-রুজির ক্ষেত্রে সমস্যা।

    যদিও, এই আন্দোলনকে সম্পূর্ণ অযৌক্তিক বলেই মনে করছেন ইসিএল কর্তৃপক্ষ। সংস্থার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক অর্পণ ঘোষ বলেন, “কর্তৃপক্ষের তরফে এই মুহূর্তে খনি বেসরকারিকরণের কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আন্দোলন করে অচলাবস্থা তৈরি করা উচিত নয়।”

    তবে কর্তৃপক্ষের একাংশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোলিয়ারির অস্তিত্ব বজায় রাখতে ভবিষ্যতে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। জানা গিয়েছে, এই খনির ভূগর্ভে প্রায় ৩৬ হাজার মিলিয়ন টন কয়লা রয়েছে। মূল্যবান এই সম্পদ অবশ্যই তুলে আনা হবে। ইতিমধ্যে তার রূপরেখাও তৈরি করা হচ্ছে। অত্যাধুনিক ‘লঙ্গোয়াল’ ব্যবস্থায় ‘কন্টিনিউয়াস মাইনিং’ প্রক্রিয়ায় কয়লা তোলার প্রক্রিয়া শুরু হলে কম খরচে অনেক বেশি পরিমাণ কয়লা তোলা সম্ভব। ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অত্যাধুনিক পরিকাঠামো তৈরির প্রক্রিয়া ২০২১ থেকে শুরু করা হয়েছে। এর জন্য কোলিয়ারি লাগোয়া এলাকায় ইসিএলের জমি দখল করে যাঁরা বসবাস করছেন, তাঁদের উঠে যাওয়ার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। কারণ, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আনা-নেওয়া থেকে কয়লা পরিবহণকারী বড় ডাম্পার চলাচলের জন্য রাস্তা ও ফাঁকা জমির প্রয়োজন। ইসিএল সূত্রে দাবি, এই পুরো প্রক্রিয়াটি একমাত্র একটি বেসরকারি মাইন ডেভেলপিং অপারেটরের মাধ্যমেই করা সম্ভব।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)