• রেকর্ড সংখ্যক বিদেশী সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষক, শান্তির ভোটে মানরক্ষা...
    আজকাল | ০৯ জানুয়ারি ২০২৪
  • তপশ্রী গুপ্ত, ঢাকা বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নানা কারণেই গোটা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কোনও দেশের ভোটে এত বেশি সংখ্যক বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষক নজিরবিহীন। বিদেশ মন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী ৩৪ টি দেশের দুশোরও বেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষক এসেছেন বাংলাদেশের ভোট কভার করার জন্য। এছাড়া আছেন রাষ্ট্রপুঞ্জ,সার্ক, কমনওয়েলথ ইত্যাদি আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। বিদেশী সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের জন্য সোনার গাঁও হোটেলে প্রায় চব্বিশ ঘন্টা খোলা ছিল মিডিয়া সেন্টার। অফিস খুলেছিল বিদেশ মন্ত্রক। ল্যাপটপে চোখ রেখে ব্যস্ত অফিসারেরা হাসিমুখে সামলাচ্ছিলেন স্পেন থেকে নাইজিরিয়া, লেবানন থেকে অস্ট্রেলিয়া, সব প্রতিনিধিদের। ভারতীয় সাংবাদিকরা বরং ঘরের লোকের মত স্বচ্ছন্দ। প্রয়োজনে দোভাষীর কাজও করে দিচ্ছিলেন কেউ কেউ। এই প্রতিনিধি সমাবেশে বিশেষ আকর্ষণ অবশ্য আমেরিকা ও চিন। প্রথম দেশটি বাংলাদেশের ভোটপর্বের কট্টর সমালোচক আর দ্বিতীয় দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা ভারতসহ এশিয়ার অন্য কয়েকটি দেশের মাথা ব্যথার কারণ। মার্কিন এক সাংবাদিক নির্বাচন কমিশনের সাংবাদিক সম্মেলনে ভোট ঘিরে সন্ত্রাসের আবহ নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। পরবর্তীকালে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, সিলেটে তার কেন্দ্রের একটি বুথে ভোর ছটায় হাজির হয়ে আমেরিকার প্রতিনিধিরা খোঁজ নিয়েছেন ব্যালট পেপারে কারচুপি হচ্ছে কিনা। ভোটের দিন ঢাকার বনানী এলাকার একটি বুথে দেখা হল দুই চিনা পর্যবেক্ষকের সঙ্গে। তাঁরা জানালেন, অভিভূত এমন সুসংগঠিত ভোট দেখে। এই নির্বাচন দেখে রীতিমত সাংবাদিকদের ডেকে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ওআইসি, রাশিয়া, ফিলিস্তিন ও গাম্বিয়ার পর্যবেক্ষকরাও। তারা বলেছেন, "ভোটার এবং প্রার্থীর এজেন্টদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, আমরা সন্তুষ্ট।" ওআইসির নির্বাচন ইউনিটের প্রধান শেখ মোহাম্মদ বন্দর বলেন, "পর্যবেক্ষক হিসেবে সন্ত্রাসের কোনো চিহ্ন আমাদের চোখে পড়েনি। আমি অবাক হয়েছি, দোকানপাট বন্ধ কেন! পথে কোনো মানুষ দেখা যায়নি। শহর ছিল শান্ত।আমার দেশের পাশাপাশি আমি আরব ইলেকট্রোরাল ম্যানেজমেন্ট বডিতেও রিপোর্ট জমা দেব।"জাপানের সর্বাধিক প্রচারিত সংবাদপত্র ইওমুরি শিমবুনের -এর সংবাদদাতা তোমোমি আসানো উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে। দিল্লি ব্যুরো থেকে তিনি বারবার ছুটে আসেন কখনও মেট্রো চালু কখনও বা গভীর সমুদ্র বন্দরের খবর করার জন্য। এই সবই হচ্ছে জাপানের সহযোগিতায়। তার মতে, এত শান্তিপূর্ণ ভোট এক অসামান্য অভিজ্ঞতা।বিদেশী সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের সার্টিফিকেটকে এত গুরুত্ব দিচ্ছে কেন বাংলাদেশ, এই প্রশ্নের উত্তরে বিদেশ মন্ত্রকের এক আধিকারিক বললেন, "গত কিছু মাস ধরে বিদেশের, বিশেষত আমেরিকা ও ইউরোপের সংবাদ মাধ্যমে এত সমালোচনা হয়েছে যে মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ভোট করে আমরা যোগ্য জবাব দিতে পেরেছি। সেটাই মানুষকে জানানো দরকার। তাই সব সংবাদ মাধ্যমে প্রচার চলছে।"
  • Link to this news (আজকাল)