জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: গোয়ার হোটেলের রুমে ৪ বছরের ছেলেকে খুন! খুন করে ব্যাগে দেহ ভরে পালাচ্ছিলেন স্টার্ট-আপ সিইও মা সূচনা শেঠ। বেঙ্গালুরু পালানোর পথে চিত্রদুর্গা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে কর্ণাটক পুলিস। সারা দেশ স্তম্ভিত এই ঘটনায়। ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এই ঘটনায়। জানা গিয়েছে, স্টার্ট-আপ সিইও মা সূচনা শেঠ মাইন্ডফুল AI ল্যাব-এর সিইও। তাঁর লিংকডিন পেজে তেমনটাই লেখা। সুচনা শেঠের লিংকডিন পেজে আরও লেখা, তিনি ২০২১-এ এআই এথিক্সে সেরা ১০০-য় ছিলেন। ২০২১-এর ১০০ ব্রিলিয়ান্ট উইমেন ইন AI এথিক্স-এ নাম রয়েছে সূচনা। দীর্ঘ ১২ বছরেরও বেশি স্টার্ট-আপ ল্যাবগুলিতে মেশিন লার্নিং সলিউশন স্কেলিং করা ও ডেটা সায়েন্স টিমকে পরামর্শ দেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। রীতিমতো কৃতী ছাত্রী সূচনা। এমনকি লিংকডিন প্রোফাইল অনুযায়ী সূচনা শেঠ হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বার্কম্যান ক্লেইন সেন্টারের একজন বিজ্ঞানীও। এহেন কৃতী মায়ের কেন এমন কুকর্ম? সন্তান খুনের মত অপরাধ কেন ঘটালেন তিনি? পুলিস সূত্রে জানা যাচ্ছে, সুচনা শেঠের স্বামী ভেঙ্কট রামন, যিনি এখন জাকার্তায় আছেন, তিনিও পেশায় একজন এআই ডেভেলপার। ২০১০ সালে ভেঙ্কট রামনের সঙ্গে বিয়ে হয় সূচনা শেঠের। কিন্তু ১০ বছরেই দাম্পত্যে ফাটল ধরে। ২০২০ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁদের। এখন ছেলের 'কাস্টডি' প্রসঙ্গে মামলার রায়ে আদালত জানিয়েছিল, শিশসন্তান মায়ের কাছে থাকলেও, রবিবারগুলোতে বাবার সঙ্গে দেখা করতে দিতে হবে ছেলেকে। সেটাই আপত্তি ছিল সূচনার। রবিবার বাবার সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা ছিল ছেলের। সেটা চাননি সূচনা। বাবার সঙ্গে ছেলের দেখা হওয়া আটকাতেই, ছেলেকে খুন করেন তিনি। ইতিমধ্যেই সুচনা শেঠের স্বামী ভেঙ্কট রামনকে এই ঘটনা সম্পর্কে জানিয়েছে পুলিস। বাবা আসার পরই ছেলের দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। ওদিকে ধৃত সূচনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোয়ায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ৬ জানুয়ারি উত্তর গোয়ার একটি হোটেলে ৪ বছরের ছেলেকে নিয়ে ওঠেন তিনি। ২ দিন ছিলেন হোটেলে। অভিযোগ, সোমবার গোয়ার সেই হোটেলের রুমেই ছেলেকে খুন করেন। তারপর একটি ব্যাগে দেহ ভরে ট্যাক্সিতে করে পালানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি।বেঙ্গালুরু ফেরার জন্য হোটেল কর্মীরা সস্তার বিমানের টিকিট বুক করতে চাইলেও, তিনি ট্যাক্সিতে ফেরার উপর জোর দেন। সুচনা শেঠ হোটেল থেকে চেক আউট করার পর, একজন হোটেল কর্মী, যিনি রুম পরিষ্কার করতে যান, তিনি-ই প্রথম চাদরে রক্তের দাগ লক্ষ্য করেন। তারপরই খবর দেওয়া পুলিসে। পুলিস এসে তদন্ত শুরু করে। পুলিস এসে সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখে যে, সুচনা শেঠ একাই হোটেল থেকে চেক আউট করেছেন। সেখান থেকেই শুরু হয় সন্দেহ। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। ছেলের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সূচনা শেঠ প্রথমে দাবি করতে থাকেন যে, ছেলেকে তিনি দক্ষিণ গোয়ায় এক আত্মীয়ের কাছে রেখে এসেছেন। কিন্তু সেই গল্প ধোপে টেকেনি। এরপর পুলিস ট্যাক্সিচালককে ফোন করে। ট্যাক্সিচালককে কাছের থানায় রিপোর্ট করতে বলা হয়। তারপরই সূচনা শেঠকে বেঙ্গালুরু যাওয়ার পথে কর্নাটক পুলিস চিত্রদুর্গা থেকে গ্রেফতার করে।