রক্ত থাকতে দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক ভাঙতে দেব না, রেলের ফরমানে সাফ কথা মমতার
২৪ ঘন্টা | ১৬ জানুয়ারি ২০২৪
সুতপা সেন: রাজ্যের সঙ্গে ফের সংঘাতে রেল। মেট্রো রেলের সম্প্রসারণের জন্য দক্ষিণেশ্বরে স্কাইওয়াক ভেঙে ফেলতে বলেছে রেল। এর ফলে বিপাকে রাজ্য সরকার। দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক তৈরি ফলে একদিকে যেমন যানজট কমেছে অন্যদিকে তেমনি মন্দিরযাত্রীরা বিনা ঝামেলায় মন্দিরের যেতে পারছেন। সেই জায়গা ধাক্কা লাগছে রেলের সিদ্ধান্তে। কিন্তু রেলের ওই ফরমান মানতে নারাজ রাজ্য সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফ কখা, আমার রক্ত থাকতে স্কাইওয়াক ভাঙতে দেব না।
মঙ্গলবার ওই স্কাইওয়াক ভাঙার ফরমান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রেল বলেছে স্কাইওয়াক ভেঙে ফেলতে হবে। চিঠি দিয়ে জানিয়েছে। ধর্মস্থান নিয়ে এরা বড় বড় কথা বলে। ওরা বলে আমি নাকি দুর্গাপুজো করতে দিই না, সরস্বতী পুজো করতে দিই না। আমার রক্ত থাকতে দক্ষিণশ্বরের স্কাইওয়াক ভাঙতে দেব না। অনেক কষ্ঠ করে, আটটা থেকে দশটা মিটিং করে, এমনকি মামলা পর্যন্ত করে স্কাইওয়াক করা হয়েছে। ওখানে অনেক হকার ছিল। তাদের বুঝিয়ে, তাদের অন্য জায়গায় স্থান দিয়ে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের যানজট কমিয়েছি। হাজার হাজার, লাখ লাখ পুণ্যার্থী আসে ওখানে। এটা আমার হৃদয়ে এক মণিমুক্তোর মতো। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে তৈরি হয়েছিল দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক। এর ফলে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন বহু মন্দিরযাত্রী। এখন রেল বলছে মেট্রোরেলের সম্প্রসারণের জন্য় অতিরিক্ত জমি দরকার। কিন্তু রাজ্য সরকার একে একেবারেই নারাজ। রেলকে চিঠি দিয়ে রাজ্য় সরকার জানিয়েছে কোনও অবস্থাতেই স্কাইওয়াক ভাঙা হবে না। এরকম কোনও সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকার নিচ্ছে না। একইসঙ্গে এটাও বলে দেওয়া হয়েছে দক্ষিণেশ্বরে আরও জমি পড়ে রয়েছে। সেই জমি নিতে পারে রেল।অন্যদিকে, আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সের জমিও চেয়েছে রেল। জোকা মেট্রো সম্প্রসারণের জন্য ওই জমি চাই বলে রাজ্যকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে রেল। ওই জমি দেওয়ার ক্ষেত্রেও নারাজ রাজ্য সরকার। রেলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বডিগার্ড লাইন্সের পাশেই অন্য জমি রয়েছে, বিশেষ করে ডিফেন্সের জমি রয়েছে। প্রয়োজনে সেই জমি নিক রেল। অর্থাত্ দক্ষিণেশ্বর ও আলিপুর বডিগার্ড লাইন্স-দুটি ক্ষেত্রেই যে জমি দেওয়া সম্ভব নয় তা জানিয়ে দিল রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকার রেলের ওই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ বলেই জানা যাচ্ছে। কারণ দক্ষিণেশ্বরে স্কাইওয়াক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস। তা কেন ভাঙ্গার কথা বলছে তা জেনেই ক্ষুব্ধ রাজ্য।রাম মন্দিরের কথা সরাসরি না বলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা সাধুসন্তদের কাজ, পুরোহিতদের কাজ। আমাদের কাজ পরিকাঠামো তৈরি করে দেওয়া। রেলমন্ত্রী যখন ছিলাম তখন মেট্রো ইস্ট ওয়েস্ট হচ্ছিল না। কারণ ওদের প্ল্য়ান ছিল ডালহৌসির উপর দিয়ে, বড়বাজারের উপর দিয়ে যাবে। আমি ওইসব এলাকায় বুলডোজার চালাতে নারাজ। দমদম থেকে গড়িয়া আমার করা। নোয়াপাড়া দমদম আমার করা। এখন বলছে বেহালা মেট্রো সম্প্রসারণ তখনই করব যখন আলিপুর বডিগাডলাইন্স ভাঙা হবে। কেন ভাঙব? বডিগার্ড পুলিসের একটি হেরিটেজ। কয়েক কোটি টাকা খরচ করে সেখানকার জল সরানো হয়েছে। পাশেই তো ডিফেন্সের জায়গা রয়েছে। ওরা তো কাউকে একটু জায়গা দেয় না। প্রেসক্লাব করতে গেলেও মাথায় ছাদ লাগাতে দেয় না। একসময় তারাতলায় কাজ করতে গিয়ে সমস্যা হয়েছিল। তা সমাধান করে দিয়েছিলাম। বডিগার্ড লাইন ভাঙতে দেব না।