• রাজায়-রাজায় যুদ্ধ! আবাসে ঘর নির্মাণ অথৈ জলে, গৃহহীন কয়েক হাজার পরিবার
    এই সময় | ২৬ নভেম্বর ২০২৩
  • সরকারি উদ্যোগে নতুন বাড়ি হবে। পাকা বাড়ি পাওয়ার আগ্রহে কাঁচা বাড়ি ভেঙে নতুন দিনের আশায় অপেক্ষারত ছিল মালদার কয়েক হাজার পরিবার। কিন্তু, সুখের দিন আর এল কই? রাজায়-রাজায় যুদ্ধে উলুখাগড়ার করুণ অবস্থা। ভাড়া বাড়িতে মাথা গোঁজার ঠাঁই হলেও, টান পড়ছে পকেটে। রাজ্য-কেন্দ্র সংঘাতে আদৌ কবে হবে নিজেদের পাকা বাড়ি। সংশয়ে পুরাতন মালদা, ইংরেজবাজার পুরসভার বাসিন্দারা।সরকারি নতুন পাকা বাড়ি পাওয়ার আশায় জেলার দুই পুরসভার দুঃস্থ মানুষ ভেঙে ফেলেছিল তাঁদের পুরোনো মাথা গোঁজার ঠাঁই৷ নতুন বাড়ির কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু হঠাৎ সরকারি টাকা আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ ফলে এই মুহূর্তে তাঁদের অনেককে খেয়ে না খেয়ে বাড়ির ভাড়া গুনতে হচ্ছে। যাঁদের সেই সামর্থ্য নেই, তাঁদের ঠাঁই হয়েছে খোলা আকাশের নীচে৷ কবে তাঁদের বাড়ি নির্মাণের টাকা আসবে, জানে না কেউই।প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় শহরের গরিব মানুষের পাকা বাড়ি তৈরির জন্য রয়েছে সরকারি প্রকল্প 'হাউস ফর অল'৷ মোট তিন লাখ ৬৮ হাজার টাকার এই প্রকল্পে উপভোক্তাকে দিতে হবে ২৫ হাজার টাকা৷ কেন্দ্র দেবে দেড় লাখ এবং রাজ্য দেবে এক লাখ ৯৩ হাজার টাকা৷ উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে চার থেকে পাঁচটি কিস্তিতে অনুদানের টাকা ঢুকবে৷ প্রতিটি পর্যায়ের কাজের পর তার রিপোর্ট দেখে পরবর্তী কিস্তির টাকা দেওয়া হবে৷ ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে মালদায় এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়৷ কিন্তু সেই প্রকল্পের কাজ এখন পুরোপুরি বন্ধ৷ঘর তৈরির কিস্তির টাকা না পেয়ে চরম সমস্যায় পড়েছেন মালদার ইংরেজবাজার পুরসভার ১৩৬৫ টি পরিবার এবং পুরাতন মালদা পুরসভার প্রায় ২৪০০ পরিবার। গত ৯ মাস আগে সরকারি পাকা বাড়ি পাওয়ার আশায় নিজের পুরোনো ঘর ভেঙে ফেলেছেন পুরাতন মালদা এবং ইংরেজবাজার পুরসভা পুরসভার রঞ্জনা প্রসাদ, কাজল মণ্ডল, কানাই মালারা৷ ভেবেছিলেন, কয়েক মাসের মধ্যে নতুন বাড়ি তৈরি হয়ে যাবে৷ তা হয়নি৷ তখন থেকে পরিবার সহ বাকি সদস্যরা খোলা আকাশের নিচে ত্রিপল টাঙিয়ে রয়েছেন৷এই বিষয়ে ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ন চৌধুরী দুরাবস্থার কথা কার্যত স্বীকার করে নেন। তিনি বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়াই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।' অন্যদিকে, পুরাতন মালদা পুরসভার চেয়ারম্যান কার্তিক ঘোষ জানান, ২০২০-২১ এবং ২১-২২ অর্থবর্ষে আমরা এই প্রকল্পে প্রায় ২৪০০ জনের নাম পাঠিয়েছিলাম৷ সরকার সেই তালিকা অনুমোদন করে৷ রাজ্য সরকার নিজের প্রথম কিস্তির টাকাও দিয়ে দেয়৷ কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা দিচ্ছে না৷ এতে যেসব গরিব মানুষজন পাকা বাড়ি পাওয়ার আশায় নিজেদের কাঁচা বাড়ি ভেঙে ফেলেছিলেন, তাঁরা সমস্যায় পড়েছেন৷অন্যদিকে, যদিও এর জন্য রাজ্য সরকারকেই দুষেছেন উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু৷ তিনি বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকার নিজের শেয়ারের টাকা দিয়ে দিয়েছে৷ রাজ্য নিজের শেয়ারের টাকা দিতে পারছে না৷ দেবেই বা কোথায় থেকে! খেলা, মেলা, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার করে সব টাকা শেষ করেছে৷ আর লুট তো আছেই৷ রাজ্য নিজের শেয়ারের টাকা না দিলে কেন্দ্র তো পরবর্তী কিস্তির টাকা দেবে না।
  • Link to this news (এই সময়)