বীরেন ভট্টাচার্য, নয়া দিল্লি:সীমান্ত সমস্যা নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে একদিকে যখন কূটনৈতিক ও সামরিক পর্যায়ে আলোচনা চলছিল, সেই সময় একাধিকবার পূর্ব লাদাখে ভারতীয় ভুখণ্ড দখল করার চেষ্টা করেছে চীন। সম্প্রতি সপ্তাহান্তে সেনা বাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে এই তথ্য সামনে এসেছে। সেই অনুষ্ঠানে গালোয়ানে ভারতীয় সেনা বাহিনীর বীরত্ব এবং সাহসিকতা তুলে ধরা হয়। সেখান থেকেই জানা গিয়েছে যে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর এবং ২০২২ সালের নভেম্বরে পূর্ব লাদাখে ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করার চেষ্টা করেছিল চীন সেনা।২০২০ সাল থেকেই ভারত ও চীনা সেনার সংঘাত অব্যাহত। চীনা সেনার দুবারের প্রচেষ্টার খবর সামনে আসতেই সেনাবাহিনীর অনুষ্ঠানের ভিডিও ইউটিউব থেকে মুছে দিয়েছে বাহিনী। বিগত কয়েকদিনে সেনা জওয়ানকে সাহসিকতার পুরষ্কার দেওয়ার অনুষ্ঠান করেছে সেনাবাহিনী। একজন মেজর পদমর্যাদার সেনা আধিকারিক শত্রুপক্ষের গতিবিধির লাইভ তথ্য দিচ্ছিলেন সিকিমের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে। তারজন্য তাঁকে সেনা বাহিনীর গ্যালান্ট্রি পুরস্কার দেওয়া হয়। সেই অনুষ্ঠানে বলা হয়, উচুঁ জায়গা এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ধারাবাহিকভাবে শত্রু শিবিরের খবর দিয়েছেন সেনা আধিকারিক। মূলত ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর এবং ২০২২ সালের নভেম্বরের অপারেশন নিয়েই সাহসিকতার পুরস্কার দেওয়ার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। আরেকটি অনুষ্ঠান থেকে জানা গিয়েছে, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে শঙ্কর টেক্রি এলাকায় এবং সেবছরেরই নভেম্বরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে আটারি পোষ্ট দখল করার চেষ্টা করে চীনের গণফৌজ। ২০২০ সালের জুনে চীনে সেনার অতর্কিত আক্রমণে গালোয়ানে ভারতীয় সেনা বাহিনীর ২০ জন জওয়ান প্রাণ হারান। তার আগে পূর্ব লাদাখ এবং সিকিমের সীমান্ত লাগোয়া বিভিন্ন এলাকায় দুই দেশের মধ্যে সামরিক টানাপোড়েন চলছিল। তবে সেই ঘটনা শেষ নয়, আগস্ট-সেপ্টেম্বরে প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণ তীরবর্তী এলাকায় গুলি বিনিময় হয়। যদিও সেই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। তবে ১৯৭৫ সালের পর সেই প্রথম প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবার গুলি বিনিময় হয়।২০২০ সালের আগস্টের পর থেকে চীনা সেনা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে ভারতীয় সেনা বাহিনী। তার আগে লাগাতার ভারতীয় ভুখণ্ড দখলের চেষ্টা করে গণফৌজ। মাত্র কয়েকশো মিটার ব্যবধানে দুই দেশের ট্যাঙ্ক মোতায়েন হয়। ফলে ইন্দো-চীন সীমান্ত সংঘাত ক্রমশ গরম হতে থাকে। গত সপ্তাহে সেনা প্রধান মনোজ পাণ্ডে বলেন, দুই দেশের সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল তবে স্পর্শকাতর। তিনি বলেন, "দুই দেশের মধ্যে যে ভারসাম্যের অভাব রয়েছে, আমরা লাগাতার আলোচনার মাধ্যমে সেই সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি।"