জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ই-টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ উঠল তৃনমুল পরিচালিত বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। তৃনমুল কংগ্রেস পরিচালিত মাল ব্লকের বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ই- টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ তুললেন টেন্ডার প্রকৃয়ায় অংশগ্রহণকারি বেশ কিছু যুবক। এই যুবকেরাই আবার বাগ্রাকোট এলাকার তৃণমূলের বিক্ষুদ্ধ গোষ্ঠীর। বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর তরফে অভিযোগ, রাস্তা এবং নর্দমার কাজের জন্য ১২ শতাংশ ঘুষ চেয়েছে বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েত কতৃপক্ষ।যদিও বিষয়টিকে পুরোপুরি মিথ্যে এবং ষড়যন্ত্র বলে ব্যাখ্যা করেছেন বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পুনোম লোহার।
বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ওয়াশাবাড়ি চা বাগানের বাসিন্দাদের অভিযোগ যে গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি সিসি রোড এবং ড্রেন নির্মানের জন্য ই- টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেছিলেন তারা।কিছুদিন আগে হার্ডকপি পেশ করার সময় নির্ধারন করা হয়েছিলো সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত। অভিযোগ যে সেদিন সকাল সাড়ে দশটা থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতে ঢোকার মূল গেট ভেতর থেকে তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছিলো।বিষয়টি নিয়ে সেদিনই প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানানোর পর মাল থানার পুলিসের হস্তক্ষেপে সময়সীমা শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে গেট খোলা হয়। তারপর গ্রাম পঞ্চায়েতের ই-টেন্ডার কমিটির সামনে টেন্ডার প্রক্রিয়া সংক্রান্ত সমস্ত হার্ডকপি পেশ করা হয়।যুবকদের অভিযোগ, যে ই-টেন্ডার কমিটির সদস্যদের চাহিদা মতো ১২ শতাংশ ঘুষ দিতে অস্বীকার করার কারনেই গ্রাম পঞ্চায়েতের মূল গেট তালাবন্ধ করে রেখে তাদের হার্ডকপি পেশ করতে বাধা দেওয়া হয়। শেষে তাদের তাদের টেন্ডার পেপার বাতিল করা হয়।পুরো বিষয়টি জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী যুবকেরা।তবে এই সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন, বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতি রাজেশ ছেত্রী এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পুনোম লোহার।প্রধান পুনোম লোহারের বক্তব্য, ‘ই-টেন্ডার কমিটি যদি ঘুষ চেয়ে থাকে তবে উপযুক্ত প্রমান দাখিল করুন অভিযোগকারীরা। সেদিন অফিসের কোন গেট বন্ধ ছিলো না’।এই প্রসঙ্গে বাগ্রাকোট এলাকার বাসিন্দা তথা জেলা পরিষদের সদস্য সেলিনা ছেত্রী বলেন, ‘ই-টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ কেন তোলা হচ্ছে বোধগম্য হচ্ছে না। পুরোটাই ষড়যন্ত্র এবং মিথ্যে অভিযোগ। নতুন বোর্ডের আগে যারা বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েত চালিয়েছিলো, তাদের নামে নানা অভিযোগ রয়েছে কিন্তু নতুন বোর্ড ভাল কাজ করছে। এই বোর্ডে কোনও দুর্নিতি নেই’।অন্যদিকে, এই এলাকায় তৃনমূলের বর্তমান অঞ্চল কমিটির সভাপতি রাজেশ ছেত্রী বলেন, ‘সব চক্রান্ত হচ্ছে। বর্তমান সময়ে সব রকম পরিসেবা বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে পাচ্ছে’।তিনি আরও বলেন, এলাকার একসময়ের প্রভাবশালী ও জেলা তৃনমূলের প্রাক্তন সাধারন সম্পাদক রাজু শাহির সময় এই বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েত নানা দুর্নিতি হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত তাদের হাতছাড়া হওয়ায় উল্টাপাল্টা অভিযোগ করছে।উল্লেখ্য, তৃনমূলের জেলা কমিটির প্রাক্তন সাধারন সম্পাদক রাজু শাহি এবং বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃনমুল উপপ্রধান সরিতা শাহির ছেলে বেদান্ত সাহী সহ অন্য তিন যুবকের অভিযোগ, অবিলম্বে সম্পুর্ন টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি টেন্ডার প্রকৃয়ায় স্বচ্ছতা আনতে হবে।প্রশাসনিক স্তরে অবশ্য পুরো ঘটনাক্রম খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।