• Ram Mandir : রামমন্দির সূচনা বয়কট: 'হাত' শিবিরে নানা সুর
    এই সময় | ১২ জানুয়ারি ২০২৪
  • ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে সনিয়া গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে, অধীর চৌধুরীরা যাবেন না বলে কংগ্রেস শিবিরের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়ার পরে জাতীয় রাজনীতিতে বিতর্ক জোরদার হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ ‘সম্মানের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান’-এর সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়ায় হাত শিবিরের মধ্যেই মতানৈক্য সামনে চলে এল।লোকসভা ভোটের আগে সারা দেশের হিন্দু ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের এই সিদ্ধান্ত কতখানি কার্যকরী হবে—তা নিয়ে প্রকাশ্যে বা একান্তে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন দলেরই অনেকে। এই সুযোগে বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতি করার অভিযোগ তোলার পাশাপাশি পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর প্রসঙ্গ তুলে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। আগামী দিনে এনিয়ে তারা আরও বড় প্রচারে নামবে বলেও গেরুয়া শিবির সূত্রের ইঙ্গিত।অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন বয়কট না করে সেখানে দলের কোনও সাংসদ বা প্রতিনিধিকে পাঠালে দল হয়তো সঠিক সিদ্ধান্ত নিত—এমনটাই মনে করছেন অনেক কংগ্রেস নেতা৷ গুজরাট প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অর্জুন মোদওয়াদিয়ার যুক্তি, ‘ভগবান রাম আরাধ্য দেবতা৷ রামমন্দিরের সঙ্গে গোটা দেশের মানুষের আস্থা, বিশ্বাস জড়িত৷ এটা মাথায় রেখে এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত না নিলেই পারত দল৷’রামমন্দিরের উদ্বোধন বয়কট করার সিদ্ধান্ত তাঁকে হতাশ করেছে বলে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছেন কংগ্রেস-পন্থী সন্ন্যাসী প্রমোদ কৃষ্ণণও৷ বস্তুত লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেস এই অনুষ্ঠানে যাওয়া নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়, সে দিকে তাকিয়েছিল গোটা দেশের রাজনৈতিক মহল। এনিয়ে কোনও একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব সহজ ছিল না সনিয়া, খাড়গেদের কাছে।একদিকে সংখ্যালঘু মুসলিম ভোটব্যাঙ্কে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা এবং ‘ইন্ডিয়া’ শিবিরের বাকি দলগুলির সঙ্গে ভিন্ন অবস্থান নিলে জোটে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা, উল্টোদিকে বিশেষ করে গোবলয়ের বড় হিন্দু ভোটব্যাঙ্কে কী প্রভাব পড়বে সেই ভাবনা—এই দোলাচল কাটিয়ে বুধবার কংগ্রেসের তরফে প্রবীণ সাংসদ জয়রাম রমেশ জানিয়ে দেন, এই অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না সনিয়া, খাড়গে, অধীররা। কংগ্রেসের প্রদেশ ও কেন্দ্রীয় বিভিন্ন স্তরের নেতাদের মধ্যে অনেকেই মনে করছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে দলের এই সিদ্ধান্ত বিজেপির হাতে প্রচারের বড় অস্ত্র তুলে দিল৷এদিনই এই ইস্যুতে হাত শিবিরকে বিঁধে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বলেন, ‘তোষণের রাজনীতি করতে গিয়ে কংগ্রেস লাগাতার হিন্দু বিশ্বাসের বিরুদ্ধাচরণ করে চলেছে। গত দু’-চার দশকে যতবারই রামমন্দিরের কথা উঠেছে, প্রতিবারই তারা তার বিরোধিতা করেছে। বর্তমান কংগ্রেস পার্টি তোষণের তুঙ্গে পৌঁছে গিয়েছে। তাই রামমন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ ফেরানোয় আমি একটুও অবাক হইনি।’যদিও নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি তুলে ধরতেই রামমন্দিরের উদ্বোধনে আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে বলে দাবি এআইসিসি নেতৃত্বের। দলীয় সূত্রের যুক্তি, রামমন্দির উদ্বোধনে যোগদান করলে লোকসভা ভোটের প্রচারে বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মীয় মেরুকরণের অভিযোগ তোলা সম্ভব হতো না৷ দলের অবস্থানকে সমর্থন করে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংয়ের প্রশ্ন, ‘গত এপ্রিলে বা আগামী এপ্রিলের রাম নবমীতেই তো তাহলে অযোধ্যায় ভগবান রামের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা যেত। লোকসভা ভোটের আগে ২২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর হাতে মন্দির উদ্বোধনের কী প্রয়োজন?’কংগ্রেস শিবিরকে কটাক্ষ করতে গিয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা আবার বলেছেন, ‘পণ্ডিত নেহরু যখন সোমনাথ মন্দিরের অনুষ্ঠান (মে, ১৯৫১) বয়কট করেছিলেন, তবে থেকেই এই ট্র্যাডিশন শুরু হয়েছে। সেদিন পণ্ডিত নেহরু যা করেছিলেন, আজ রামমন্দিরের ক্ষেত্রে কংগ্রেস নেতৃত্ব তাই করছেন।’ বিজেপি নেতা, আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়ের খোঁচা, ‘রাহুল গান্ধীজি শিব ভক্ত, এই কারণে উনি অযোধ্যা নন, কাশী যাবেন৷ অখিলেশ যাদবজি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত, তাই উনি অযোধ্যা নন, মথুরায় যাবেন৷ আসলে এঁরা ভুলে যাচ্ছেন, অযোধ্যা তো ঝাঁকি হ্যায়, কাশী মথুরা বাকি হ্যায়৷’রাজ্য, দেশ, দুনিয়া, বিনোদন, খেলার সব খবর সবার আগে পেতে হোয়াটসঅ্যাপে ফলো করুন এই সময়কে।
  • Link to this news (এই সময়)