• বদলে গেল ইতিহাস, রাতারাতি রোমান সম্রাট হলেন 'রূপান্তরকামী নারী'
    এই সময় | ২৪ নভেম্বর ২০২৩
  • এবার বিতর্ক রোমান সম্রাট এলাগাবালুসকে কেন্দ্র করে। ভাবছেন নিশ্চয়, তাঁকে নিয়ে আবার কীসের বিতর্ক? বহুকাল আগেই তো সে যুগের অবসান ঘটেছে, তাহলে এখন আবার বিতর্ক কীসের? বিষয়টি তবে খুলে বলা যাক। সম্প্রতি ব্রিটনের এক মিউজিয়ামের তরফে তৃতীয় শতাব্দীর রোমান সম্রাটের এলাগাবালুসের মূর্তির রিলেবেলিং করা হয়। রিবেলেবেলিংয়ের পর বিতর্কের সূত্রপাত। নতুন লেবেলে রোমান সম্রাটকে 'রূপান্তরকামী নারী' বলে আখ্য়া দেওয়া হয়েছে ইতিহাসের উল্লেখ করে। নর্থ হার্টফোর্ডশায়ার জাদুঘরের এই 'কীর্তি'-তেই চোটেছেন অনেকে। জাদুঘরের তরফে এলাগাবালুসকে 'মহিলা' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সব জায়গাতেই সম্রাটকে 'হার' (Her), 'সি' (She) বলে উল্লেখ করা হয়েছে।অবশ্য বিতর্ককে আমল দিতে নারাজ জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। তাদের অবশ্য দাবি, পুরনো নথিপত্র ঘেঁটেই সম্রাটকে 'মহিলা' আখ্যা দেওয়া হয়েছে। দাবি, পুরনো সেসব নথিতেই নাকি উল্লেখ রয়েছে রূপান্তরকারী নারী ছিলেন সম্রাট ছিলেন এলাগাবালুস। এমন কী এও দাবি করা হচ্ছে, একদা নাকি সম্রাটই বলেছিলেন, 'আমায় লর্ড বলবে না, আমি একজন নারী।' এই শব্দগুলি লিখেছেন স্বয়ং প্রখ্যাত রোমান ইতিহাসবিদ ক্যাসুয়াস ডিও। জাদুঘরটিতে এলাগাবালুসের সময়কার একটি রুপোর মুদ্রাও প্রদর্শন করে রাখা হয়েছে জাদুঘরে। এলাগাবালুস আমৃত্যু ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত ২১৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ২২২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত শাসন করেন। সেই সময়কার কয়েনটিতে ডিসপ্লেতে LGBT-থিমের ব্যবহার লক্ষ্য করা গিয়েছে। কয়েনটির বর্ণনা দেওয়ার সময় এলাগাবালুসকে নারী বলে সম্বোধন করা হয়েছে।ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, খুব কম সময়ে রাজত্ব চালিয়েও তৎকালীন সময়ে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন এলাগাবালুস। তাঁর যৌনজীবন সম্পর্কে নানা কথা শোনা যায়। ইতিহাসে পাঁচবার বিয়ের উল্লেখ পাওয়া যায় এলাগাবালুসের। চারবার মহিলাদের সঙ্গে বিয়ে করেছিলেন তিনি। একবার তাঁর বিয়ে হয়েছিল হেয়ারকোলসের সাথে। হেয়ারকোলস ছিলেন একজন প্রাক্তন দাস এবং রথচালক।প্রসঙ্গত, মহেঞ্জোদারোতে ১৯২৬ সালে আবিষ্কৃত হয়েছিল একটি নৃত্যরতা বালিকার মূর্তি। যা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। চলতি বছরের মে মাসে ফের সেই মূর্তি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উপলক্ষে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দিল্লির প্রগতি ময়দানে আন্তর্জাতিক জাদুঘর মেলার উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠান চলাকালীন, প্রধানমন্ত্রী মোদী মেলার মাসকটটিও উন্মোচন করেন, যা মহেঞ্জোদারোর বিখ্যাত নৃত্যরতা বালিকার 'সমসাময়িক' সংস্করণ। পাঁচ ফুটের বেশি লম্বা সংস্করণটি মূল চিত্রের রূপকে বিকৃত করায় বিভিন্ন সমালোচিত হয় বিভিন্ন মহল থেকে। কারণ সাড়ে চার হাজার বছরের পুরনো ব্রোঞ্জ মূর্তি, যা মহেঞ্জদারোয় উদ্ধার হয়েছিল, সেটির উচ্চতা মাত্র ১০.৫ সেমি। তার পরনে ছিল একাধিক চুড়ি এবং একটি নেকলেস। মূর্তির রং ছিল কালো এবং সম্পূর্ণ নগ্ন। কিন্তু, মাসকটের মূর্তির ত্বক ফরসা। পরনে গোলাপি ব্লাউজ ও একটি অফ-হোয়াইট কোমর কোট। মন্ত্রক জানিয়েছে যে মাসকটটি মহেঞ্জদারোর নৃত্যরতা বালিকার মূর্তি থেকে অনুপ্রাণিত। কিন্তু, তার হুবহু নকল নয়। বরং, এই মাসকট সমসাময়িক সমাজের রীতিনীতি মেনে তৈরি করা হয়েছে। মাসকটটিকে আধুনিক যুগের প্রতীক হিসেবে ব্যাখ্যা করা হবে।
  • Link to this news (এই সময়)