সপ্তাহের ছয় দিনের মধ্যে প্রতিদিন গড়পরতায় ওই কয়েক ঘণ্টা করে ক্লাস, গা এলিয়ে বাকি সময়ে বিশ্রাম আর তারপরে ঘণ্টাটি পড়লেই সোজা বাড়ি এসবের চিন্তা কিন্তু এখন অতীত। এসব চিন্তা মাথাতেও আনতে পারছেন না সদ্য চাকরি পাওয়া শিক্ষকরা। কয়েক দিন আগেই সরকারি স্কুলের চাকরিতে পাশ করেছিলেন। ভেবেছিলেন বাকি জীবনটা কাটবে একটু 'নিশ্চিন্তে'। তবে আপতত বোধহয় সে ভাবনার গুড়ে বালি! কারণ এবার যে কড়া নির্দেশিকা এসেছে তা একেবারে উপর মহল থেকে। খোদ শিক্ষা দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিবে 'কড়া দাওয়াই', ছাত্র পড়াতে কোনওরকম গাছাড়া ভাব দেখালেই কিন্তু চাকরিতে সোজা 'কাঁচি'। ট্রেনিং সেন্টারে সতর্কবাণীও শুনিয়ে এসেছেন হবু শিক্ষকদের।বিহারের কথা বলছি। সদ্য সেখানে শিক্ষক পদের পরীক্ষাতে নির্বাচিত হয়েছেন অনেকজন। স্কুলে যোগ দেওয়ার আগে নিয়মমাফিক বর্তমানে চলছে ট্রেনিংপর্ব। আর সেই ট্রেনিং চলাকালীন শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্তি মুখ্য সচিবের থেকে যে 'হুঁশিয়ারি' শুনেছেন তাতে সকলেরই কমবেশি গলা শুকিয়ে কাঠ। কর্তব্যের বিষয়ে ভীষণ কঠোর বিহারের শিক্ষা দফতররের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব কে কে পাঠক। কাজের জায়গায় 'ফাঁকি' তাঁর একেবারে চক্ষুশূল। কাজেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমাতে শিক্ষকদের ট্রেনিং সেন্টারের ফাঁকি মারলে কী পরিণাম হতে পারে সে সম্বন্ধে কড়া বার্তা শুনিয়ে এসেছেন তিনি। প্রত্যেকেকে কানে ধরে ধরে বলে এসেছেন, পোস্টিং স্কুলের ১৫ কিলোমিটারের মধ্যেই থাকতে হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। তার বাইরে যাওয়া চলবে না। যদি সেই নিয়ম কেউ অগ্রাহ্য করেন তাহলে চাকরি খোয়া যেতে পারে।পাঠকের এই 'কঠোর' আদেশ শুনেই মুখ চাওয়াচায়ি শুরু হয়ে যায় হবু শিক্ষকদের মধ্য়ে। আসলে কাজের পরিসরে কোনও রকম ফাঁকি বরদাস্ত করতে পারেন না কে কে পাঠক। শিক্ষা প্রাঙ্গনে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকদের উদাসীনতার অভিযোগ বারংবার উঠেছে বিহারে। বিহারে শিক্ষক-শিক্ষকদের অবহেলার জন্য স্কুল ছুটের প্রবণতা বেশি বলে বারংবার অভিযোগ ওঠে। আর তাই এবার কঠোর নিদান দিয়েছেন শিক্ষা দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব। পড়ুয়াদের পড়ানোর ব্যাপারে আরও বেশি যত্নশীল হন সকল শিক্ষক এটাই তাঁর একমাত্র চাওয়া।শুধু এখানেই থেমে থাকেননি অতিরিক্ত মুখ্যসচিব। শিক্ষকদের দু'চাকার ও চার টাকা গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথাও বলেছেন। আর তার পিছনে কারণও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। সব শিক্ষক যাতে সময় মতো স্কুলে পৌঁছতে পারেন তার জন্য় তাঁদেরকে দু'চাকার ও চার চাকার গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা উল্লেখ করেছে কে কে পাঠক। বিহারের শিক্ষাদানের ভাবমূর্তি উন্নত করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণরত শিক্ষকদের পড়ুয়াদের ভালো মানের শিক্ষা দানের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বারংবার বিহারের সরকারি স্কুলগুলিতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পড়ুয়াদের প্রতি অবহেলার অভিযোগ শিরোনামে উঠে আসে।বহু সরকারি স্কুলের পড়ুয়ারই অভিযোগ, মাস্টারমশাইরা ক্লাস নেন সপ্তাহে নাম মাত্র দুই তিন খানা। সিলেবাস শেষ হওয়া সে তো কল্পনাতীত। এমনও অভিযোগ ওঠে সঠিক সময়ে ক্লাসে আসেন না শিক্ষকরা। আর সেইসব অভিযোগ শুনেই এবার কড়া দাওয়াই দিয়েছেন শিক্ষা দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব। দৈনিক ছয়টি ক্লাস নেওয়া বাধ্যতামূলক করেছেন নয়া নির্দেশে। শুক্রবার কে কে পাঠক পটনার বিহিয়া নগরে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ পরিদর্শন করেন। সেসময় তিনি একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছেন।রাজ্য, দেশ, দুনিয়া, বিনোদন, খেলার সব খবর সবার আগে পেতে চান??'হোয়াটসঅ্যাপে ফলো করুন এই সময়কে।