• রাম মন্দিরের পর কী? অযোধ্যা থেকে দেশকে ১০ বার্তা মোদীর
    আজ তক | ২২ জানুয়ারি ২০২৪
  • 'রাম বিবাদ নয়, রাম সমাধান। রাম শুধু আমাদের নয়, রাম সবার। রাম বর্তমান নয়, রাম অনন্তকাল।' অযোধ্যার রাম মন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠার পর এই বার্তাই দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ১০ পয়েন্টে পড়ে নিন মোদীর ভাষণ-   

    ১।  আজ আমাদের রাম চলে এসেছেন। কয়েক যুগের অপেক্ষার অবসানের পর রাম এসে গিয়েছেন। কয়েক যুগের ধৈর্য, বলিদান ও তপস্যার পর আমাদের প্রভু রাম এসেছেন। এই শুভ মুহূর্তের আপনাদের সকলকে, দেশবাসীকে অভিনন্দন। আমি গর্ভগৃহে ঐশ্বরিক চেতনা অনুভব করেছি। কত কী বলার আছে, তবে কণ্ঠ অবরুদ্ধ হয়ে আসছে। এখনও আমার আবেগ ও চিত্ত ওই মুহূর্তে বিলীন হয়ে রয়েছে। 

    ২। আমাদের রামলালা তাঁবুতে আর থাকবেন না। আমাদের রামলালা এবার থেকে এই মন্দিরে থাকবেন। আমার বিশ্বাস, যা ঘটেছে তা অনুভব করতে পারছেন দেশ-বিশ্বের কোনায় কোনায় রামভক্তরা। ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারির এই সূর্য অনন্য আভা নিয়ে এসেছে। এটা শুধু ক্যালেন্ডারে লেখা কোনও তারিখ নয়। এটা নতুন কালচক্রের সূচনা।

    ৩। রাম মন্দিরের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর থেকে উৎসাহ বাড়ছিল গোটা দেশবাসীর। সেই ধৈর্যের ফল পেয়েছি। আজ আমরা শ্রী রামের মন্দির পেয়েছি। পরাধীনতার মানসিকতা ভেঙে মাথা উঁচু করে উঠছে গোটা দেশ। এভাবেই দেশ নবনির্মাণের সূচনা করেছে। 

    ৪। হাজার বছর পরে এই তারিখ নিয়ে মানুষ আলোচনা করবেন। আমরা এই মুহূর্তটাকে বাঁচছি। এটা কোনও সাধারণ সময় নয়। এটা কালচক্রের উপরে তৈরি স্মৃতিরেখা। আমরা সবাই জানি, রামের কাজ হলে পবনপুত্র হনুমান বিরাজমান থাকেন। আমি রামভক্ত হনুমানকে প্রণাম করি। মাতা জানকি, ভরত, শত্রুঘ্ন, অযোধ্যার ভূমি ও সরযূ নদীকে প্রণাম করছি। ঐশ্বরিক অনুভূতি হচ্ছে।

    ৫। আমি প্রভু শ্রী রামের ক্ষমা চাইছি। আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠেন মোদী। তিনি বলেন,'আমাদের পুরুষার্থ, ভালোবাসা ও তপস্যায় কিছু ঘাটতি ছিল যে এত বছর ধরে এই কাজ করতে পারিনি। আজ সেই ঘাটতি পূরণ হল। আমি বিশ্বাস করি, প্রভু রাম আমাদের ক্ষমা করবেন। ত্রেতা যুগের বিচ্ছেদ হয়েছিল মাত্র ১৪ বছর। এই যুগে অযোধ্যা ও দেশবাসী কয়েকশো বছরের বিচ্ছেদ সহ্য করেছেন। কয়েক প্রজন্ম এই বিচ্ছেদ সহ্য করেছেন। 

