• ফুলিয়ার শাড়ি জিআই তকমা পেলে তাঁতির আঁধারঘরে কি জ্বলে উঠবে আলো'
    ২৪ ঘন্টা | ০৮ জানুয়ারি ২০২৪
  • বিশ্বজিৎ মিত্র: মুখ্যমন্ত্রী টুইটে জানিয়েছেন, ফুলিয়ার টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই তকমার জন্য আবেদন করা হয়েছে। খুবই ভালো কথা। খুশির কথা। স্থানীয় জিনিসপত্র যদি বিশ্বের স্বীকৃতি পায়, তার চেয়ে বড় কথা আর কী হতে পারে? তবে তাঁতি থেকে শুরু করে তাঁতবস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতি-- সকলের মধ্যে জিআই তকমা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ফুলিয়ায়।

    নদীয়ার শান্তিপুর ফুলিয়া সমুদ্রগড়-- এই সব এলাকা তাঁতশিল্পের জন্য বিশেষ খ্যাত। ভারতে পশ্চিমবঙ্গের তাঁতের যত কাপড় বিক্রি হয় তার সিংহভাগই শান্তিপুর-ফুলিয়া এলাকার। আলাদা করে শান্তিপুরের শাড়ির তেমন উচ্চ কদর না থাকলেও বিশ্বজোড়া খ্যাতি রয়েছে ফুলিয়ার তাঁতের কাপড়ের। টাঙ্গাইল বালুচরী জামদানি-- যত নামীদামি কাপড় রয়েছে, সবই ফুলিয়ায় তৈরি হয়। বাংলাদেশ থেকে আগত এই সব এলাকার শ্রমিকেরাই সেখানকার গ্রামের নামে তাঁদের তৈরি কাপড়ের নাম দিয়েছিলেন একদা।জানা গিয়েছে, টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই তকমার জন্য আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। টাঙ্গাইল শাড়ি হস্তচালিত তাঁতে তৈরি হয়। এই শাড়ি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমন এর দামও চড়া। এক-একটি জামদানি শাড়ির দাম কমপক্ষে তিন থেকে চার হাজার টাকা। বর্তমানে হস্তচালিত তাঁতশিল্প প্রায় চলেই না, সেখানে সেই তাঁতে উৎপাদিত পণ্যের উপর জিআই তকমা আদৌ আসবে কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট দ্বন্দ্বে এখানকার ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে তাঁত শ্রমিকেরাও। হস্তচালিত তাঁতশিল্পের বাজার অনেকটাই নষ্ট করে দিয়েছে যন্ত্রচালিত তাঁত। এমন অত্যাধুনিক মেশিন রয়েছে যেখানে দিনে ৩০ থেকে ৪০টি শাড়ি তৈরি করা সম্ভব। অন্যদিকে, হস্তচালিত তাঁতে সারাদিনে একটি মাত্র কাপড় তৈরি হয়। তাই কারো কারো মতে, ফুলিয়ার এই শাড়ি জিআই তকমা পেলেও তাঁতিদের তেমন লাভ হবে না। আসলে লাভবান হবেন কর্পোরেট দুনিয়ার মানুষজনই। পাওয়ার লুম বন্ধ করার জন্য সরকারি আইন রয়েছে। কিন্তু কেউই সেসব আটকাননি। তাই এই ধরনের জিআই তকমা শেষ পর্যন্ত সরকারি পোশাকি একটা স্বীকৃতি ছাড়া আর কিছুই না।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)