সন্দেশখালিকাণ্ডে যৌথ তদন্তে CBI ও রাজ্য পুলিস, সিট গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের....
২৪ ঘন্টা | ১৭ জানুয়ারি ২০২৪
অর্ণবাংশু নিয়োগী: 'সিবিআই ও রাজ্য পুলিস যৌথভাবে তদন্ত করবে'। সন্দেশখালিকাণ্ডে সিট বা বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। তদন্তে হাইকোর্ট নজরদারি করবে। আদালতের নির্দেশ, 'ন্যাজাট থানার পুলিস এই তদন্তের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবে না। যাঁরা এখন তদন্ত করছেন, তাঁরা সমস্ত তথ্য তুলে দেবেন সিটের হাতে। আদালতের নির্দেশ ছাড়া চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করা যাবে না'।
১২ দিন পার। সন্দেশখালিকাণ্ডে এখনও ফেরার মূল অভিযুক্ত শেখ শাহাজাহান। হাইকোর্টে ইডি-র তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, রাজ্য় পুলিসের উপর তাদের আস্থা নেই। এমনকী, তথ্য বিকৃতির আশঙ্কাও প্রকাশ করছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী। আর্জি ছিল, 'সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক'। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।কী প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক মহলে? রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'এই রাজ্য় পুলিসের উপরে কোনও ভরসা আছে, বিশ্বাসযোগ্যতা আছে!
ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্ত করছে সিবিআই। কী কাজ করেছে রাজ্য় পুলিস? প্রমাণ লোপাট করেছে। বিভিন্ন লোককে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করেছে। আর যেখানে তল্লাশি হবে, আগাম তাদের কাছে খবর পৌঁছে দিয়েছে। এই পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে সিবিআই তদন্ত করবে! আর সেই তদন্তের ফলে শাহাজাহান বেরিয়ে চলে আসবে, এটা ভাবার কোনও কারণ নেই'।শমীকের আরও বক্তব্য, 'সকলেই জানে,শাহাজাহান স্বক্ষেত্রে বিচরণ করছে, পুলিস চাইলে আদালতের প্রয়োজন ছিল না। কবেই শাহাজাহানকে গ্রেফতার করতে পারত, কিন্তু করবে না। তদন্ত কতটা হবে মানুষের মনেও প্রশ্ন আছে, আমাদের মনেও প্রশ্ন আছে'।সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, সন্দেশখালিকাণ্ডে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা রাজ্য প্রশাসন ও পুলিস করছে, এটা খুবই বিপজ্জনক। সেক্ষেত্রে আদালত শেষপর্যন্ত সিটের কথা বলেছে। রাজ্য প্রশাসনের সিট হয়, সচরাচর আমরা দেখেছি। তা করতে দেয়নি, তার সঙ্গে সিবিআই যুক্ত করেছে। যদিও রাজ্য পুলিস ও সিবিআই লাগিয়েও কতটা কি লাভ হবে, বলতে পারব না। কারণ প্রশাসনের মনোভাব যদি নেতিবাচক হয়, সব জেনে শুনে ঘেরাটোপের মধ্যে শাহাজাহানদের রেখে দেয়, তাহলে আঘাত করাটা সহজ নয়'।এদিকে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের পাল্টা দাবি, 'শাহাজাহানকে যদি তর্কে খাতিরে ধরা যায়... শুধু রাজ্য সরকারকে দোষ দেওয়া হচ্ছে কেন! পুলিস যেমন খুঁজছে, সিবিআই, ইডি, এনআইএ, বিএসএফ, সেন্ট্রাল আইবি সবাই কো খুঁজছে। তাহলে শুধু রাজ্য পুলিসের উপর দোষ আসছে কেন? যদি না পাওয়া যায়'।ঘটনাটি ঠিক কী? রাজ্যের রেশন দুর্নীতির শিকড়ে খোঁজে ইডি। গত ৫ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি তৃণমূল নেতা শাহাজাহান শেখের বাড়িতে তল্লাশি করতে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারীর সংস্থার আধিকারিকরা। কিন্তু বাড়ি তখন তালাবন্ধ ছিল। অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পরেও কারও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। এরপর তালা ভাঙা চেষ্টা করেন ইডি-র আধিকারিকরা, তখন আচমকাই শুরু হয় বিক্ষোভ। ইডি আধিকারিকদের লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি করেন বিক্ষোভকারীরা। রাতে পুলিসে খুনের উদ্দেশ্যে হামলার অভিযোগ দায়ের করে ইডি।