• রামের তিরের আঘাতে তৈরি হয়েছিল এই 'সীতাকুণ্ড', সেই বিশ্বাসে আজও ভিড় জমান ভক্তরা
    ২৪ ঘন্টা | ২২ জানুয়ারি ২০২৪
  • মনোরঞ্জন মিশ্র: বনবাসে থাকাকালীন পত্নি সীতার তৃষ্ণা নিবারণের জন্য পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের কোলের মাটিতে তীর মেরে মিষ্টি জলের বের করেছিলেন রামচন্দ্র। সেই জল খেয়ে তৃষ্ণা নিবারণ করেছিলেন সীতা। এমনটাই বিশ্বাস রয়েছে এলাকার মানুষের। আজও মাটির নীচের সেই সীতা কুণ্ড থেকে অনবরত মিষ্টি জলের স্রোত বেরিয়ে আসে। আর তা দেখতে আসেন বহু মানুষ। রাম মন্দিরের রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার আগে সীতাকুণ্ডে মানুষের যাতায়াত অনেকচাই বেড়ে গিয়েছে।

    পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের আনাচে কানাচে জড়িয়ে রয়েছে রাম, লক্ষণ ও সীতার বনবাসের কাহিনী। অযোধ্যা পাহাড়ে রয়েছে বিখ্যাত রাম মন্দিরও। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে পুরুলিয়ায় এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখেও শোনা গিয়েছিল পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের সীতাকুণ্ডের গল্প।কথিত আছে রাম, লক্ষণ এবং সীতা যখন বনবাসে বেরিয়েছিলেন সেই সময় পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের জঙ্গলে এসে উঠেছিলেন । পাহাড় ও ঘন জঙ্গলে ঘেরা এই অযোধ্যা পাহাড়ে প্রায় আড়াই দিনের জন্য বিশ্রামের নিয়েছিলেন রাম, লক্ষণ এবং সীতা। অযোধ্যা পাহাড়ে থাকাকালীন সীতা মায়ের তৃষ্ণা পেলে রাম এবং লক্ষণ পাহাড়ের চারিদিকে জলের খোঁজে বের হন। কিন্তু জল পাননি। তাই সীতা মায়ের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য অযোধ্যা পাহাড়ের অযোধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বাগান্ডি এলাকার পাহাড়ের কোলে রামচন্দ্র নিজের ধনুক থেকে তীর বিদ্ধ করেন । তার পরেই নাকি মাটির নীচ থেকে বেরিয়ে আসে মিষ্টি জলের স্রোত। সেই জল পান করে সীতা তৃষ্ণা নিবারণ করেন। সেই স্থানটি সীতাকুণ্ড নামে পরিচিত।এখনও সেই  সীতাকুণ্ড থেকে অনবরত মিষ্টি জলের স্রোত বেরিয়ে আসে। সেই জল অযোধ্যা পাহাড় বাসীর কাছে আজও পবিত্র। সেখানকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ শিকারে যাওয়ার আগে সেই স্থানের জল পান করে শিকারে যেতেন । হিন্দু ধর্মীয় মানুষদের কাছে তো বটেই আদিবাসী অধ্যুষিত মানুষদের কাছেও সেই স্থান অত্যন্ত পবিত্র। সকলের বিশ্বাস, সেই জল পান করলে শরীর ও মন পবিত্র থাকে।  তাই আজও ভক্তি ও নিষ্ঠার সঙ্গে সীতাকুণ্ডকে পুজো করে থাকেন অযোধ্যা পাহাড়বাসী।অযোধ্যা পাহাড়ে থাকাকালীন রাম, লক্ষণ এবং সীতা যে যে জায়গায় বিশ্রাম নিয়েছিলেন সেই স্থান গুলো আজও ইতিহাস বয়ে নিয়ে চলেছে। আর তাই অযোধ্যা পাহাড় বাসীরা, সীতাকুণ্ড থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে নিজেদের উদ্যোগে রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছেন । মন্দিরের ভেতরে রয়েছে রাম, লক্ষণ এবং সীতার মূর্তি। মন্দিরের দেওয়ালে দেওয়ালে ফুটিয়ে তোলা হয়েছেন রামায়ণের দৃশ্য। আজও জেলা ছাড়িয়ে ভিন জেলা থেকে আসা পর্যটক এবং ধর্মপ্রাণ মানুষেরা সীতাকুণ্ড এবং রাম মন্দির দর্শন করতে হাজির হন। নিত্য দিন পুজো হয় সেই মন্দিরে। অযোধ্যার রাম মন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার আগে তাই পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়েও এখন সাজো সাজো রব ।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)