২০ বছর ধরে চেষ্টা করলাম, পারিনি, আমি ক্ষমাপ্রার্থী: মমতা; পালটা 'রামাতঙ্ক' কটাক্ষ শুভেন্দুর!
২৪ ঘন্টা | ২৩ জানুয়ারি ২০২৪
অয়ন ঘোষাল ও কিরণ মান্না: "ওনার কথা মান্য করে চললে ভারত আরও উন্নত দেশ হতে পারত। উনি ৩টি কথা বলতেন। বিশ্বাস, ঐক্য এবং ত্যাগ। ত্যাগ এবং উপলব্ধি। ষোলো আনা পেতে হলে ষোলো আনা দিতে হবে। আমরা ১ দিন নয়, ৩৬৫ দিন ওনাকে স্মরণ করি। ওনার ত্যাগ তিতিক্ষা ও সংগ্রাম মনে রাখি।" নেতাজি জয়ন্তীতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন রেড রোডে নেতাজির মূর্তিতে মাল্যদান করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এরপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, স্বামী বিবেকানন্দ, রামকৃষ্ণদেব, আম্বেদকর সহ সবাইকে শ্রদ্ধা। উনি পরিকল্পনা কমিশন তৈরি করেছিলেন। দেশকে দিশা দেখাতে গিয়ে উনি কোথায় হারিয়ে গেলেন আজও জানতে পারলাম না। ওনার জন্মদিন জানি, মৃত্যুদিন জানি না। আমার সরকার আসার পর ৬৪ টি ফাইল এবং সব তথ্য পাবলিক ডোমেনে নিয়ে এসেছিলাম।" পাশাপাশি, কেন্দ্রকে উদ্দেশ করে তোপ দাগেন, "নেতাজি বন্দরের নাম চেঞ্জ হয়েছে। প্ল্যানিং কমিশন তুলে দেওয়া হয়েছে। কোনও প্ল্যান নেই দেশের জন্য। প্ল্যানিং এখন কিলিংয়ে চলে গিয়েছে। ডিভাইড অ্যান্ড রুল পলিসি চলছে। নীতি আয়োগ? না আছে নীতি, না আছে আয়োগ। মোমের পুতুল হয়ে বসে আছে।" মমতা আরও বলেন, "নেতাজি আন্দামানে শহিদ ও স্বরাজ দ্বীপ গড়েন। স্বাধীনতার কথা ঘোষণা করেন। দেশের নেতা তাকেই বলে যার একপাশে হিন্দু, একপাশে মুসলিম। থাকে শিখ, জৈন, বৌদ্ধ। কোথায়? আজ তোমার দেখা নেই। এই মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে বলতে ইচ্ছা করে, তোমার মতো নেতা আর নেই। কাকে পাব, কাকে বলব মনের কথা? রবি ঠাকুরের গানের ভাষায় বলি, তুমি কি কেবলই ছবি? আমি ২০ বছর ধরে চেষ্টা করলাম। জাতীয় ছুটি করতে পারিনি। আমি ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু পলিটিক্যাল প্রোগ্রামে ছুটি হয়ে যায়। মাঝে কেউ বলেছিল ছাই পাঠাব। কিন্তু ছাই দিয়ে আগুন চেপে রাখা যায় না।" একইসঙ্গে এদিন মমতা জানান, 'তরুণের স্বপ্ন' বইটি বাধ্যতামূলক করার জন্য তিনি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে বলেছেন। ওদিকে নন্দীগ্রাম-২ নম্বর ব্লকে নেতাজি জন্ম দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে তাঁর বক্তব্য নিয়ে কটাক্ষ করেন শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু বলেন, "রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রামাতঙ্কে ভুগছেন। যেমন জলাতঙ্কে মানুষ ভোগেন, তেমনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল ভুগছেন। আমরা ছুটি চায়নি। রামমন্দিরের প্রাণপ্রতিষ্ঠার বিশেষ মুহূর্তে যাতে বাংলার সনাতনীরা তাঁদের পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারেন এবং বিশেষ মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে পারেন, সেজন্য অনেকেই চেয়েছিলেন। সেই মতো আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু তা মান্যতা দেওয়া হয়নি। উনি রামাতঙ্কে ভুগছেন বলেই এমনটা করেছেন।" একইসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন, "নেতাজিকে যদি কেউ সম্মান দেন, তাহলে তিনি হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, আর কেউ নন। কারণ, তিনি-ই উদ্যোগ নিয়ে মূর্তি স্থাপন থেকে শুরু করে নেতাজির ফাইল সামনে আনার বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। নেতাজি প্রধানমন্ত্রী হলে ভারত ভাগ হত না। অখণ্ড ভারত হয়ে থাকত। আমরা নেতাজির আদর্শকে মান্যতা দিয়ে থাকি। তাই তাকে স্মরণ করে থাকি, তার দেখানো পথ অবলম্বন করে থাকি।"