তপশ্রী গুপ্ত, ঢাকা: আন্তর্জাতিক নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা একবাক্যে বলছেন ইউনিক মডেল। গণতন্ত্রের কপিবুক ধ্যানধারণা থেকে অনেকটাই হটকে। বাংলাদেশে প্রধান বিরোধী দল প্রথম থেকেই ভোট বয়কট করেছে। তবে সেজন্য যে এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অভূতপূর্ব তা কিন্তু না। যে কারণে এই ভোটপর্ব গোটা পৃথিবীর নজর কেড়েছে তা হল শাসকদল আওয়ামি লিগের একাধিক প্রার্থীর একই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা। সাধারণত দলীয় গঠনতন্ত্রে একথাই লেখা থাকে যে দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে যদি দলেরই কেউ প্রার্থী হন তবে তাঁকে বিক্ষুব্ধ হিসেবে গণ্য করা হয়। শাস্তিও হতে পারে তাঁর। কিন্তু বাংলাদেশে এর ব্যতিক্রম দেখা গেল। আওয়ামি লিগ নেতৃত্ব ভোটে দাঁড়ানোর ব্যাপারে কোনও বাধা রাখেননি। নির্বাচন গবেষক এ এস এম শামসুল আরেফিনের মতে, "এর ফলে একদিকে যেমন নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আসে, অন্যদিকে তেমন বেশি সংখ্যক ভোটারকে বুথমুখী করা যায়।" খোঁজখবর করে দেখা গেল, এই অবাধ প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফলে বিপদে পড়েছেন বহু হেভিওয়েট প্রার্থী, এমনকী কজন মন্ত্রীও। জেতার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারছেন না তাঁরা। অন্যদিকে আওয়ামি লিগের টিকিট না পেয়ে স্বতন্ত্র অর্থাৎ নির্দল হিসেবে দাঁড়ানো অনেক প্রার্থীই ভোট হওয়ার আগেই জয়ের ব্যাপারে মোটামুটি নিশ্চিন্ত। গণতন্ত্রের এই ইউনিক মডেল বিস্ময় জাগিয়েছে বিশ্ব জুড়ে। আরেফিনের মতে, ৩০০ আসনের মধ্যে ( ভোট হচ্ছে ২৯৯ টিতে) ৬০% -এ জোর লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা। সেসব আসনে প্রত্যাশিত ভোটের হার ৪০%। রবিবার সকাল আটটা থেকে শুরু ভোটগ্রহণ। তার পনেরো ঘণ্টা আগে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল আন্তর্জাতিক মিডিয়াকে বারবার আশ্বস্ত করলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন, বিক্ষিপ্ত গন্ডগোল হতেই পারে। জানালেন, অনুমোদিত সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ঢোকার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রাখা হয়নি স্বচ্ছতা রক্ষার স্বার্থে। তিনি স্বীকার করেছেন, এবারের নির্বাচনে ভোটারদের বুথমুখী করাটাই বিরাট চ্যালেঞ্জ।