• সরকারি নিয়মের বেড়াজালে কমেছে রপ্তানি, হিলি সীমান্তে পড়ে নষ্ট হচ্ছে শয়ে শয়ে ট্রাক
    ২৪ ঘন্টা | ২৪ জানুয়ারি ২০২৪
  • শ্রীকান্ত ঠাকুর: ভারত-বাংলাদেশ রপ্তানি বাণিজ্যে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থলবন্দর। এই স্থলবন্দর দিয়ে বছরখানেক আগে পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ৩০০ লরি বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি করতো। কিন্তু বিগত এক বছরে পরিস্থিতি বদলেছে। এখন বাংলাদেশের রপ্তানি কমেছে হিলি সীমান্ত দিয়ে। গড়ে মাত্র ৩০-৩৫টি গাড়ি প্রতিদিন ওপারে পণ্য রপ্তানি করতে যায়, যা খুবই নগণ্য বলে দাবি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।

    একটা সময় শুধুমাত্র হিলি সিন্ডিকেটে দু'হাজারেরও বেশি পণ্যবাহী ট্রাক ছিল। ২০০০ ট্রাকে চালক ও তার সাহায্যকারী মিলিয়ে অন্ততপক্ষে ৪০০০ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছিল। গাড়ি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা। হিলি ব্লক থেকে প্রায় প্রতিদিনই পরিযায়ী শ্রমিকের কাজের জন্য মানুষ পাড়ি দিচ্ছেন ভিন্ন রাজ্যে। গাড়ি পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত যুবকদের সংখ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকের তালিকায় বেশি বলে দাবি করছেন পরিবহন ব্যবসায়ীরা।বিগত এক বছরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা, বিশেষ করে সাধারণ নির্বাচন ও বাংলাদেশের ডলারের স্বল্পতার কারণে ব্যবসা কমেছে বলে দাবি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। ত্রিমোহিনী থেকে হিলি পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা তে কয়েকশো পন্যবাহী ট্রাক ভাঙাচোরা অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে যা দেখলে স্পষ্টতই বোঝা যায় এই বিপুল সংখ্যক গাড়ি দীর্ঘদিন ব্যবহার হয়নি। গাড়ি মালিকদের দাবি ১০-১২ লাখ টাকা দিয়ে গাড়ি কিনে তা মাত্র তিন লাখ চার লাখ টাকায় ভাঙ্গা গাড়ির দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে পুরোপুরি ভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে গাড়ির ব্যবসা।কী কারনে বিপুল সংখ্যক গাড়ি বন্ধ হয়ে গেল তার তত্ত্ব তলাশ করতে গিয়ে গাড়ি মালিকরা জানালেন, সরকারি নতুন নিয়ম অনুযায়ী আগে থেকে পরিবহনের জন্য স্লট বুকিং করে পন্য পরিবহনের নতুন নিয়ম নিয়ে আসা হয়েছে। যার ফলে গাড়ি নিয়ে যাওয়ার আগেই দশ হাজার টাকা স্পট বুকিং করতে হচ্ছে গাড়ি মালিকদের। আর এর ফলেই লাভের হার কমেছে। অন্যদিকে পণ্য় পরিবহনের ক্ষেত্রে নানা বিধি-নিষেধ গাড়ি মালিকদের ব্যবসাকে নষ্ট করেছে বলে দাবি গাড়ি ব্যবসায়ীদের।

    এবছর বাংলাদেশে নির্বাচন ছিল। সেই নির্বাচনের জন্য দীর্ঘদিন সীমান্তের পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল বাংলাদেশ সরকার। এছাড়াও বাংলাদেশের ডলারের সমস্যা রয়েছে বলে ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি। পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন জেলার আঞ্চলিক পরিবহন দপ্তরের আধিকারিক। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হবে হিলি আন্তর্জাতিক সীমান্ত বাণিজ্য বন্দর দিয়ে আগের মতই পণ্য পরিবহন হবে ওপার বাংলার সঙ্গে, হাল ফিরবে হিলির।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)