• বোঝার উপায় নেই নদী নাকি ডাম্পিং গ্রাউন্ড; জলে পড়ে আবর্জনার স্তূপ, দুর্গন্ধে চলা দায় পুরবাসীর
    ২৪ ঘন্টা | ০৯ জানুয়ারি ২০২৪
  • প্রদ্যুত্ দাস: নদী নয় যেন ডাম্পিং গ্রাউন্ড। নদীর পাড় হয়ে উঠছে নোংরা আবর্জনার স্তূপের পাহাড়। জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি শহরের বুকের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কুমলাই নদী দেখলে বোঝার উপায় নেই এটা নদী নাকি ডাম্পিং গ্রাউন্ড? শহরের সমস্ত নোংরা আবর্জনা ফেলা হয় এই নদীতে। এখন আবার সেতুর ওপর ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। সেতুর ফুটপাত পুরোটাই দখলে নোংরা আবর্জনার।

    আবর্জনার দুর্গন্ধে পথচারীদের মুখে কাপড় দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন আশপাশের ব্যবসায়ীরা। শুধু তাই নয় এই নোংরা আবর্জনায় মাঝে মধ্যেই অগ্নিকান্ডের মতো ঘটনা ঘটছে। তাতেই ব্যবসায়ীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে আতঙ্ক। আগুন ছড়িয়ে পড়ে বড়সড় অগ্নিকাণ্ডের আকার নিতে পারে। বার বার আগুন লাগার ঘটনায় যথেষ্ট বিরক্ত দমকল কেন্দ্রের কর্মীরা। সেতুর নীচে আগুন লাগার ঘটনায় প্রভাব পড়তে পারে সেতুতে। এমনটাই মনে করছে ব্যবসায়ী মহল।নোংরা আবর্জনার জেরে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে কুমলাই নদী। এতে যথেষ্ট চিন্তিত পরিবেশ প্রেমীরাও। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুরসভায় বার বার জানিয়ে সমস্যার কোনো সমাধান হচ্ছে না। শহরের বুকের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এই কুমলাই নদীর বর্তমান অবস্থা নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই কর্তৃপক্ষের। নদীর বর্তমান অবস্থা দেখলে মনে হবে না এটা নদী। পরিবেশ প্রেমীদের  আশঙ্কা নদী গতিপথও পাল্টে যেতে পারে। পুরসভার অ্যাডমিনিস্ট্রেট বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ কুমার সিং বলেন নদী নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই এই অভিযোগ ভুল। আমাদের সব থেকে বড় সমস্যা পুরসভার নিজস্ব ডাম্পিং গ্রাউন্ড নেই। খুব দ্রুত ডাম্পিং গ্রাউন্ডের সমস্যা মিটে যাবে। আর শুধু পুরসভার দোষ দিলে হবে না। পুর বাসীকেও সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। সবাই এক হয়ে কাজ করলে আমার মনে হয় কুমলাই নদী আবার আগের জায়গাতে ফিরে আসবে।ধূপগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ কুমার সিং আরও বলেন, প্রথম কথা হল নদীটিকে বাঁচানোর জন্য আগে আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। আগে বাজারের কিছু আবর্জনা নদীতে পড়ত। সেটা ধূপগুড়ি পুরসভা বন্ধ করে দিয়েছিল। এখন লুকিয়েচুরিয়ে কিছু লোক আবর্জনা ফেলতে পারে। আবার আবর্জনায় আগুন লাগাচ্ছে কিছু লোক। এনিয়ে প্রশাসনকে বলেছি। আগুনের খবর পেলেই দমকলকে দিয়ে নেভানোর চেষ্টা করা হয়। এরপর এরকম যাতে না হয় তার জন্য আমরা কড়া ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছি। বিষয়টি নজরে রাখছি। পুরসভা কোনও আবর্জনা ফেলে না। তাদের গাড়ি আছে। সেই গাড়িতে রোজ সকালে আবর্জনা তোলা হয়।স্থানীয় বাসিন্দা রাজেশ রায় বলেন, আবর্জনা নিয়ে প্রশাসনের কোনও নজর নেই। নিয়মিত নোংরা সাফ হয় না। তাই মানুষ ব্রিজের উপরে ময়লা জড়ো করছে। ধূপগুড়ি একটি পরিকল্পনাহীন শহর। মাছ বাজার তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেখানকার আবর্জনা ফেলবে কোথায়? ওইখানে নেংরা আবর্জনা পড়ে থাকছে। সেখান দিয়ে চলাচল করলে অন্নপ্রাশনের ভাত বেরিয়ে আসবে। প্রশাসনের জর দেওয়া উচিত। ধূপগুড়ির মানুষ প্রতিবাদহীন। আমরা এখন নিজেদের কথাই ভাবি। ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা ভাবি না।এলাকার ব্যবসায়ী সুব্রত সাহা বলেন, আবর্জনা সরায় সুইপাররাই। কিন্তু ধূপগুড়ি ট্রাফিক মোড় থেকে ধূপগুড়ি বাস টার্মিনাস পর্যন্ত যাওয়ার সময় নাকে রুমাল দিয়ে যেতে হয়।  মাঝে মধ্যে আবর্জনায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তাতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। দমকল সহজে আসতে চায় না। নদীর অবস্থা ভয়ংকর। জল ঢেকে গিয়েছে আবর্জনায়। পুরসভা সব জানে। ওদের ডাম্পিং গ্রাউন্ড রয়েছে। কিন্তু আবর্জনা এখানেই ফেলা হয়।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)