৪ বছরের ছেলের খুনি CEO-হার্ভার্ডের গবেষক সূচনা কলকাতারই মেয়ে!
২৪ ঘন্টা | ১০ জানুয়ারি ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ৪ বছরের ছেলের খুনি, স্টার্ট-আপের সিইও সূচনা শেঠ কলকাতারই মেয়ে। কলকাতাতেই তাঁর পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠা। ছোট থেকেই মেধাবী ছিলেন সূচনা। কলকাতার ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি থেকে ফিজিক্সে অনার্স সহ স্নাতক হন সূচনা। তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর করেন। প্লাজমা ফিজিক্স ও অ্যাস্ট্রোফিজিক্সে সূচনা শেঠের স্পেশালাইজেশন রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এর পাশাপাশি সংস্কৃতেও পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করেছিলেন সূচনা। রামকৃষ্ণ মিশন থেকে এই পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করেন সূচনা। গোয়ার হোটেলের রুমে ৪ বছরের ছেলেকে খুন করেন সূচনা। খুনের পর দেহ ব্যাগে ভরে বেঙ্গালুরুতে পালাচ্ছিলেন সূচনা শেঠ। সেইসময় চিত্রদুর্গা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে কর্ণাটক পুলিস। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিস মনে করছে, ৩৬ ঘণ্টা আগেই ৪ বছরের একরত্তি ছেলেকে খুন করেন সূচনা শেঠ। বালিশ বা তারজাতীয় কিছু দিয়ে শ্বাসরোধ করে ছেলেকে খুন করেন তিনি। এমনকি তারপর নিজেও আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সূচনা। স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা-ই এই নৃশংস হত্য়াকাণ্ডের নেপথ্য কারণ বলেও মনে করছে পুলিস। মাইন্ডফুল AI ল্যাব-এর সিইও ছিলেন সূচনা শেঠ। তাঁর লিংকডিন পেজের প্রোফাইল অনুযায়ী সূচনা শেঠ ২০২১-এ এআই এথিক্সে সেরা ১০০-য় ছিলেন। দীর্ঘ ১২ বছরেরও বেশি ডেটা সায়েন্স নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। সূচনা কাজ করেছেন হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বার্কম্যান ক্লেইন সেন্টারেও। সূচনা শেঠের স্বামী ভেঙ্কট রামনও পেশায় একজন এআই ডেভেলপার। ২০১০ সালে ভেঙ্কট রামনের সঙ্গে বিয়ে হয় সূচনা শেঠের। কিন্তু ১০ বছরেই দাম্পত্যে ফাটল ধরে। ২০২০ সালে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা হয়। ছেলের 'কাস্টডি' প্রসঙ্গে মামলার রায়ে আদালত জানিয়েছিল, শিশসন্তান মায়ের কাছে থাকলেও, রবিবারগুলোতে বাবার সঙ্গে দেখা করতে দিতে হবে ছেলেকে। সেটাই আপত্তি ছিল সূচনার। রবিবার বাবার সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা ছিল ছেলের। সেটা চাননি সূচনা। বাবার সঙ্গে ছেলের দেখা হওয়া আটকাতেই, ছেলেকে খুন করেন তিনি। এমনই অভিযোগ। এই ঘটনায় বিদেশে রত সূচনার স্বামীকে তাঁর বয়ান ভয়েস রেকর্ড করে পাঠাতে বলেছে পুলিস। ৬ জানুয়ারি উত্তর গোয়ার একটি হোটেলে ৪ বছরের ছেলেকে নিয়ে ওঠেন তিনি। ২ দিন ছিলেন হোটেলে। অভিযোগ, সোমবার গোয়ার সেই হোটেলের রুমেই ছেলেকে খুন করেন। তারপর একটি ব্যাগে দেহ ভরে ট্যাক্সিতে করে পালানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি।বেঙ্গালুরু ফেরার জন্য হোটেল কর্মীরা সস্তার বিমানের টিকিট বুক করতে চাইলেও, তিনি ট্যাক্সিতে ফেরার উপর জোর দেন। সুচনা শেঠ হোটেল থেকে চেক আউট করার পর, একজন হোটেল কর্মী, যিনি রুম পরিষ্কার করতে যান, তিনি-ই প্রথম চাদরে রক্তের দাগ লক্ষ্য করেন। তারপরই খবর দেওয়া পুলিসে। পুলিস এসে তদন্ত শুরু করে। পুলিস এসে সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখে যে, সুচনা শেঠ একাই হোটেল থেকে চেক আউট করেছেন। সেখান থেকেই শুরু হয় সন্দেহ। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। তারপরই গোটা ঘটনা সামনে আসে।