• সুনীলদের সংসারে নতুন সদস্য, বেকহ্যামের সঙ্গেই খেলেছেন, কে এই ট্রেভর সিনক্লেয়ার'
    ২৪ ঘন্টা | ০২ জানুয়ারি ২০২৪
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সুনীল ছেত্রীরা (Sunil Chhetri) ফের কোমর বাঁধছেন আসন্ন মহাযুদ্ধের জন্য়। ইগর স্টিমাচের (Igor Stimac) শিষ্য়দের সামনে এখন মিশন এএফসি এশিয়ান কাপ (AFC Asian Cup Qatar 2023)। দোহায় পৌঁছে নৈশালোকে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে ২৬ সদস্যের ব্ল্যু টাইগার্স। আর অনুশীলনে রয়েছে চমক! স্টিমাচের সঙ্গেই দেখা যাচ্ছে বছর পঞ্চাশের টাক মাথার এক গাঁটাগোট্টা ব্য়ক্তিকে। অনেকেরই প্রশ্ন যে, সুনীলদের সংসারে কে এই নতুন সদস্য়। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন ইংল্য়ান্ড থেকে উড়িয়ে নিয়ে এসেছে ট্রেভর লয়েড সিনক্লেয়ারকে (Trevor Sinclair)। মহেশ গাউলির (Mahesh Gawali) সঙ্গে এবার তিনিও জাতীয় দলের সহকারি কোচ। সিনক্লেয়ার সাহায্য় করবেন তাঁর প্রাক্তন সতীর্থ স্টিমাচকেই। এবার একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক সদ্য়নিযুক্ত সাপোর্ট স্টাফের ঈর্ষণীয় বায়োডেটায়। আটেক দশকের শেষ থেকে একুশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত তিনি মাতিয়েছেন ইংলিশ প্রিমিয়র লিগ। পাঁচ ফুট দশ ইঞ্চির উইঙ্গার কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্স, ওয়েস্ট হ্য়াম ইউনাইটেড, ম্য়াঞ্চেস্টার সিটি ও কার্ডিফ সিটিতে চুটিয়ে ফুটবল খেলছেন। সেট-পিস ট্রেনিং স্পেশ্যালিস্ট সিনক্লেয়ার ওয়েস্ট হ্য়ামেই সতীর্থ হিসেবে পেয়েছেন স্টিমাচকে। ইংল্য়ান্ডের হয়ে খেলেছেন বিশ্বকাপও। পেয়েছেন ডেভিড বেকহ্য়ামের মতো সতীর্থকেও। এবার সুনীলদের সেট-পিস দক্ষতা বাড়ানোর জন্য়ই সিনক্লেয়ারের উপর ভরসা এআইএফএফ-এর।সিনক্লেয়ার ভারতের পা রাখা এবং সুনীলদের সঙ্গে ইনিংস শুরুর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে। তিনি বলছেন, 'খুব ব্য়স্ততার মধ্য়েই কেটেছে কয়েক'টি দিন। তবে জিম এবং ট্রেনিং সেশনের পর, সত্যিই আমি মুগ্ধ।' প্রাক্তন সতীর্থ স্টিমাচেও মুগ্ধ সিনক্লেয়ার। তাঁর সংযোজন, 'ইগরের সঙ্গে দলের ও সাপোর্ট স্টাফদের সাথে খুব ভাল সম্পর্ক। এবং ওরা দেশের জন্য সেরাটাই দেওয়ার চেষ্টা করে। এখানে আসার আগে যখন ইগর আমাকে যখন দলের ভিডিও পাঠিয়েছিল, তখন আমি দেখেছিলাম যে ইগর কী কাজটাই না করেছে। ইগর এই দলটা তৈরি করেছে। তা দেখে আমি মুগ্ধ। ছেলেদের মৌলিক বিষয়গুলো ও খুব ভালোভাবে বোঝে, সেগুলো করায়। এবং ম্যাচের পরিস্থিতিতে তাদের দেখিয়ে দিতে পারে।'