'মা-বাবাকে মেরে নিজেকে শেষ করব...', গড়িয়াকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর ফেসবুক লাইভ!
২৪ ঘন্টা | ০৩ জানুয়ারি ২০২৪
পিয়ালি মিত্র: পিয়ালি মিত্র: গড়িয়ায় বাবা-মা-ছেলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য়। মৃত্যুর আগে ফেসবুকে লাইভ ছেলের। সবাই কেন দুর্ব্যবহার করছে জানেন না। একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হত। ভয় আর আতঙ্ক গ্রাস করছে। ফেসবুক লাইভে এমনই বার্তা ছেলের। ফেসবুক লাইভে ছেলে বলছে,"বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে থাকি, আতঙ্কে আছি। আমি যেখানে থাকি সবাই কেন দুর্ব্যবহার করছে জানি না। এমন একটা অবস্থায় আছি, একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হত। ভয় আর আতঙ্ক আমাকে গ্রাস করছে। আমাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হত।"সুমনরাজ রাজ্য মৈত্র গত ২৮ ডিসেম্বর দুপুরে ফেসবুক লাইভ করে। সেই ফেসবুক লাইভ ঘিরেই ধোঁয়াশা। ২০ মিনিট এবং ৫৯ সেকেন্ডের দুটো ফেসবুক লাইভ করে সুমন। "ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে আছি। সাহায্য নেওয়ার কোনও জায়গা নেই। হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।" কিন্তু কে বা কারা হুমকি দিচ্ছে সেটা সুমন স্পষ্ট করেনি ফেসবুক লাইভে। লাইভে আরও বলতে শোনা যাচ্ছে, "ফ্যামিলির সঙ্গে ইউটিবে কিছু দেখছিলাম। নিজেদের মধ্যে কিছু কমেন্ট করেছিলাম। বাইরে থেকে কেউ শুনতে পেয়ে যায়। বাড়িতে ভেঙে ঢুকে আসতে চাইছে। দেখতে পেলেই মেরে দেবে। হঠাৎ করে কিছু মানুষ আমার উপরে ক্ষেপে গেছে। প্রথম দিন থেকেই কেউ কেউ আমাকে অপদস্থ অপমান করছে। আমার আর নেওয়ার জায়গা নেই। কোথায় পালাব। আমাকে তো সেখানেও ধরবে। আমাকে তো বোঝাতে পারত। মামাকে জানিয়েছি। মামা ব্যবস্থা করবে বলছে। কিন্তু কিছু লোকজন পাগোল-পাগোল বলছে।" এমনকি ফেসবুক লাইভের শেষের দিকে সুমনরাজ বলছেন, "ভাবছি এবার নিজেকে শেষ করে দেব। বাবা , মাকে শেষ করে ফেলতে ইচ্ছা করছে।" যার ভিত্তিতে পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, মানসিক অবসাদের জায়গা থেকেই সুমনরাজ বাবা স্বপন মৈত্র ও মা অর্পণা মৈত্রকে খুন করে নিজে আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন। তবে পাশাপাশি, ফেসবুক লাইভে সুমনরাজ যে অভিযোগ করেছেন তার কোনও সারবত্তা আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিস। সবদিক খতিয়ে দেখেই তদন্ত শুরু করেছে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিস। এদিন গড়িয়া স্টেশনের কাছে বহুতলে উদ্ধার হয় বাবা-মা-ছেলের ঝুলন্ত দেহ। একটি তিনতলা আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে দেহগুলি উদ্ধার করে পুলিসের। ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে দরজা বন্ধ ছিল। দুর্গন্ধ ছড়াতেই পুলিসে খবর দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিস গিয়ে দরজা ভেঙে তিনটি দেহ উদ্ধার করে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ফ্ল্যাটের দুটি ঘর থেকে তিনটি দেহ উদ্ধার হয়। অপর্ণা মৈত্র, স্বামী স্বপন মৈত্র ও দম্পতির ছেলে সুমনরাজ মৈত্রকে গত কয়েকদিন ধরে দেখতে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। এদিন ফ্ল্যাটের মধ্যে থেকে দুর্গন্ধ বের হতেই নরেন্দ্রপুর থানায় খবর দেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, স্বপন মৈত্র পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। কারও সঙ্গেই তাঁরা তেমন মেলামেশা করতেন না। এখন বেশ কয়েকদিন ধরে যে এই পরিবারের কাউকে দেখা যাচ্ছে না, সেটা প্রথমে খেয়ালও করেনি কেউ। এখন চড়া দুর্গন্ধ বেরতেই বিষয়টি সবার নজরে আসে। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গড়িয়া এলাকায়।