জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: রামমন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকে পড়ল একটি বাঁদর। শুধু ঢুকেই পড়ল না, গর্ভগৃহে ঢুকে একেবারে রামলালার মূর্তির কাছে চলে যায় সেটি। যা নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রীতিমতো হইচই পড়ে যায় অযোধ্যা রামমন্দিরে। ভক্তরা বলতে থাকেন, স্বয়ং হনুমানজি এসেছেন তাঁর প্রভুর সঙ্গে দেখা করতে! তাঁকে প্রণাম জানাতে... এদিকে মন্দিরের গর্ভগৃহে বাঁদর ঢুকে পড়তেই তৎপর হয়ে ওঠেন নিরাপত্তারক্ষীরা। 'অপ্রত্যাশিত অতিথি'র আগমনে তড়িঘড়ি তার দিকেই ছুটে যান সবাই। কারণ, সবাই ভয় পাচ্ছিলেন যে ওই বাঁদর রামলালার মূর্তির কোনও ক্ষতি করে দিতে পারে বলে! যদিও মন্দির কর্তৃপক্ষ, শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের তরফে এই ঘটনাকে 'সুন্দর' বলে বর্ণনা করা হয়েছে।মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে এক্স হ্যান্ডেলে এই ঘটনার কথা শেয়ার করা হয়েছে। ওই পোস্টে বলা হয়েছে, "মন্দিরের দক্ষিণ দিকের দরজা দিয়ে বাঁদরটি গর্ভগৃহে প্রবেশ করে। গর্ভগৃহে ঢুকেই বাঁদরটি রামলালার 'উৎসব' মূর্তির একেবারে কাছাকাছি চলে যায়। বাঁদরটি রামলালার মূর্তিটি মাটিতে ফেলে দিতে পারে এই আশঙ্কায় তাড়াতাড়ি বাঁদরটির দিকে ছুটে যান নিরাপত্তারক্ষীরা। তখন বাঁদরটি শান্তভাবে উত্তর দিকের গেটের কাছে যায়। কিন্তু সেই দরজাটি বন্ধ থাকায়, বাঁদরটি তখন গর্ভগৃহের ভিতর পূর্ব দিকে যায়। তারপর ভিড়ের মধ্যে দিয়েই পূর্ব দিকের দরজায় পৌঁছে যায়। কারও কোনও ক্ষতি না করেই, সেটি বাইরে বেরিয়ে যায়। নিরাপত্তারক্ষীরা বলছেন, আমাদের জন্য এটা যেন ঠিক হনুমানজি নিজে এসেছেন রামলালা দর্শনে।"সোমবার, ২২ জানুয়ারি রামমন্দিরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এরপর মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারি থেকেই সর্বসাধারণের দর্শনের জন্য খুলে দেওয়া হয় মন্দির। রামলালার দর্শনে প্রথম দিনেই ৫ লাখের বেশি ভক্ত ছুটে আসেন মন্দিরে। ভিড়ের চাপ সামলাতে একটা সময় কিছুক্ষণের জন্য মন্দির বন্ধও করে দিতে হয় পুলিসকে। সকাল ৬টায় মন্দিরের গেট খোলে জনসাধারণের জন্য। রাত ১০টাতেও ভক্ত আসেন দর্শনের জন্য। প্রতিদিন দুটি সময়ের স্লটে দর্শনার্থীদের স্বাগত জানানো হবে রামমন্দিরে। সকাল ৭টা থেকে ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। তারপর আবার দুপুর ২টো থেকে সন্ধে ৭টা পর্যন্ত। দুপুর ১টা নাগাদ ভোগ দেওয়ার পর বন্ধ রাখা হবে মন্দির। দিনে ৫ বার আরতি হবে মন্দিরে। অফলাইন এবং অনলাইনে এই 'আরতি'র পাস পাওয়া যাবে। অফলাইন পাস পাওয়া যাচ্ছে শ্রীরাম জন্মভূমি ক্যাম্প অফিস থেকে। দুপুরে ভোগের পর বিশ্রাম আর সন্ধ্যার ভোগ ও আরতির পর শয়ন। নিয়ম মেনে নিয়মিত চলবে রামের ভজন। একটি মাত্র কালো রঙের গ্রানাইট পাথর কেটে রামলালার মূর্তি তৈরি করেছেন কর্ণাটকের শিল্পী অরুণ যোগীরাজ। বহুমূল্য গহনায় সাজানো হয়েছে রামলালার বিগ্রহকে। বিগ্রহ সাজাতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৫ কেজি সোনা, ১৮,০০০ পান্না ও হিরে। রামলালাকে সাজানো হয়েছে তিলক, মুকুট, ৪টি নেকলেস, একটি রিস্ট ব্যান্ড, এক জোড়া অ্যাঙ্কলেট, একটি বিজয় মালা, দুটি আংটিতে। মুকুটের ওজন ১.৭ কেজি। ২২ ক্যারেটের সোনা ও ৭৫ ক্যারেটের হিরে দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মুকুটটি। ১৭৫ ক্যারেটের জাম্বিয়ান পান্না ও ২৬২ ক্যারেটের রুবি রয়েছে ওই মুকুটে। মুকুটের নীচেই রয়েছে তিলক। তৈরি হয়েছে ১৬ গ্রাম সোনা দিয়ে। এর দু-পাশে লাগানো হয়েছে ১০ ক্যারেটের হিরে। ব্যবহার করা হয়েছে বার্মিজ রুবিও। রামলালার হাতে রয়েছে ৬৫ গ্রামের একটি আংটি। এতে রয়েছে ৪ ক্যারেটের হিরে, ৩৩ ক্যারেটের পান্না, আংটির মাঝে রয়েছে জাম্বিয়ার একটি বড় পান্না। সপ্তাহের সাতদিনে সাতরঙের পোশাক পরানো হবে রামলালাকে। সোমবারে পোশাক সাদা। মঙ্গলবার লাল, বুধবার সবুজ পোশাক, বৃহস্পতিবার হলুদ। শুক্রবার আবার হালকা হলুদ বা ক্রিম রঙের পোশাক। শনিবার নীল আর রবিবার গোলাপি। স্নান করানো হবে লাল চন্দন আর মধুতে।