'এক দেশ, এক নির্বাচন'; কেন্দ্রের প্রস্তাবের বিরোধিতায় চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর...
২৪ ঘন্টা | ১২ জানুয়ারি ২০২৪
সুতপা চক্রবর্তী: 'রাজ্যের মতামত ছাড়াই কেন একতরফা সিদ্ধান্ত'? কেন্দ্রের 'এক দেশ, এক নির্বাচন' প্রস্তাবের বিরোধিতা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উচ্চ পর্যায়ের কমিটি সম্পাদক নীতীন চন্দ্রকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। তৃণমূলনেত্রীর প্রশ্ন, 'কমিটিতে কেন কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে রাখা হয়নি'?
ঘটনাটি ঠিক কী? এখন দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিধানসভা ভোট হয় বিভিন্ন সময়ে। আবার কেন্দ্রীয় সরকারের মেয়াদ শেষ হলে, লোকসভা ভোট! এই ব্যবস্থাটিকে এবার বদলে ফেলতে চাইছে মোদী সরকার। 'এক দেশ, এক নির্বাচন' প্রস্তাব খতিয়ে দেখার জন্য় তৈরি করা হয়েছে উচ্চপর্যায়ের কমিটি। সেই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে মতামত চাওয়া হয়েছে। কমিটির সম্পাদক নীতীন চন্দ্রকে চিঠি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় জানিয়েছেন, 'যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এই ভাবনা অস্বচ্ছ ও অগণতান্ত্রিক। রাজ্যের মতামত ছাড়াই একতরফাভাবে উপর থেকে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে'।বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের পাল্টা প্রশ্ন, 'মুখ্যমন্ত্রীর কথা বলার কোনও নৈতিক কিংবা রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক অধিকার আছে? পশ্চিমবঙ্গে কোন সিদ্ধান্ত, বিরোধীদের সহমতের ভিত্তিতে নিয়েছেন'? তিনি বলেন, 'এক দেশ এক নির্বাচন কোনও নতুন ভাবনা নয়। অতীতে বহু রাষ্ট্রনেতারা ভেবেছেন। আগের অনেক প্রধানমন্ত্রী চিন্তাভাবনা করেছেন। এই বিশাল দেশ, নির্বাচনের এত খরচ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবহার, এগুলি তো কমাতে হবে। তারজন্য় একটা প্রস্তাবনা হয়েছে, সবার কাছ থেকে মতামত নেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীদের কাছ থেকেও মতামতা চাওয়া হয়েছে'।শমীকের আরও বক্তব্য, 'এটা হবেই। মানুষের সমর্থন নিয়ে হবে, যা খুশি হবে না। আমার মনে হয়, মুখ্য়মন্ত্রীর সমর্থন দীর্ঘদিন প্রয়োজনও হবে না, কারণ এই সরকারটি দীর্ঘদিন থাকবে না'।তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের কটাক্ষ, 'ভারতবর্ষে এখন যেভাবে স্বৈরাচারী, হিটলারি, তুঘলকি সরকার চলছে, মোদী-শাহ প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির পরিচালনায়, এবং সেই কোম্পানিতে যাঁরা কর্মরত রয়েছেন, তাদের মুখে এধরণের কথা শোভা পায় না'! তাঁর মতে, 'বিভিন্ন রাজ্যের ভোট হয় বিভিন্ন সময়ে, মানুষ ভোট দেয় ৫ বছরের জন্য। সেখানে কীভাবে ৫ বছর শেষ হওয়ার পর, প্রশাসক বসিয়ে সেটাকে দীর্ঘমেয়াদি করা যায়? কীভাবে মেয়াদ শেষের আগেই আবার নির্বাচন ডাকা যায়'? বলেন, 'এক দেশ, এক নির্বাচনের বিষয়ে আমাদের দলনেত্রী আমাদের দলে যেটা মত, খুব দৃপ্তভাবে জানিয়েছেন। কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে আলোচনা না রেখে, একনায়কতন্ত্রের সিদ্ধান্ত ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়ার যে প্রচেষ্টা, সেই চেষ্টারই বিরোধিতা করে তিনি আপত্তি জানিয়েছেন'।