রণজয় সিংহ: বিশেষভাবে সক্ষমদের শংসাপত্র নিয়ে জালচক্রের পর্দা ফাঁস। পাড়ায় সমাধান প্রকল্পে পর্দা ফাঁস হল বিডিওর কাছে। পুলিসের জালে তিন প্রতারক। তাদের মধ্যে রয়েছেন পুলিসেরই এক হোমগার্ড এবং তার জামাইবাবু যিনি তৃণমূল কর্মী। দীর্ঘ এক বছর ধরে এই প্রতারণা চক্র চালাচ্ছিল প্রতারকরা। হাজার হাজার টাকার বিনিময়ে বহু মানুষকে দিয়েছে জাল শংসাপত্র। সমগ্র ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল এলাকায়। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর শালদহ গ্রামে পাড়ায় সমাধান প্রকল্পে এই প্রতারণা চক্রের পর্দাফাঁস করেন হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সৌমেন মন্ডল।জানা গেছে, ওই প্রকল্পে উপভোক্তারা তাদের সমস্যা নিয়ে এসেছিলেন। সেই সময় বিশেষভাবে সক্ষম কিছু উপভোক্তা ভাতার আবেদনের জন্য শংসাপত্র জমা দেন। সেই শংসাপত্র দেখেই সন্দেহ হয় বিডিওর। তারপর খতিয়ে দেখেই জানা যায় সেই শংসাপত্রগুলি জাল। তারপরেই সামনে আসে ওই চক্রের কুকীর্তি। জানা যায় এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের পারো গ্রামের নূর আলম যিনি মালদা পুলিস লাইনে হোমগার্ড পদে কর্মরত। তার সঙ্গে রয়েছেন তৃণমূল কর্মী তাঁর জামাইবাবু নাজিমুল হক এবং ছাপাখানা দোকান ব্যবসায়ী মামুন আলি। এরপর তৃণমূল কর্মী নাজমুল হককে এলাকার মানুষই এলাকায় আটক করে। তারপরেই তাঁকে গ্রেফতার করে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিস। এরপর নূর আলম এবং মামুন আলিকেও গ্রেফতার করা হয়।রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েত, তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েত, বরুই গ্রাম পঞ্চায়েত সহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘ এক বছর ধরে এই জাল চক্র চলছিল। হাজার হাজার মানুষ প্রতারিত হয়েছেন এদের কাছে। এমনকি বিশেষভাবে সক্ষম নয় কিন্তু ভাতা পাওয়ার লোভ দেখিয়ে মোটা টাকার বিনিময়ে অনেককেও জাল শংসাপত্র দিয়েছে। কারোর কাছে নিয়েছেন ৩ হাজার আবার কারোর কাছে ৮ থেকে ১০ হাজার। সমগ্র ঘটনা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি নেতা রূপেশ আগরওলার অভিযোগ করেছেন, সমস্ত কিছুতে দুর্নীতি চলে এসেছে শাসকদলে। সমস্ত নেতা মন্ত্রী এর সঙ্গে যুক্ত। শাসকদলের মদত না থাকলে এসব হতে পরে না। বিজেপি শাসিত রাজ্যে তো এই সব হয় না। পশ্চিমবঙ্গে কেন হয়?যদিও তৃণমূলের সহ সভাপতি দুলাল সরকারের পালটা দাবি, প্রশাসন এখানে যথেষ্ট সক্রিয়। তাই এই চক্রের পর্দা ফাঁস হয়েছে। বিজেপি ওই সব বলবে। বিজেপির এখানে কোনওভাবেই ফুটবে না। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশ আছে সরকারি কর্মী হোক বা পুলিস হোক বা তৃণমুল কংগ্রেসের নামধারী কেউ হোক, দুর্নীতি করলে সবার সমান শাস্তি। দুর্নীতি করলে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সরকারে রেহাই নেই, তাই গ্রেফতার হয়েছে।