প্রায় দেড় বছর ধরে তাঁতে বুনেছেন 'রামায়ণ', নিয়ে যাচ্ছেন অযোধ্যা...
২৪ ঘন্টা | ২০ জানুয়ারি ২০২৪
বিশ্বজিৎ মিত্র: সারা দেশ রামমন্দির নিয়ে উজ্জীবিত। তবে ইচ্ছে থাকলেও সকলে রামমন্দির উদ্বোধনে হাজির থাকতে পারছেন না। যাঁদের কাছে রামমন্দির কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণ আছে একমাত্র তাঁরাই আগামী ২২ জানুয়ারি থাকতে পারছেন রামমন্দিরে। তবে, ভক্ত কি আর ভগবানের থেকে দূরে থাকতে পারেন? ভক্তেরা তাঁদের নিজের নিজের উপচার নিয়ে ঠিকই পৌঁছে যাচ্ছেন প্রভু রামের চরণতলে। যেমন যাচ্ছেন তাঁতশিল্পী পিকুল রায়।
কে এই পিকুল রায়? নদিয়ার রানাঘাট থানার হবিবপুরের রাঘবপুর মাঠপাড়ার বাসিন্দা হস্তচালিত তাঁতশিল্পী পিকুল রায়। কী নিয়ে যাচ্ছেন তিনি? পিকুল প্রায় দেড় বছর ধরে বহু পরিশ্রমে তৈরি করেছেন এক শাড়ি। যার নাম দিয়েছেন-- 'রামায়ণ' শাড়ি। সেই শাড়ি নিয়েই স্বয়ং শিল্পী নিজেই চললেন অযোধ্যায়। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সিল্কের সুতোয় সূক্ষ্ম কাজের মাধ্যমে বহু অধ্যবসায়ে তিনি তাঁতে বুনেছেন আস্ত এই 'রামায়ণ'।বোঝাই যাচ্ছে, রামের অনুষঙ্গ রয়েছে তাঁর এই সৃষ্টিতে। শাড়িতে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন রামের বনবাস থেকে রাম-রাবণের যুদ্ধ হয়ে অযোধ্যায় ফিরে রামের অভিষেক পর্যন্ত ঘটনাবলি। অসাধারণ শিল্পনৈপুণ্য ফুটে উঠেছে তাঁর এই শাড়িতে, যা বাংলার হস্তচালিত তাঁতশিল্পের এক অনন্য নিদর্শনও। শাড়িটি দেখার পরে বহু মানুষ সেটি কিনতে চাইলেও পিকুল এটি বিক্রি করতে নারাজ। তাঁর ইচ্ছা আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় সশরীরে উপস্থিত থেকে রামমন্দিরকে উপহার হিসেবে শাড়িটি দেবেন তিনি। তিনি চান, এত বড় কর্মযজ্ঞে বাংলার উপহার হিসেবেই শাড়িটি প্রদর্শিত হোক অযোধ্যার রামমন্দিরে। এই বাসনা নিয়েই তিনি এবং তাঁর দাদা অনন্ত অযোধ্যা যাওয়ার জন্য রওনা হলেন। ট্রেনের রিজার্ভেশন টিকিট পাননি তাঁরা। তবে দমে যাননি। রেলের জেনারেল কম্পার্টমেন্টেই উঠে বসেছেন তাঁরা আজ।প্রসঙ্গত, আগামী সোমবার, ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন হবে। ১৬ জানুয়ারি থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে রামমন্দিরের আচার-অনুষ্ঠান। সেদিন হয়েছে দশবিধ স্নান, বিষ্ণুপূজা, সরযূতীরে গোদান। ১৭ জানুয়ারি রামলালার মূর্তি নিয়ে শোভাযাত্রা অযোধ্যায় পৌঁছেছে। তাঁদের সঙ্গে ছিল সরযূর জলপূর্ণ কলস। ১৮ জানুয়ারি গণেশ পুজো দিয়ে প্রাণ প্রতিষ্ঠার মূল অংশের আচার হয়েছে। ছিল ব্রাহ্মণবরণ বা বাস্তুপূজার মতো অনুষ্ঠানও। ১৯ জানুয়ারি নবগ্রহ প্রতিষ্ঠা হয়েছে, হয়েছে বিশেষ হোম। আজ, ২০ জানুয়ারি সরযূর জলে মন্দির ধোয়া হবে, পরে হবে অন্নাধিবাস। আগামীকাল, ২১ জানুয়ারি রামলালাকে ১২৫ কলসজলে স্নান করানো হবে। ২২ জানুয়ারি দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট থেকে ১টা-র মধ্যে প্রাণ প্রতিষ্ঠার মূল অনুষ্ঠান শুরু।