জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ১৯৯২ সাল থেকে মৌনব্রত নিয়েছেন সরস্বতী দেবী। বাবরি মসজিদ ভাঙার দিন থেকেই কথা বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরি হলে সেই ব্রত ভাঙবেন বলে কথাও দিয়েছিলেন। অবশেষে স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে তাঁর। ২২ জানুয়ারী ব্রত ভাঙতে চলেছেন ঝাড়খণ্ডের সরস্বতী দেবী। মন্দির উদ্বোধনের সাক্ষী থাকতে সোমবার রাতেই ট্রেনে চেপে উত্তরপ্রদেশের মন্দির শহরের উদ্দেশে রওনা দেন ধানবাদের এই বাসিন্দা।
অযোধ্যায় 'মৌনি মাতা' নামে পরিচিত সরস্বতী দেবী সাইন ল্যাঙ্গুয়েজের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং প্রয়োজনে জটিল বাক্য লিখে বলতেন। যদিও তিনি 'মৌন ব্রত' থেকে বিরতি নিয়ে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুরে এক ঘণ্টা করে কথা বলেন, কিন্তু যেদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সেদিন তিনি সম্পূর্ণ নীরব ছিলেন।১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর যেদিন বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়, সেদিন আমার মা শপথ নিয়েছিলেন, অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত নীরবতা পালন করবেন। সরস্বতী দেবীর কনিষ্ঠ সন্তান ৫৫ বছর বয়সী হরে রাম আগরওয়াল সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, মন্দিরটি উদ্বোধনের দিন ঘোষণার পর থেকেই তিনি উচ্ছ্বসিত। সোমবার রাতে ধানবাদ রেল স্টেশন থেকে গঙ্গা-সুতলেজ এক্সপ্রেসে অযোধ্যার উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। বাঘমারা ব্লকের ভৌরা এলাকার বাসিন্দা হরে রাম জানান, আগামী ২২ জানুয়ারি তিনি নীরবতা ভাঙবেন।রাম মন্দির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সরস্বতী দেবীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মহন্ত নৃত্যগোপাল দাসের শিষ্যরা। ১৯৮৬ সালে স্বামী দেবকীনন্দন আগরওয়ালের মৃত্যুর পর ভগবান রামের কাছে নিজের জীবন উৎসর্গ করেন সরস্বতী দেবী। তিনি বর্তমানে তাঁর দ্বিতীয় সন্তান ধানবাদের ধাইয়াতে কোল ইন্ডিয়ার শাখা ভারত কোকিং কোল লিমিটেডের (বিসিসিএল) কর্মকর্তা নন্দ লাল আগরওয়ালের সঙ্গে বসবাস করছেন। নন্দলালের স্ত্রী ইনু আগরওয়াল (৫৩) জানান, বিয়ের কয়েক মাস পর তিনি দেখেন, শাশুড়ি রামের ভক্তিতে নীরবতার ব্রত গ্রহণ করছেন।ইনু আগরওয়াল জানিয়েছেন, প্রতিদিন ভোর ৪ টে নাগাদ ঘুম থেকে উঠে শাশুড়ি প্রায় ৬-৭ ঘণ্টা সাধনা করেন। তিনি বলেন, "সন্ধ্যা আরতির পর সন্ধ্যায় তিনি রামায়ণ, ভগবত গীতার মতো ধর্মীয় বই পড়ে থাকেন। দিনে একবারই খাবার খান এবং সকাল-বিকেল এক গ্লাস দুধ খান। ভাত, ডাল এবং রুটির সমন্বয়ে একটি নিরামিষ খাবারই খান সরস্বতী দেবী।