তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় নাজেহাল চাষিরা, মাঠেই নষ্ট হচ্ছে আলু
২৪ ঘন্টা | ১৮ জানুয়ারি ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। এই শীতের দাপুটে ইনিংসের প্রভাব পড়ছে কৃষি ক্ষেত্রেও। নষ্ট হচ্ছে কৃষকের শিম, করলা, আলু, শাকসবজি সহ বিভিন্ন ফসল। শীত আর কুয়াশার যুগলবন্দিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত আলু চাষ। শৈত্যপ্রবাহের ফলে কোল্ড ইনজুরি এবং আলুর লেটব্লাস্টইট রোগে আক্রান্ত হওয়ার দুশ্চিন্তায় কৃষকেরা।অতিরিক্ত শীতের কারণে এবং পর্যাপ্ত রোদের অভাবে বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক নাশক ছিটিয়েও তেমন ফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকার আলু চাষীরা। চিন্তায় কৃষি দফতরও। বিভিন্ন ব্লকে ব্লকে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ কৃষি দফতরের।
আলু চাষী ধীরেন সরকারের মতে, ‘শীতে বিশেষ করে কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় আলুর মড়ক দেখা দেয়’।আলুগাছ সেভাবে ঠাণ্ডা সহ্য করতে পারে না। তাই কুয়াশা পড়লে আমাদের চিন্তা বাড়ে। গত কয়েক দিনের ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে আলু চাষিদের অবস্থা শোচনীয়। বিঘার পর বিঘা জমির আলুর পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে।মড়ক নামের এই পচন রোগ থেকে বাঁচতে জমিতে কীটনাশক ছিটিয়েও খুব একটা লাভ হচ্ছে না। এছাড়াও শহর এবং জেলার কৃষি বিভাগের এডিও-রাও সেভাবে তাদের সহযোগিতা করছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।কয়েক দিন যাবৎ জলপাইগুড়ি এবং আশেপাশের অঞ্চলে শীতের তীব্রতা বেশ বেড়েছে। দিনের বড় অংশই কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকছে। জলপাইগুড়ি জেলার এবার প্রায় ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ কোনও কোনও জায়গায় আলুর চারা হলুদ হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে ঝলসানো রোগও দেখা দিয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ১০-১৫ দিন বয়সি চারাগুলো সাদা ও লালচে রং হয়ে মারা যাচ্ছে।আলু চাষী বিজয় দাসের যুক্তি, ‘আমরা প্রতিবছর শীতের আগ দিয়ে বা শীতের সময় আলু বীজ বপন করি। কিন্তু এই বছর শৈতপ্রবাহ এবং ঘন কুয়াশার কারণে আলুর চাষ করা মুশকিল হয়ে উঠেছে। প্রচুর সার প্রয়োগ করেও ফলন বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না। কৃষি বিভাগের সহযোগিতাও সেভাবে পায়নি। কী করব বুঝতে পারছি না’।শীত, কুয়াশা এবং আলুর উৎপাদনে সমস্যা নিয়ে অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট অফিসার এগ্রিকালচার (Admn) বৃন্দাবন চন্দ্র রায় জানান, ‘জেলায় ৩৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। কুয়াশার সময় কিভাবে আলু রক্ষা করা যায় তা নিয়ে আমাদের যে এডভাইজেরি এসেছে আমরা সেটা প্রতি ব্লকে জানিয়ে দিয়েছি। আমাদের এডিও এবং ফিল্ড অফিসাররা চাষীদের সঙ্গে কথা বলে সকলকে তা জানান দেওয়ার কাজ করছেন। আমরা বিভিন্ন রকমের পেস্টিসাইড এবং সার প্রয়োগ করার গাইডলাইন ওনাদের দিচ্ছি। আশাকরি এতে চাষীদের উপকার হবে’।