নান্টু হাজরা ও পিয়ালি মিত্র: গত ৫ জানুয়ারির পথে আর হাঁটল না ইডি। বুধবার সাতসকালে প্রায় এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে তাঁরা হাজির হলেন সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে। পাশাপাশি ন্যাজট থানাকেও আগেভাগে জানিয়েই এলেন অভিযানে। শেষপর্যন্ত স্থানীয় পুলিসকে সার্চ ওয়ারেন্ট দেখিয়ে, সাক্ষী রেখে ও তালাভেঙে শেখ শাহাজাহানের বাড়িতে ঢুকলেন ইডি অফিসাররা।
এলাকা যে অভিযান হচ্ছে তা রাতে বসিরহাট থানায় ইমেল করে জানিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা। শেখ শাহজাহান এখনও পলাতক। তাকে ধরতে লুক আউট সার্কুলার জারি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তু সংস্থা। তার পরেও অধরা শাহজাহান। বুধবার সকালে শাহজাহানের বাড়িতে যায় ইডির ১২ অফিসারের একটি দল। এদের মধ্যে ছিলেন ৬ ইডি অফিসার, ৩ সাক্ষী, এলাকার ২ সাক্ষী ও একজবন ভিডিয়োগ্রাফার।এদিন সকালে সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় শেখ শাহজাহানের বাড়িতে হাজির হতেই তোলপাড় শুরু হয়ে যায় এলাকায়। খবর যায় ন্য়াজাট থানার পুলিসের কাছেও। পুলিস এসে যায়। শাহাজাহানের বাড়ি ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয়বাহিনী। শুরু হয়ে যায় তল্লাশির প্রক্রিয়া। স্থানীয় পুলিসকে সার্চ ওয়ারেন্ট দেখায় ইডি। সেইসময় পুলিস তাদের ভিডিয়োগ্রাফার রাখার কথা বলে কিন্তু ইডি সেই দাবি নাকচ করে দেয়। জানিয়ে দেওয়া হয় ভিডিয়োগ্রাফি করবে একমাত্র ইডি-ই। সেই ফুটেজ পুলিসকে দিয়ে দেওয়া হবে।ওইসব কথাবার্তার মধ্যে স্থানীয় দুই যুবক প্রদীপ সরদার ও মণিরুলকে জোগাড় করে ইডি। তাদেরকে সাক্ষী হিসেবে আনা হয়। তাদের জানিয়ে দেওয়া হয় তল্লাশির সময় তারা গোটা ঘটনার সাক্ষী থাকবেন। এদিকে গত ৫ তারিখে তালাবন্ধ অবস্থায় শাহজাহানোর ঘর ছেড়ে গিয়েছিল ইডি। এবার তারা একজন তালা খোলার মিস্ত্রি নিয়ে আসেন। সেই মিস্ত্রি তালাখোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু তা খোলা যায়নি। শেষপর্যন্ত তালা ভেঙেই ঘেরে ঢোকেন ইডির অফিসাররা।উল্লেখ্য, ইডির তরফে দাবি করা হচ্ছে কমপক্ষে ২০ হাজার কোটি টাকা রেশন দুর্নীতি হয়েছে। এতদিন যেসব দুর্নীতির কথা শোনা গিয়েছে তাদের সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছে এই দুর্নীতি। এই দুর্নীতির সবটাই সরকারি টাকা। ওই দুর্নীতির তদন্তে সম্প্রতি মন্ত্রি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের একটি চিঠি হাতে আসে ইডির। সেখানে ৪টি নাম পাওয়া য়ায়। এদের মধ্যে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে শঙ্কর আঢ্য ওরফে ডাকু। ওই তালিকায় নাম ছিল তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের। এনিয়ে তদন্ত নেমে ইডির ধারণা কয়েক হাজার টাকা দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে। তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল শেখ শাহজাহানের। আজ কমপক্ষে ১২৫ জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানকে নিয়ে তল্লাশিতে আসে ইডি। মনে করা হচ্ছে বাড়ি তল্লাশি করা হলে গুরুত্বপূর্ণ কোনও নথি পাওয়া যেতে পারে।