নীতি পুলিশির ভয়াবহ দৃশ্য ধরা পড়ল কর্ণাটকে। ভিন্ন ধর্মে প্রেম করা যুগলকে হোটেল ঘরে ঢুকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তিন যুবকের বিরুদ্ধে। এদিকে তরুণীকে ধর্ষণেরও অভিযোগ উঠেছে এই ঘটনায়। এই গোটা ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দি হয়েছে এবং সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় তা ভাইরালও হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই ঘটনাটি ঘটেছে হাভেরি জেলায়। গত ৮ জানুয়ারি এই ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত তিন যুবকের নাম - মকবুল আহমেদ চন্দনকাট্টি (২৪), মদরসব মহম্মদ ইসাক মন্ডক্কি (২৩) এবং সমিউল্লাহ লালনাভর (২৩)। (রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ৮ জানুয়ারি হোটেলকর্মী সেজে যুগলের ঘরে ঢোকে সেই তিন যুবক। দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে নাকি অভিযুক্তদের একজন বলেছিলেন, বাথরুমে ঠিক ভাবে জল পড়ছে কি না তা পরীক্ষা করতে এসেছে সে। সেই সময় ঘরে থাকা যুগল জানায় বাথরুমে ঠিকঠাক জল পড়ছে। তবে তাও সেই যুবক ঘরে ঢোকার জন্য জোর করতে থাকে এবং দরজায় ধাক্কা মারতে থাকে। এরপর বাধ্য হয়েই দরজা খোলেন ঘর ভাড়া নেওয়া যুবক। এরপরই তড়িঘড়ি ছেলে তিনটি ঘরে ঢোকে এবং ঘর ভাড়া নেওয়া সেই যুবককে তাঁর নাম জিজ্ঞেস করে। ওদিকে ততক্ষণে ঘরে থাকা মহিলা নিজের মুখ বোরখায় ঢেকে ফেলেন।
এরপরই হোটেল ঘরে তাণ্ডব শুরু করে সেই তিন যুবক। যুগলকে মারতে মারতে মাটিতে ফেলে দেয় তারা। সঙ্গে চলতে থাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ। ভাইরাল ভিডিয়োতে শোনা যাচ্ছে, হামলাকারী যুবকদের একজন বলছে, 'আমাদের মেয়েকে চাই তোর?' মারতে মারতে ঘর ভাড়া নেওয়া যুবকের জামা ছিঁড়ে দেয় সেই তিন হামলাকারী। এরপর সেই যুবক ঘর থেকে পালানোর চেষ্টা করেন। এদিকে ঘরে থাকা তরুণী অভিযোগ করেন, তাঁকে এরপর টানতে টানতে হোটেল থেকে বের করে আনে সেই তিন যুবক। পরে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়।
এদিকে এই গোটা ঘটনা চাক্ষুষ করা এক হোটেল কর্মী গত ১০ জানুয়ারি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে। তাঁর করা এফআইআর অনুযায়ী, সেই তিন যুবক দুপুর ১টা ও ২টোর মাঝে হোটেলে আসে। তারা সেই যুগলের ঘরের নম্বর জানতে চায় রিসেপশনে। এরপর বলপূর্বক সেই যুগলের ঘরে ঢুকে পড়ে তারা। ঘর ভাড়া নেওয়া যুগলকে বেধড়ক মারধর করে সেই তিনজন। রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই ঘরে এক হিন্দু যুবক এবং এক মুসলিম তরুণী ছিল। এদিকে ঘটনা প্রসঙ্গে সেই নির্যাতিতা তরুণী মিডিয়াতে দাবি করেন, হোটেল থেকে তাঁকে গাড়িতে করে লেকের পাড়ে নিয়ে গিয়েছিল সেই তিন যুবক। তারপর সেখানে একটা জঙ্গলে তাঁকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। এদিকে গাড়ির চালকও সেই তরুণীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। পরে সেই তরুণীকে রাস্তায় ছেড়ে দিয়ে সিরসির বাসে তুলে দেয় সেই যুবকরা।
এদিকে ঘটনা প্রসঙ্গে হানাগাল পুলিশ থানার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ধর্ষণের কোনও মামলা এখনও দায়ের করা হয়নি। তবে মিডিয়া রিপোর্ট থেকে তারা বিষয়টি জানতে পেরেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই আবহে নির্যাতিতা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিজের বয়ান রেকর্ড করলে এফআইআর-এ ধর্ষণের ধারা যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।