হুগলি ও হাওড়ায় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট বিএড কলেজ যথাক্রমে ৩১ ও ২১টি। হুগলিতে বাতিলের খাতায় রয়েছে ২১টি, হাওড়ায় ১৯টি। সব ক’টিই বেসরকারি। শুক্রবার এই দুই জেলার কলেজগুলি নিয়ে একটি বৈঠক হয় পোলবার রাজহাটের বারোলে একটি কলেজে। বৈঠকে ছিলেন অনুমোদন মেলা দুই জেলার ৩টি বিএড কলেজের প্রতিনিধিরাও। তাঁদের বক্তব্য, “অনুমোদন না পাওয়া কলেজগুলির দাবি অনৈতিক নয়। তাই সঙ্গে আছি।”
এ দিন ফোরামের সম্পাদক দিব্যেন্দু বাগ বলেছিলেন, “চলতি শিক্ষাবর্ষে বহু ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমাদের অনুমোদন দেওয়া হবে ভেবেছিলাম। কিন্তু হল না। তাই দিল্লিতে যাওয়ার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেজিস্ট্রার মৈত্রী ভট্টাচার্যের পাড়ায় বিক্ষোভ দেখাবেন ছাত্রছাত্রীরা।” সেই মতোই শনিবার শ্রীরামপুর মাহেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়।
ছাত্রছাত্রীদের একাংশের ক্ষোভ, “যদি বিএড কলেজগুলি বেনিয়মে চলছিল, এতদিন সরকার কি তা হলে চোখ বুঝে ছিল? ভর্তির আগে কেন তা জানানো হয়নি আমাদের!” তাঁদের দাবি, অবিলম্বে পড়ুয়াদের কথা ভেবে চলতি বর্ষের রেজিস্ট্রেশনের অনুমোদন দিতে হবে। বিক্ষোভস্থলে উপস্থিত শাসক দলের এক নেতার মতে, এতগুলি কলেজের পড়ুয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষা কর্মীদের ভবিষ্যত ভেবে ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার। কোনও পদক্ষেপেই যেন ছাত্রছাত্রীদের জীবনে অন্ধকার নেমে না আসে।
অম্বেডকর বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগ ছিল, অনুমোদন না পাওয়া কলেজগুলি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিয়ম মেনে বেতন দিচ্ছে না। কলেজগুলি দাবি করেছিল, ইউজিসি-র নিয়ম মেনে অতিরিক্ত বেতন দেওয়া সম্ভব নয়। সাক্ষাতের পরে রাজ্যপালের কথায় অনুমোদন না পাওয়া কলেজগুলির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২ থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ফের রেজিস্ট্রেশনের আবেদন জমা দেওয়ার জন্য পোর্টাল খুলে দিয়েছিলেন। সেখানে বেতন পরিকাঠামো-সহ অন্য নথি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পড়ুয়াদের কথা ভেবে, চলতি বর্ষের অনুমোদন দেওয়া হোক দাবিতে অনড় থেকে একটি কলেজও পুনরায় আবেদন পূরণ করেনি।
ফোরামের সভাপতি মলয় পীট বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের অনৈতিক সিদ্ধান্তে রাজ্যের প্রায় ৩২ হাজার ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ অন্ধকারে। পাশাপাশি কমপক্ষে ১২ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা ছাড়াও বহু মানুষের কর্মচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা দিল্লি যাচ্ছি। আশা করছি রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপে সমাধান হবে। না হলে বহু পড়ুয়ার ভবিষ্যতের আশঙ্কার সঙ্গে রাজ্যে বেকারত্বের সংখ্যা এক লাফে অনেকটাই বাড়বে।”