কুম্ভকে জাতীয় মেলার মর্যাদা; গঙ্গাসাগরে এক টাকাও দেয় না কেন্দ্র, উল্টো আমরা কর মকুব করেছি: মমতা
২৪ ঘন্টা | ১০ জানুয়ারি ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কেন্দ্রের সাহায্যে ছাড়াই গঙ্গাসাগরের জন্য এলাহি ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। তীর্থযাত্রীদের জন্য কর মকুব থেকে শুরু করে মেলার জন্য পরিকাঠামো গড়েছে সরকার। এবারও গঙ্গাসাগরের ব্যবস্থা ঘুরে দেখে এসেছি। মঙ্গলবার আউট্রাম ঘাটের ট্রানজিট পয়েন্টে এক অনুষ্ঠানে এমনটাই বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেউ তপসিলি, কেউ উচ্চবর্ণ, কেউবা নিম্নবর্গ হতে পারে। কিন্তু আমরা কখনও এনিয়ে কোনও বিভাজনের রাজনীতি করিনি। আমরা সব ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাই। আমরা বলি ধর্ম যার যার। সবাই তা পালন করুন। কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু মেলা বা উত্সব সবার। দুর্গাপুজো যখন হয় তখন বাইরের বহু মানুষ, এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ তা দেখতে আসেন। এতবড় উত্সব হয় যে ইউনেস্কো দুর্গাপুজোকে ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজের মর্যাদা দিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গঙ্গাসাগর মেলার ব্যাপারে আমরা ৪-৫ দফা কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছি। বহু কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। অনেককিছু চেয়েছি। কথা বলেছি। আমরা আবেদন করেছি, কুম্ভকে আপনারা জাতীয় মেলা হিসেবে ঘোষণা করেছেন। মেলার পরিকাঠামো তৈরির জন্য আর্থিক সাহায্য করেন। কিন্তু গঙ্গাসাগর এমন একটি মেলা যেখানে একটা টাকাও আপনারা দেন না। যখন যুব আন্দোলন করতাম তখন দেখতাম তখনকার বাম সরকার কর নিত। আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার আগে যখন আমরা জেলা পরিষদ জিতেছিলাম তখন সেই কর মকুব করে দিয়েছিলাম। আর দ্বিতীয়ত যত মানুষ ৯-১৬ জানুয়ারি গঙ্গাসগরে যাবেন তারা যদি মারা যানা তাহলে তাদের জন্য ৫ লাখ টাকা বিমা করিয়ে রেখেছি। পুলিস, সিভিল ডিফেন্স, তীর্থযাত্রী, সাধারণ মানুষ যারই মৃত্যু হবে তিনিই ওই বিমার টাকা পাবেন।গতকাল গঙ্গাসাগরে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এনিয়ে তিনি বলেন, গতকাল গঙ্গাসাগর গিয়েছিলাম। কপিল মুনির আশ্রমে গিয়েছিলাম। রাত বারোটায় একটি সারপ্রাইজ ভিজিটও করেছিলাম। আজ আমি ওখান থেকে জয়নগর এসেছি। সেখানে থেকে ডুমুরজলা হয়ে নবান্নে পৌঁছনোর পর খবর পেলাম উস্তাদ রশিদ খান প্রয়াত। সুরের সম্রাট ছিলেন উনি। ওঁর জন্ম উত্তর প্রদেশে হয়েছিল। ওঁর পরিবারও উত্তর প্রদেশে থাকেন। কিন্তু ওঁর গোটা জীবন কলকাতায় কেটেছে। ওদের পরিবার আমাকে খুব ভালোবাসে। হাসপাতালে গিয়ে ওঁকে দেখে এলাম। আগামিকাল ওঁর পারলৌকিক কাজের জন্য ব্যবস্থাও করে এলাম। তাই আসতে খানিকটা দেরি হল। কলকাতার ক্ষত্রিয় সমাজ, বিহারি সমাজ-হ বহু সংগঠন একসঙ্গে কাজ করেন। দেখুন কুম্ভমেলায় যেতে বাস,ট্রেন পাওয়া য়ায়। আর গঙ্গাসাগর জলপথে যেতে হয়। এটা খুব একটা সহজ নয়। বেশ শক্ত।গঙ্গাসাগরের জন্য বেশকিছু ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। সেইসব ব্যবস্থার কথা জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ট্যাক্সতো আগেই মকুব করে দিয়েছি, লাইট দিয়ে গোটা এলাকা সাজিয়েছি। এর জন্য খরচ হয়েছে ৮ কোটি টাকা। মুড়িগঙ্গা পার করে মেলায় যেতে হয়। যখন ভাটা চলে তখন জোয়ারের জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকতে হয়। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, বাফার জোনে এসে অপেক্ষা করুন। জোয়ার এলে পুলিস এসে আপনাদের পার করে দেবে। জলপথ ড্রেজিংও করে দিয়েছি। আমাদের পক্ষে যা করার ছিল তা করে দিয়েছি। যাত্রীদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি, ২১টি জেটি তৈরি করে দিয়েছি। ২০০৫টি বাস দিয়েছি, ৬টি বার্জ দিয়েছি, ৩২টি ভেসেল দিয়েছি, ১০০ লঞ্চ দিয়েছি, লাইফ জ্যাকেট দিয়েছি। প্রতিটি ভেসেলে জিপিএস আছে। গঙ্গাসাগর যাওয়ার জন্য একটি মাত্র টিকিট করেছি। প্রচুর পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে। ২০৪০০ সিভিল ডিফেন্স কর্মী, ডাক্তা, এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য গঙ্গাসাগরকে ইকো ফ্রেন্ডলি মেলায় পরিণত করব। গঙ্গাসাগরে তিন দিন আরতি হবে।