• শাহজাহান শেখকে কেন এখনো গ্রেফতার করা যায়নি, রাজ্যের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট রাজ্যপাল
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১২ জানুয়ারি ২০২৪
  • সে কোথায়? এই প্রশ্নে তোলপাড় গোটা রাজ্য। সন্দেশখালিতে কেন্দ্রীয় এজেন্সি ইডির আধিকারিকরা আক্রান্ত হওয়ার পর ৭ দিন কাটলেও গায়েব মূল অভিযুক্ত তৃণমূলি গুন্ডা শাহজাহান শেখ। কেন ৭ দিন পরেও গ্রেফতার করা গেল না শাহজাহানকে? বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজভবনে গিয়ে তা রাজ্যপালকে ব্যাখ্যা করেন মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা ও স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। পরদিন সকালে রাজ্যপাল জানালেন, তাঁদের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট তিনি।

    সন্দেশখালির ঘটনার তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে তথ্য জানতে বৃহস্পতিবার মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবকে তলব করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সন্ধ্যায় রাজ ভবনে পৌঁছে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তাঁরা। ৪০ মিনিটের বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে তখন মুখ খোলেনি কোনও পক্ষই। বৃহস্পতিবার সকালে রাজভবনে যুব দিবস পালনের অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে আমার বৈঠক হয়েছে। তাঁরা আমাকে জ্বলন্ত কয়েকটি বিষয়ে রাজ্য সরকারের মতামত জানিয়েছেন, বিশেষ করে ইডি আধিকারিকদের হেনস্থার ব্যাপারটি নিয়ে। তাঁরা আমাকে কিছু মূল্যবান তথ্য দিয়েছেন। তবে তদন্ত চলছে বলে আমি তা গোপন রাখতে চাই’।

    তাঁর নির্দেশের পরেও কেন গ্রেফতার করা হয়নি শেখ শাহজাহানকে? এই প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যপাল বলেন, ‘আমি শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে বলেছিলাম। কিন্তু কেন দেরি হচ্ছে তা আমার কাছে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আমি সেই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট। যেহেতু তদন্ত চলছে আমি বিস্তারিত প্রকাশ্যে আনতে চাই না’।

    সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকরা আক্রান্ত হওয়ার পর অভিযুক্ত তৃণমূলি গুন্ডা শেখ শাহজাহানকে অবিলম্বে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যপাল।গত শুক্রবার সকালে সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে যান ইডির আধিকারিকরা। অনেক ডাকাডাকিতেও কেউ সাড়া না দেওয়ায় বাড়ির তালা ভাঙার চেষ্টা শুরু করেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। তখনই বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েক শ’ নারী - পুরুষ দুষ্কৃতী কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ও ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় একাধিক ইডি আধিকারিকের মাথা ফাটে। এর পর গাড়িতে করে এলাকা ছাড়ার চেষ্টা করেন ইডি আধিকারিকরা। অভিযোগ গাড়ি থামিয়ে ফের মারধর করা হয় তাঁদের। ভাঙচুর করা হয় গাড়ি। প্রাণ বাঁচাতে অটো রিকশয় করে এলাকা ছাড়েন তাঁরা। এর পর এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ শুরু হয়।

    এই ঘটনার পর রাজ্যপালকে পদক্ষেপ করাতে আহ্বান জানিয়ে টুইট করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকরী। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যে সাংবিধানিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে বলে কেন্দ্রকে রিপোর্ট দেওয়া উচিত রাজ্যপালের।

    এর পর জারি এক অডিয়ো বার্তায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেছিলেন, ‘যে ভয়াবহ ঘটনার খবর সন্দেশখালি থেকে পেয়েছি তা উদ্বেগজনক ও অগ্রহণযোগ্য। বর্বরতা ও তাণ্ডব বন্ধ করা গণতন্ত্রে যে কোনও সভ্য সরকারের দায়িত্ব। সরকার তার প্রাথমিক দায়িত্ব পালনে অক্ষম হলে সংবিধান তার পথে চলবে। রাজ্যপাল হিসাবে এই ঘটনায় উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে আমি আমার সমস্ত সাংবিধানিক অধিকার সংরক্ষিত রাখছি'।

    রাজ্যকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলিলেন, 'পেশিশক্তির প্রদর্শন ও কাগুজে বাঘদের দিয়ে কদমতাল করিয়ে বাংলার মানুষের কোনও উপকার হবে না। জঙ্গলরাজ ও গুন্ডারাজ শুধু মুর্খের স্বর্গে কাজ করে। বাংলা কোনও বানানা রিপাবলিক নয়। সরকারের তাদের পদক্ষেপ করা উচিত। ভোটপূর্ব এই হিংসা নিশ্চিতভাবে অবিলম্বে অবসান হওয়া উচিত। এই হিংসার দায় শুধুমাত্র বর্তায় সরকারের ওপর। সরকারের উচিত চোখ মেলে বাস্তবকে দেখা এবং যথাযথ পদক্ষেপ করা। নইলে তাদের এর ফল ভোগার জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত’।

     

     
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)