• 'মনে হচ্ছে আমি স্বাধীন, আমার দেশ স্বাধীন', অযোধ্যায় এসে আপ্লুত ড. সুভাষ চন্দ্র
    ২৪ ঘন্টা | ২১ জানুয়ারি ২০২৪
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সোমবার অযোধ্যায় রামমন্দিরের রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা। সেই অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে অযোধ্যায় আসতে শুরু করেছেন অতিথিরা। সেই তালিকায় রয়েছেন এসেল গ্রুপ-এর চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন সাংসদ ড. সুভাষ চন্দ্র। আজ রাম কি পৌড়ি দর্শন করে ৪৫ বছর আগের স্মৃতি মন্থন করেন ড. চন্দ্র। পাশাপাশি বলেন, আমাদের সভ্যতা সহনশীলতার শিক্ষা দেয়। তাই এই সভ্যতা টিকে রয়েছে।

    জি নিউজকে ড. সুভাষ চন্দ্র বলেন,  প্রায় ৪৫ বছর পর অযোধ্যায় এলাম। সেইসম এক যুবক হিসেবে যখন এসেছিলাম তখন মনে একটা যন্ত্রণা ছিল। সেটি হল, রামায়ণ পড়ে, রামলীলা দেখে আমরা বড় হয়েছি, অযোধ্য়া সম্পর্কে বহু কথা শুনেছি। যে জায়গায় রামের জন্ম হয়েছিল সেটি একজন বিদেশি ভেঙে দিয়েছিল। এই কথাটা আমাদের মুসলিম ভাইদেরও বুঝতে হবে যে এখানে যে একসময় মন্দির ছিল তা যে ভেঙেছিল সে ভারতের মুসলিম ছিল না। সে ছিল বিদেশি, আততায়ী। মন্দির ভেঙে সে ওখানে মন্দির তৈরি করেছিল। মনে কষ্ট হতো। আমারা ভারতের নাগরিক। ১৯৪৭ সালে আমরা স্বাধীন হয়েছি। তাহলে আমরা যখন স্বাধীনতা পেলাম তখন তা কেন আমরা সংশোধন করব না। সেইসময় এই ওই কথার উত্তর পাইনি। ওই প্রশ্ন করেছিলাম আমার কিছু রাজনীতিকরা বন্ধুকেও। তারা বলেছিল, এসব রাজনীতি। তুমি বুঝবে না। সেই যন্ত্রণা নিয়ে অযোধ্যা থেকে গিয়েছিলাম।এসেল গ্রুপ প্রধান আরও বলেন, ২০২৪ সালের ২০ জানুয়ারি অযোধ্যায় ফের এসেছি। এখন মনে একটা আনন্দ হচ্ছে, একটা আবেগ কাজ করছে। এখন মনে হচ্ছে আমার দেশ স্বাধীন, আমি স্বাধীন। আমার দেশের মানুষ স্বাধীন। শ্রীরামও যখন রামরাজ্য চালাতেন তখন তাঁর সময়ে সবার কথা বলা অধিকার ছিল, সেইসম সবার স্বাধীনতা থাকলেও কেউ কাউকে কষ্ট দিত না। কিন্তু আজ থেকে ১৫ বছর আগে যে পরিবেশ আমারা দেখেছি তা খুবই কষ্টকর। সেইসময় স্বাধীনতার নামে যা কিছু বলে দেওয়া হতো। হয়তো অনেকে আমার উপরে অনেকে রাগ করবেন, ব্রিটিশ সরকারের সময়ে নেটে রামের মূর্তি ছিল। স্বাধীনতার পর তা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর কোনও ব্যাখ্যা নেই।রামমন্দির নিয়ে রাজনীতি প্রসঙ্গে ড. সুভাষ চন্দ্র বলেন, রাম মন্দির বিবাদের রাজনৈতিক সমাধানের চেষ্টা হয়েছে অনেকবার। রাজীব গান্ধী যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন তিনি রাম মন্দিরের তালা খোলেন। তাঁর একটা সদিচ্ছা ছিল মন্দির ফিরিয়ে দেওয়া হোক। এই জন্যই তালা খোলা হয়েছিল। দেশের বহু মানুষ রয়েছেন যারা চান না দেশটা খুশি থাকুক। তারা রাজীব গান্ধীকেও তার কাজ করতে দেননি। এটা বলতে হবে ঈশ্বরের কৃপায় মোদীজির হাত ধরে শেষপর্যন্ত রাম মন্দির হল। এই দেশের সংবিধান যখন তৈরি হয়েছিল তখন তাতে ধর্ম নিরপেক্ষ কথাটা ছিল না। যে দেশে সরকার ধর্মপরায়ণ না হবে সেখানে মানুষও ধর্মপরায়ণ হবে না। আপনি দেশকে ধর্মনিরপেক্ষ করে দিলেন। তার মানে আপনি ধর্ম মানতেই চান না। এই সরকার ধার্মিক সরকার। আমাদের এখানকার মানুষ  কখনও লড়াই করেনি। সব ধর্মের মানুষ যারা বাইরে থেকে এসেছিল তাদের গ্রহণ করেছিল। এখানকার মানুষকে ধর্মন্তর করে মুসলিম করা হয়েছে। আজ যদি কারও সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় তাহলে এখানকার মুসলিমদের হওয়া উচিত। কারণ তাদের পূর্বপুরুষদের মুসলিম করা হয়েছিল। কিন্তু হিন্দুর লড়াইয়ের রাস্তা নেয়নি। মুসলিমরা ধর্মস্থল ভেঙে দিলে হিন্দুরা হাত জোড় করে বসেছিল, ঠিক আছে আপনারা তো পুজোস্থল ভেঙে দিলেন, আমরা ঘরে তুলসী গাছ লাগিয়ে পুজো করে নেব। আমরা লড়াই করব না। এই জন্যই এই সভ্যতা বেঁচে আছে।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)