    ৬। ভারতের সংবিধানের প্রথম পৃষ্ঠাতেই বিরাজমান রাম। তার পরও কয়েক দশক ধরে রামের অস্তিত্ব নিয়ে আইনি লড়াই চলেছে। আমি ধন্যবাদ জানাব ভারতের আইনব্যবস্থাকে। আজ গ্রামে গ্রামে কীর্তন হচ্ছে। মন্দিরে হচ্ছে উৎসব। দোটা দেশ আজ দীপাবলি পালন করছে। সন্ধেয় রামজ্যোতি জ্বালানোর প্রস্তুতি চলছে ঘরে ঘরে। রাম সেতুর সূচনা যেখানে হয়েছিল সেখানে ছিলাম। যেভাবে তখন কালচক্র বদলেছিল, তখন আবার কালচক্র বদলাবে। এই ১১ দিন ধরে আমি সব জায়গায় গিয়েছি, যেখানে প্রভু রাম ছিলেন। ভারতের অন্তরাত্মায় বিরাজমান রয়েছেন রাম। 

    ৭। রামের কাজ কত লোক ত্যাগ ও তপস্যার পরাকাষ্ঠার উদাহরণ। সাধুসন্ত ও করসেবকদের কাছে আমরা ঋণী। এই মুহূর্ত ভারতীয় সমাজের মধ্যে পরিণত বোধও তৈরি করেছে। এটা বিজয়ের নয়, বিনয়েরও মুহূর্ত। এমন অনেক দেশ আছে, যারা নিজেদের ইতিহাসের জটিল গাঁট খোলার চেষ্টা করেছে, তারা কঠিন বাধার মুখে পড়েছে। কিন্তু এ দেশ যে আবেগ ও গুরুত্ব দিয়ে ইতিহাসের গাঁট খুলেছে, তা বলে দেয় আমাদের ভবিষ্যৎ, অতীতের থেকে সুন্দর হতে চলেছে। 

    ৮। একটা সময় লোকে বলত, রাম মন্দির তৈরি হলে আগুন লেগে যাবে। তারা ভারতের সামাজিক বিন্যাসকে বুঝতে পারেননি। রাম মন্দিরের নির্মাণ ধৈর্য, শান্তি ও সম্প্রীতির প্রতীক। কোনও আগুন নয়, বরং নতুন শক্তি সৃষ্টি করেছে। আমি সবার কাছে আহ্বান করছি, আসুন আপনারা অনুভব করুন, রাম আগুন নয়, রাম শক্তি। রাম বিবাদ নয়, রাম সমাধান। রাম শুধু আমাদের নয়, রাম সবার। রাম বর্তমান নয়, রাম অনন্তকাল। 

    ৯। এই মন্দির কেবলমাত্র দেবালয় নয়, ভারতের সৃষ্টি ও দর্শনের মন্দির। এই মন্দির রামের রূপে রাষ্ট্রচেতনার মঞ্চ। রাম প্রভাব, প্রবাহ, রাম নীতিও। মা সবরী তো কবে বলেছেন, রাম আয়েঙ্গে। সব ভারতীয়র মধ্যে এই বিশ্বাস তৈরি হবে। রামের মাধ্যমে জাতীয় চেতনার বিকাশ ঘটবে। সবাই এক। সব ভারতীয়র মধ্যে বন্ধুত্বের ভাবনা। এটাই দেব থেকে দেশের চেতনার বিস্তার। দেশের নিরাশার কোনও জায়গা নেই। আমি ছোট, সামান্য যারা ভাবছে, তাদের উচিত কাঠবেড়ালি কী করেছিল, সেটা শেখার। এটা আমাদের দ্বিধা কাটাবে। ছোট-বড় প্রতিটি চেষ্টা আলাদা শক্তি আছে। এটাই দেব থেকে দেশ, রাম থেকে রাষ্ট্রের চেতনার বিকাশ ঘটবে। 

    ১০। আমরা ভারতকে বৈভবশালী করতে পারব। ভারত যুবশক্তির পুঁজিতে ভরা। এমন ইতিবাচক পরিস্থিতি না জানি আবার কবে আসবে! আমরা থামব না। আমি যুবকদের বলব, আপনাদের সামনে হাজার হাজার বছরের পরম্পরা। আগামী সময় সাফল্যের এই পুণ্য রাম মন্দির সাক্ষী হতে চলেছে ভারত উদয়ের।
     
  • Link to this news (আজ তক)