• Table Tennis: প্রভিডেন্ট ফান্ডের ৭৭ লক্ষ টাকা দিয়ে টেবিল টেনিস অ্যাকাডেমি গড়েছেন ঐহিকা, সুতীর্থাদের মেন্টর ...
    আজকাল | ১৩ জানুয়ারি ২০২৪
  • সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: কদিন আগেই ঐহিকা মুখোপাধ্যায় অর্জুন পুরস্কার পেয়েছেন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাত থেকে পুরস্কার নেওয়ার ছবি এখন ভাইরাল। সুতীর্থা এবং ঐহিকা আন্তর্জাতিক আঙিনা থেকে ভারতের জন্যে অনেক সম্মানও এনেছেন। কিন্তু তাঁদের খেতাব কিংবা সম্মান অর্জনের পিছনে যার অবদান সবচেয়ে বেশি, তিনি যেন আড়ালেই থেকে গিয়েছেন। ক"জন জানেন নৈহাটির মিহির ঘোষ টেবিল টেনিস অ্যাকাডেমির প্ৰশিক্ষক মিহির ঘোষকে? ঐহিকা এবং সুতীর্থা তৈরি এই মিহির ঘোষের হাতেই। মিহির ঘোষ টিটি অ্যাকাডেমিতেই তাঁদের পল্লবিত হওয়া। কিন্তু এরকম কতজনই তো থাকেন নেপথ্যের কুশীলব। ছাত্র-ছাত্রীদের সাফল্যে যাদের চোখে আনন্দশ্রু বয়ে যায়। তাহলে এরমধ্যে মিহির ঘোষ ব্যতিক্রমী কেন? কারণ নিজের উপার্জিত প্রভিডেন্ট ফান্ডের ৭৭ লক্ষ টাকা দিয়ে তিনি গড়েছেন এই স্বপ্নের টেবিল টেনিস অ্যাকাডেমি। সেই বিপুল টাকায়ও হয়নি, এই অ্যাকাডেমির শিক্ষার্থীদের বাবা-মা তুলে দিয়েছেন ৭ লক্ষ টাকা। কিন্তু অ্যাকাডেমি গড়ার ব্যয় যে কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। কুছ পরোয়া নেই। ব্যাংক থেকে লোন নিলেন মিহির ঘোষ। সেই টাকাও এই তিন বছরে শোধ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এতবড় ঝুঁকি! জীবনের সব সঞ্চয় টেবিল টেনিসকে দিয়ে দিলেন? মিহির ঘোষ বলেন, "এই খেলা আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। চাকরি দিয়েছে, সামাজিক প্রতিষ্ঠা দিয়েছে, এই খেলাকে ফিরিয়ে দেব না?" মিহির ঘোষের স্ত্রী আল্পনা ঘোষ, একদা আল্পনা চন্দ বাংলার টেবিল টেনিস খেলোয়াড় ছিলেন। বর্তমানে ইন্ডিয়া মেট্রো রেলের কর্মী। দুই পুত্রের একজন অর্জুন ঘোষ টেবিল টেনিস খেলেন। স্ত্রী এবং ছেলেরা সবাই টেবিল টেনিস নিবেদিত প্রাণ। তাই পরিবারের দিক থেকে কোনও আপত্তি ওঠেনি। মিহির ঘোষ বিটিটিএর টেবিল টেনিস স্কুলের প্রথম ব্যাচ। তিনি বলেন, "পূর্ববঙ্গে একশো দেড়শো বিঘা জমি ছিল, পুকুরভরা মাছ ছিল। রিফিউজি তকমা নিয়ে এদেশে আসা। আমার স্কুলে পড়ার সামর্থও ছিল না। বাংলার কিংবদন্তি টেবিল টেনিস কোচ সরোজ ঘোষ আমার খেলা দেখে মুগ্ধ হয়ে টিটি কর্তা গোপীনাথ ঘোষকে বলেন। এরপর গোপীদা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। আমি স্কুলে ভর্তি হই। আমি ঈশ্বর বিশ্বাসী। জীবনে এমন কিছু করে যেতে চাই যাতে মানুষ উপকৃত হয়। তাই এই প্রয়াস। জীবনে দাগ রেখে যাওয়া প্রয়োজন।" টেবিল টেনিসে আরও ঐহিকা, সুতীর্থা তৈরি করতে চান মিহির ঘোষ। জীবনের সর্বস্ব দিয়ে সমুদ্রে সজ্জা পেতেছেন, শিশিরে তাঁর কি ভয়! 
  • Link to this news (আজকাল)