ভবানন্দ সিংহ: গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল ডায়রিয়াতে। গত অক্টোবর মাসের ঘটনা। তার দায় গিয়ে পড়েছিল উত্তর দিনাজপুরের শীতগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের মৃতার এক ব্যক্তির উপরে। অভিযোগ, ওই দম্পতি ডাইনি। এমনই অপবাদ দিয়ে ওই ব্যক্তি ও তার স্ত্রীকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। সেইসময় ওই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করে পুলিস। সিলিশি সভা বসিয়ে পুলিস ওই দম্পতিকে তাদের বাড়িতে রেখে যায়। তার পরেই ঘটে গেল আরও মারাত্মক ঘটনা। শীতের রাতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হল ওই দম্পতির বাড়িতে।
এদিকে, আক্রান্তের অভিযোগ, অক্টোবর মাসে সালিশি সভা করে তাদের বাড়িতে ঢুকিয়ে দেওয়া হলেও ঘটনার জের মেটেনি। দিনের পর দিন তাদের হুমকি দেওয়া চলতে থাকে মৃত গৃহবধূর আত্মীয়রা। এমনটাই অভিযোগ। আক্রান্তের দাবি, দিনের পর দিন তাকে মারধর, এমনকি প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। শেষপর্যন্ত গত শনিবার রাতে তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পোড়া গন্ধ ও শব্দে ঘুম ভাঙে আক্রান্তের। প্রথমে প্রতিবেশীরা ও পরে দমকল এসে আগুন নেভায়। তবে ঘরের কোনও কিছুই শেষরক্ষা হয়নি।ওই ঘটনার পর রবিবার রায়গঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আক্রান্ত। কিন্তু দুবার আক্রমণের ঘটনা ঘটলেও পুলিস কাউকে গ্রেফতার বা আটক করেনি বলে অভিযোগ আক্রান্তের। এতেই আতঙ্কিত ওই দম্পতি। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের দাবি, এনিয়ে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নিয়ে বিষয়টি মেটানো হবে।এদিকে, প্রশ্ন উঠছে ডাইনি অপবাদে অত্যাচারের জন্য কেন সালিশি সভা? কেন ওই সালিশি সভার উপরেই ভরসা করল পুলিস? অভিযোগ সত্বেও কেন পুলিস কোনও আইনি পদক্ষেপ নিল না? ডাইনি নিয়ে যখন কড়া আইন রয়েছে তখন কেন সালিশি সভা? আক্রান্ত ব্যক্তি বলেন, কিছুদিন আগে আমার ভাইপোর বউ মারা যায়। ওর ডায়রিয়া হয়েছিল। সেইদিন থেকেই আমাদের ডাইনি বলা শুরু হল। ওদের অভিযোগ, আমরাই ওদের মেরেছি। পঞ্চায়েত সদস্যকে নিয়ে গ্রামে সালিশি সভা বসেছিল। তারপর বহু দিন থেকেই আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল, আগুনে পুড়িয়ে আমাকে মারবে।