• সব প্রস্তুতি ‌সম্পন্ন, রবিবার বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন...
    আজকাল | ০৬ জানুয়ারি ২০২৪
  • জয়ন্ত আচার্য:‌ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রী পৌঁছে গেছে। রবিবার ভোটগ্রহণ। সুষ্ঠুভাবে ভোটের জন্য নেওয়া নানা তৎপরতা বাস্তবে কতটুকু কার্যকর হবে তা দেখার অপেক্ষায় গোটা বাংলাদেশ। এমনকি বিদেশি পর্যবেক্ষকরাও মুখিয়ে আছেন ভোটগ্রহণ উৎসব কতটা প্রাণবন্ত হয় তা দেখতে। হেলিকপ্টার যোগে দুর্গম অঞ্চলে পাঠানো হচ্ছে নির্বাচনী কর্মকর্তা ও নির্বাচনী সামগ্রী। ৭ শতাংশ কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পৌঁছে যাবে শনিবারের মধ্যেই। রবিবার ভোরে বাকি ৯৩ শতাংশ কেন্দ্রে পৌঁছানো হবে। সব মিলিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্নের প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। তাদের তথ্য অনুযায়ী ভোটের দিন কেন্দ্রে ব্যালট পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত ইতিহাসে এই প্রথম। সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নের জন্য সব রিটার্নিং অফিসারদের নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। নির্দেশে বলা হয়েছে, মোট ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৪২ হাজার ২৫টি। এর মধ্যে ভোটের দিন সকালে ৩৯ হাজার ৬১টি কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। ২ হাজার ৯৬৪ কেন্দ্রে ব্যালট পেপার যাবে শনিবার। পার্বত্য জেলা, উপকূলীয় এলাকা, দ্বীপ, চর অঞ্চল, নদী পরিবেষ্টিত দুর্গম এলাকা বিবেচনায় এসব কেন্দ্রে আগের দিন ব্যালট পাঠানো হচ্ছে জানিয়ে নির্বাচন কমিশন বলছে, নির্বাচনের আগের রাতে কারচুপি রোধ করতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজি হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন।      নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্তারা বলছেন, প্রচারের সময় শেষ হয়েছে। তার পরেও যদি কেউ প্রচার চালায় তা হলে তাঁকে ছয় মাসের জেল অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। কমিশন চাইলে শুনানি করে কারও প্রার্থীপদও বাতিল করতে পারে। ইসি জানিয়েছে, নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দল ও নির্দল মিলিয়ে মোট ১ হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে রাজনৈতিক দলের ১ হাজার ৫৩৪ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন ৪৩৬ জন। বিএনপি সহ ১৬টি বিরোধী রাজনৈতিক দল ভোট বয়কট করা হোক বলে আন্দোলন শুরু করেছে। এদিকে, নওগাঁ–২ আসনের একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় আগামী ৭ জানুয়ারি ২৯৯ আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সবচেয়ে বেশি প্রার্থী রয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের। হাইকোর্ট থেকে ৩ জন প্রার্থীপদ ফিরে পাওয়ায় দলের প্রার্থী সংখ্যা ২৬৬ জন। জাতীয় পার্টির ২৬৫ জন, তৃণমূল বিএনপির ১৩৫ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৯৬ জন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ৫৬ জন সহ ২৮টি রাজনৈতিক দলগুলোর মোট প্রার্থী সংখ্যা ১ হাজার ৫৩৪ জন। আর নির্দল প্রার্থী ৪৩৬ জন। নির্বাচনে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণ ফোরাম, গণফ্রন্ট, জাকের পার্টি, জাতীয় পাটি, জাতীয় পার্টি–জেপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল–জাসদ, তৃণমূল বিএনপি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট–বিএনএফ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল) ও গণতন্ত্রী পার্টি প্রার্থী দিয়েছে। নির্বাচনে ৯০ জন মহিলা প্রার্থী ও ৭৯ জন ট্রান্সজেন্ডার প্রার্থীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের জন্য ৪২ হাজার ২৪টি ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। ইসি বলছে, এর মধ্যে ২৩ হাজার ১১৩টিই স্পর্শকাতর। অর্থাৎ মোট ভোটকেন্দ্রের অর্ধেকের বেশি স্পর্শকাতর। ২৯৯টি আসনে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত হবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভোটকেন্দ্র ও ব্যালট বাক্সের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ভোটদানে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সারাদেশে মোট ৫ লাখ ১৭ হাজার ১৪৩ জন পুলিশ মোতায়েন করেছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী (ভিডিপি)। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ। ইসি জানিয়েছে, এর মধ্যে নতুন ভোটার ১ কোটি ৫৪ লাখ ৫২ হাজার। মোট ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৬ কোটি ৭৬ লাখ ও মহিলা ৫ কোটি ৮৯ লাখ। আর ট্রান্সজেন্ডার ভোটার ৮৪৯ জন।
  • Link to this news (আজকাল)