সেট-পিস প্রশিক্ষণ নিয়ে সিনক্লেয়ার বলেন, 'দেখুন আমি একজন ফরোয়ার্ড ছিলাম, সৃজনশীল ফুটবল খেলেছি। তাই আমি খুব ভালো করেই জানি যে আপনি যখন ফাইনাল থার্ডে ঢুকে পড়েন, তখন ওই কোচিংয়ের বইয়ের জিনিসগুলি সবসময় কাজ করে না। প্লেয়ারদের ও খেলার অ্যাডভান্টেজের উপরেও নির্ভর করে। আমরা সবাই জানি যে, পরিসংখ্যানগতভাবে সেট-পিস কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কেবলই কর্নার এবং ফ্রি-কিক নয়, থ্রো-ইনগুলির মতো সাধারণ জিনিসগুলিও দারুণ সাহায্য় করতে পারে। ম্য়াচে ব্য়াক ফুটে থাকলেও, একটা থ্রো-ইন হিসেব বদলে দিতে পারে। ছোট ছোট বিষয়গুলিই বাস্তবে বলটাকে ভংয়কর জায়গায় এনে দেয়।'গতবছর মে মাসে এএফসি এশিয়ান কাপের ড্র সামনে এসেছিল। ভারত রয়েছে 'বি' গ্রুপে। যাকে 'গ্রুপ অফ ডেথ' বললেও একেবারেই ভুল হবে না। সুনীল-গুরপ্রীত-সন্দেশদের লড়াই হতে চলেছে অত্যন্ত কঠিন। এশিয়ান ফুটবলের সব মহাশক্তিধর দলগুলির বিরুদ্ধে খেলতে হবে ভারতকে। সুনীলদের রাখা হয়েছে সিরিয়া, উজবেকিস্তান, অস্ট্রেলিয়ার মতো তিন দুরন্ত দলের সঙ্গে। আগামী ১৩ জানুয়ারি গ্রুপ বি-র প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলবে ভারত। এরপর ১৮ জানুয়ারি ভারত উজবেকিস্তানের মুখোমুখি হবে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ ২৩ জানুয়ারি, প্রতিপক্ষ সিরিয়া। শেষবার ফুটবলে ইন্দো-অজি মহারণ হয়েছিল ২০১১ সালের এশিয়ান কাপে। ফের মুখোমুখি দুই দল। বিশ্বের ২৫ নম্বর দলের বিরুদ্ধে লড়াই সহজ হবে না জানেন সিনক্লেয়ারও। তিনি বলছেন, 'আমরা আন্ডারডগ, তবে আমাদের যে স্ট্যাটাস,তার সঙ্গে আসা চ্যালেঞ্জটা আমি পছন্দ করি। আমি নিজে ইংলিশ ফুটবলের চতুর্থ স্তর থেকে এসেছি, তাই আমি জানি যে এটি কঠোর পরিশ্রম এবং খেলোয়াড়দের মধ্যে একটি সংস্কৃতি তৈরি করা যাতে তারা প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। দলের মধ্যে আরও বেশি করে বিশ্বাস তৈরি করতে হবে। এই জার্সির জন্য় লড়তে হবে।'২০২৪ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কাতারে এই প্রতিযোগিতা আয়োজিত হবে। চলতি বছর চিনে এই প্রতিযোগিতা আয়োজিত হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনার জন্য শেষ  পর্যন্ত এই প্রতিযোগিতা কাতারে চলে আসে। শেষ পর্যন্ত ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ আয়োজক দেশের উপরই ভরসা রাখলেন এএফসি কর্তারা। এবার ২৪টি দলকে নিয়ে আয়োজিত হবে এএফসি এশিয়ান কাপ। ২৪টি দলকে চারটি পাত্রে ভাগ করা হয়। চারটি দলের পাত্রগুলিকে ছয়টি গ্রুপে ভাগ করা হয়। ভারতকে চতুর্থ পাত্রে রাখা হয়েছিল। এএফসি এশিয়ান কাপ প্রতিযোগিতায় ভারত এই নিয়ে পঞ্চমবারের মতো অংশ নিতে চলেছে। ভারত এর আগে ১৯৬৪, ১৯৮৪, ২০১১ এবং ২০১৯ সালে অংশ নিয়েছিল। ১৯৬৪ সালে প্রথমবার খেলতে নেমে রানার্স হয় ভারত। তবে ২০১৯ সালে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয় ব্ল্যু টাইগার্সদের।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)