আমাদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করা হত, সেটা বদলাতে পেরেছি: কুয়াদ্রাত ...
আজকাল | ২০ জানুয়ারি ২০২৪
সম্পূর্ণা চক্রবর্তী, ভুবনেশ্বরসমর্থকদের কাঁধে চেপে স্টেডিয়াম থেকে বাস পর্যন্ত পৌঁছলেন কার্লেস কুয়াদ্রাত। তার আগে স্প্যানিশ কোচকে আলিঙ্গন করে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকারের। এক মরশুমে জোড়া ডার্বি জয়। লাল হলুদের ইতিহাসে শেষ করবে এটা ঘটেছে জানতে পরিসংখ্যান ঘাটতে হবে। স্বভাবতই "ক্লাউড নাইন" এ ইস্টবেঙ্গল কোচ, ফুটবলার, কর্তা থেকে সমর্থক। একটা দীর্ঘ সময় তাচ্ছিল্য করা হত ইস্টবেঙ্গলকে। ডার্বিতে টানা হার নিয়ে হাসি-ঠাট্টা হত। চলতি মরশুমে তিন ডার্বির মধ্যে জোড়া ডার্বি জয় এবার সেই ধারণা পাল্টাবে। এটাই সবচেয়ে তৃপ্তি দিচ্ছে ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচকে। কার্লেস কুয়াদ্রাত বলেন, "আমরা একটা আলাদা পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম। সময়টা খারাপ যাচ্ছিল। সেখানে ডার্বি জেতা খুবই জরুরি ছিল। ডুরান্ড ডার্বির আগে শুনেছিলাম মোহনবাগান আমাদের ৫-০ গোলে হারাবে। তাই সেই ডার্বি জয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই জয়ের গুরুত্বও অপরিসীম। সবাই আমাদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করত। কেউ ধর্তব্যের মধ্যেই ধরত না। ভাবতেই পারত না আমরাও ডার্বি জিততে পারি। আমাদের নিয়ে প্রচুর মন্তব্য করা হত। প্রতিপক্ষ আমাদের নিয়ে হাসাহাসি করত। এবার আশা করি সেই ধারণা বদলাবে। এই জয়টা সমর্থকদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। ধারা বদলের অঙ্গ হতে পেরে ভাল লাগছে।" শুরুতে এক গোলে পিছিয়ে পড়ে ৩-১ এ ডার্বি জয়। সচরাচর হয় না। ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট কোনটা? কুয়াদ্রাত বলেন, "আমরা ক্রমাগত সুযোগ তৈরি করছিলাম। সেট পিসে প্রথমে মোহনবাগান গোল করে। কিন্তু আমরা হাল ছাড়িনি। আক্রমণ বাড়াই। জানতাম এক গোলের মার্জিন কিছুই নয়। ছেলেদের আক্রমণ চালিয়ে যেতে বলি। প্রথমার্ধেই সমতা ফেরানোর লক্ষ্য ছিল। আমরা প্রচুর সুযোগ তৈরি করেছি। ওরা পেনাল্টি, ফ্রিকিক মিস করেছে। মোহনবাগান শক্তিশালী দল। তবে জানতাম ক্রমাগত আক্রমণ করে যেতে পারলে গোল আসবেই। এটাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।" সুপার কাপের তিন ম্যাচেই রক্ষণ সংগঠনে নজর কেড়েছেন কুয়াদ্রাত। কোচের মান রেখেছেন হিজাজিও। ডিফেন্ডারদের প্রশংসা করেন লাল হলুদ কোচ। একইসঙ্গে ক্লেইটন, বোরহাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কুয়াদ্রাত। তিনি বলেন, "ক্লেইটন আদর্শ ক্যাপ্টেন। স্মার্ট, বুদ্ধিসম্পন্ন স্ট্রাইকার। ক্রমাগত গোলের চেষ্টা করে। বক্সের মধ্যে সুযোগের সন্ধানে থাকে। আগের ম্যাচে গোল না পেলেও বারবার উঠে এসে বিপক্ষকে বিপদে ফেলছিল। ও এমন একজন প্লেয়ার যে যেকোনও মুহূর্তে ম্যাচের রং বদলে দিতে পারে। ওর পারফরম্যান্স আমি ভীষণই খুশি। বোরহাও নিজের সেরা ম্যাচ খেলেছে। আমরা জানতাম কোথায় ফাঁকা জায়গা আছে, সেটাই কাজে লাগিয়েছি।" ডুরান্ডের গ্রুপ পর্বে জয়ের পর ফাইনালে হারতে হয়েছিল। এদিনের ডার্বি জয়কে তার বদলা হিসেবে দেখছেন না। সুপার কাপের সবচেয়ে কঠিন ম্যাচ খেলে ফেলেছে ইস্টবেঙ্গল। তাহলে কি ট্রফির গন্ধ পেতে শুরু করেছেন লাল হলুদের স্প্যানিশ কোচ। কুয়াদ্রাত বলেন, "একেবারেই না। আমরা এখনও অনেক দূরে আছি। দুটো ৯০ মিনিট পার করতে হবে। এই মুহূর্তে ট্রফির গন্ধ পাওয়ার মতো জায়গায় আমরা যাইনি। আপাতত একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার প্রস্তুতি শুরু হবে।" ইস্টবেঙ্গলের আইএসএলের ইতিহাসে তো বটেই, সম্প্রতি লাল হলুদের সেরা কোচ কুয়াদ্রাত। তাঁর জাদুকাঠির ছোঁয়ায় বদলে গিয়েছে ডার্বির ধারা। এবার ট্রফি জয়ের স্বপ্ন খুব দূরে নেই।