তৃণমূল নেত্রীর নেতৃত্বে দল ঐক্যবদ্ধ, নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে মুখ খুললেন অভিষেক
২৪ ঘন্টা | ০৮ জানুয়ারি ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: পৈলানের সভা থেকে দলের নবীন-প্রবীণ বিতর্ক নিয়ে কিছু বলেন কিনা তা নিয়ে মুখিয়ে ছিল রাজনৈতিক মহল। সেই ইস্যু এড়িয়ে না গিয়ে এনিয়ে অনেককিছুই বললেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ। শুধু তাই নয়, অভিষেক জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত শক্ত হাতে দল চালাচ্ছেন। অতীতে দল তাঁকে যে দায়িত্ব দিয়েছে তা তিনি পালন করেছেন। ভবিষ্যতেও তা পালন করবেন। দলে কোথাও কোনও দ্বন্দ্ব নেই।
উল্লেখ্য, তৃণমূলের অন্দরে নবীন-প্রবীণ সংঘাত প্রকাশ্যে এসে পড়েছিল গত সপ্তাহেই। দলের প্রবীণ নেতাদের নিশানা করেন দলেরই নবীনরা। তবে শেষপর্যন্ত তা থিতিয়েও গিয়েছে। তবে অভিষেক আজ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ৩৬ বছরে যা করা সম্ভব তা ৭০ বছরে সম্ভব নয়। অনেকে বলছেন তৃণমূলে নবীন ও প্রবীনদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। আমি আপনাদের বলছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দল ঐক্যবদ্ধ। কোথাও কোনও দ্বন্দ্বের জায়গা নেই। ২০২১ সালে দল আমাকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে বলেছিল। আমি দিয়েছি। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে দল আমাকে নবজোয়ার করতে বলেছিল। আমি তা করেছি। দিদির সুরক্ষাকবচ কর্মসূচি নিয়ে দল আমাকে ২ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার দায়িত্ব দিয়েছিল। আমি আমার সাধ্যমত তা করেছি। ২০২৪ সালেও দল যদি কোনও দায়িত্ব দেয় তাহলে আমি তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করব। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত সুসংঘটিতভাবে দল চালাচ্ছেন। আমার যতটুকু সাংগঠনিক ক্ষমতা রয়েছে তার সবটুকু দিয়ে আমি দলের পাশে দাঁড়াব। এতে দ্বিমত কোথায়?নবীন প্রবীণ নিয়ে বিতর্ক তৃণমূলে বেশ কিছুদিন ধরেই রয়েছে। মাসখানেক আগে কলকাতা বিমানবন্দরে অভিষেক বলেছিলেন, শুধু রাজনীতিতে নয়, বয়সের সীমা থাকা উচিত সব পেশাতেই। ফলে এনিয়ে আজ অভিষেক কিছু বলেন কিনা তার দিকে নজর ছিল দলেরও। বয়সের সাপেক্ষে যে মানুষের কর্মদক্ষতা কমে যায় তাও মনে করিয়ে দিয়েছেন অভিষেক। তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমি বলেছি বয়স হলে কর্মক্ষমতা কমে। আমি ২ মাস রাস্তায় ছিলাম। নবজোয়ার করেছি। আমার বয়স ছিল ৩৬। আমার ৭০ বছর বয়স হলে আমি পারব ২ মাস রাস্তায় থাকতে? পারব না। এটাই সত্যি। এটা মানতেই হবে। আমার কর্মক্ষমতা ২০ বছর পর একটু হলেও কমবে। এটা অস্বীকার করার কী আছে? তার মানে এই না যে অভিষেক বলেছে, আমি আর দলের কাজ করব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দল চালাচ্ছেন। তাঁর কর্মীরা তাঁর সঙ্গে রয়েছেন। নতুন যারা দলে এসেছেন তারাও রয়েছে। যদতিন প্রাণ থাকবে ততদিন তৃণমূলের সঙ্গে আছি। জয়বাংলা বলব। এতে গৃহদাহ, অন্তদ্বন্দ্ব কোথা থেকে আসছে? ২০২৪ সালে আমি যদি প্রার্থী হই তাহলে তো আমরা বাড়তি দায়িত্ব রয়েছে। যে পঞ্চায়েতের নেতা তাকে তো তার পঞ্চায়েত দেখতে হবে। বারবার আমি বলি, মানুষ শেষ কথা বলে। মানুষ না চাইলে সবার মূল্য শূন্য।এদিন পৈলানের সভা থেকে বেশ কয়েকজন বয়স্ক মানুষের হাতে বার্ধক্যভাতার চেক তুলে দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, গত ১০ নভেম্বরের সভা থেকে কথা দিয়েছিলাম ১ জানুয়ারি থেকে বার্ধক্যভাতা চালু করব বলেছিলাম। দুমাস সময় লেগেছে। তারপর এই সভা করছি। গত ২ মাস ধরে ৭৬,১২০ রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। তারপর ভেরিফিকেশন হয়েছে। কার প্রয়োজন রয়েছে, কার প্রয়োজন নেই। সেসব দেখেই ওই ৭৬১২০ জনকে ১ হাজার টাকা প্রতি মাসে দিতে পারি তা ঠিক করেছি। আজ অন্য দলেরও সভা হচ্ছে। তার সঙ্গে এই সভার তফাত হল এখানে মানুষ তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে দেখতে পাচ্ছে। এটাই ডায়মন্ডহারবার মডেল।অভিষেক বলেন, আর ২ মাস পর নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাবে। আমি চাইলেই বলতে পারতাম আমাকে জেতান বা তৃণমূল প্রার্থীদের জেতান। তারপর এই বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে দেখব। কিন্তু না। ওই নীতিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্বাসী নয়। আমি যা কথা দিই তা রাখি। আমি কাজ করে দেখাই তারপর বলি কাজের হিসেব নিন তারপর ঘাসের উপরে ভোট দিন। ৭৬১২০ জন যারা এই সভা থেকে বার্ধক্যভাতা পাচ্ছেন তাদের কথা দিচ্ছি, আমাদের রাজ্যসকার খুব শীঘ্রই বার্ধক্যভাতা চালু করবে। কেন্দ্রের উপরে আমরা আস্থা নেই। যদি করে তাহলে আমাদের মানবিক রাজ্য সরকারই করবে। আমাদের ১৬৩৮০ জন প্রতিনিধি আমাদের সহ্গে সহযোগিতা করেছে বলেই আমরা আমাদের স্বপ্নের প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করতে পেরেছি।
আমরা আজ একশো জনকে চেক দিয়েছি। আজ রবিবার। ব্যাঙ্ক বন্ধ। আগামী ৩ দিনের মধ্যে আমাদের ১৬৩৮০ কর্মী-সমর্থক ৭৬,১২০ জনের অ্যাকাউন্টে ১ হাজার টাকা করে পৌঁছে দেবে। ভারতের কারও লোকসভা কেন্দ্রে, এমনকি প্রধানমন্ত্রীর লোকসভা কেন্দ্রের এজিনিস হয়নি। কেউ করে দেখাতে পারেনি।