• ক্লেইটনের জোড়া গোল, ডার্বি জিতে সুপার কাপের শেষ চারে ইস্টবেঙ্গল...
    আজকাল | ২০ জানুয়ারি ২০২৪
  • ইস্টবেঙ্গল - ৩ (ক্লেইটন-২, নন্দকুমার)মোহনবাগান - ১ (ইউস্তে)সম্পূর্ণা চক্রবর্তী, ভুবনেশ্বরক্লেইটন‌ সিলভা। শুক্র সন্ধের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে গর্জে উঠল একটাই নাম। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারের জোড়া গোলে মোহনবাগানকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সুপার কাপের সেমিফাইনালে ইস্টবেঙ্গল। চিত্রনাট্য একাই পাল্টে দিলেন ক্লেইটন। এক পয়েন্ট পেলেই শেষ চারের ছাড়পত্র মিলত। কিন্তু তিন গোলে ডার্বি জিতল ইস্টবেঙ্গল। লাল হলুদ জার্সিতে ডার্বিতে প্রথম গোল। আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, ডার্বি গোলের জন্য কতটা মরিয়া তিনি। এদিন জোড়া গোল করে সুপার কাপে বাগানের যাত্রা একাই শেষ করে দিলেন ক্লেইটন।‌ প্রথমার্ধ ১-১। দ্বিতীয়ার্ধে ইস্টবেঙ্গলের আরও দু"গোল। সেই বাগান রক্ষণের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে বাজিমাত লাল হলুদের। তাও আবার এক গোলে পিছিয়ে পড়ে। মাস্টার ট্যাকটিশিয়ান কার্লেস কুয়াদ্রাতের দৌলতে। ডার্বির সাক্ষী থাকলে সাড়ে ছ"হাজার ফুটবলপ্রেমী। কিন্তু নব্বই মিনিটের শেষে কলিঙ্গ স্টেডিয়ামের রং লাল হলুদ। জয়ের দুই কারিগর যদি ক্লেইটন সিলভা এবং কার্লেস কুয়াদ্রাত হন, রাজ বাসফোরকে তুলে রবি বাহাদুর রানাকে নামানো বড় ভুল ক্লিফোর্ডের। দুই কোচের কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত পার্থক্য গড়ে দেয়। শেষদিকে পাঁচ গোলের আতঙ্কও তৈরি হয়েছিল। যেভাবে আক্রমণ শানাচ্ছিল লাল হলুদ, ব্যবধান। আরও বাড়তে পারত। প্রথম একাদশেই চমক ছিল মোহনবাগানের। জেসন কামিন্সকে ছাড়াই ৪-৫-১ ফরমেশনে দল সাজান হাবাস। অন্যদিকে শুরুতেই ছয় বিদেশিকে নামিয়ে দেন কার্লেস কুয়াদ্রাত। সেমিফাইনালের ছাড়পত্র পেতে লাল হলুদের প্রয়োজন ছিল ড্র। কিন্তু তিন পয়েন্টের লক্ষ্যে প্রথম থেকেই ক্লেইটনের সঙ্গে সিভেরিওকে জুড়ে দেন লাল হলুদের স্প্যানিশ কোচ। অন্যদিকে সামনে একা দিমিত্রিকে রেখে দল সাজায় বাগান। প্রথম একাদশের মোট ন"জন প্লেয়ার ছাড়াই নামে মোহনবাগান। কিন্তু শুরুতে সবুজ মেরুনের একটা ঝাঁঝ ছিল। গতি দিয়ে বেশ কয়েকবার বিপক্ষের বক্সে ঢুকেও পড়েন কিয়ান নাসিরি। ম্যাচের ৩ মিনিটে জুনিয়র নাসিরির পাস থেকে সাদিকুর গোল অফসাইডের জন্য বাতিল হয়ে যায়। ম্যাচের ১৯ মিনিটে এগিয়ে যায় মোহনবাগান। পেত্রাতোসের কর্নার থেকে ব্যাক ফ্লিকে দারুণ গোল করেন হেক্টর ইউস্তে। অবশ্য বেশিক্ষণ লিড ধরে রাখতে পারেনি বাগান। ২৪ মিনিটে ১-১ করেন ক্লেইটন সিলভা। নিশু কুমারের লং থ্রো হেড করে নামিয়ে দেন হেক্টর। সৌভিকের পা ছুঁয়ে বল পায় ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। বক্সের মাথা থেকে গোল ক্লেইটনের। সমতা ফেরানোর পর ম্যাচটা ধরে নেয় ইস্টবেঙ্গল। নিজেদের মধ্যে ছোট ছোট পাস খেলে গোলমুখ খোলার চেষ্টা করে। ৩৩ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ এসেছিল। কিন্তু ফাঁকা গোল মিস করেন নন্দকুমার। প্রথমার্ধ ১-১ গোলে শেষ হয়। দ্বিতীয়ার্ধ পুরো একতরফা। পুরো মাঝমাঠের দখল নিয়ে দেয় ইস্টবেঙ্গল। বোরহা দুর্দান্ত। ক্রেসপোর সঙ্গে জুটি বেঁধে বাগানকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়। মোহনবাগানের মাঝমাঠ বলে কিছু ছিল না। এখানেই টেক্কা দেয় লাল হলুদ। তবে বিরতির পরই আবার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল সবুজ মেরুনের সামনে। কিন্তু পেনাল্টি মিস করেন দিমিত্রি। এটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। কিয়ানের শট বক্সের মধ্যে হিজাজির হাতে লাগে। পেনাল্টি দেন রেফারি। স্পট কিক থেকে গোল করেন দিমিত্রি। কিন্তু সেই সময় হুগো বুমোসের পা লাইনের মধ্যে ঢুকে যাওয়ায় পেনাল্টি বাতিল হয়ে যায়। দিমিত্রির দ্বিতীয় শট পোস্টে লাগে। ফিরতি বলে সাদিকুর হেড বক্সের ওপর দিয়ে ভেসে যায়। এরপর পুরোপুরি ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায় বাগান। ম্যাচের ৬২ মিনিটে ২-১ করেন নন্দকুমার। বোরহার শট পোস্টে লাগে। ফিরতি বলে বাঁ পায়ের আলতো টোকায় গোলে‌ রাখেন নন্দকুমার। ডুরান্ড কাপের প্রথম ডার্বিতে গোল করে রাতারাতি হিরো হয়ে গিয়েছিলেন। ডার্বিতে নিজের দ্বিতীয় গোল তুলে নিলেন নন্দ। ম্যাচের ৮০ মিনিটে জয় নিশ্চিত করে লাল হলুদ। পরিবর্ত ফুটবলার রবি বাহাদুরের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে ক্রস তোলেন বোরহা। হিজাজির হেড তালুবন্দি করতে পারেননি অর্শ আনোয়ার। সুযোগ সন্ধানী ক্লেইটন‌ কোনও ভুল করেনি। রাজ বাসফোরের জায়গায় রবি বাহাদুরকে নামানোও বড় ভুল। 
  • Link to this news (আজকাল)