'ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ লক্ষ মহিলা নতুন করে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাবেন', বর্ধমানে ঘোষণা মমতার
২৪ ঘন্টা | ২৪ জানুয়ারি ২০২৪
সুতপা সেন: এদিন মোট ৩৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মোট ৪৮৯ টি প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া ৫৪৬ টি নতুন প্রকল্পের শিলান্যাসও করলেন যার জন্য ব্যয় হবে প্রায় ৮৩৫ কোটি টাকা। পাশাপাশি এদিন পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রায় চার লক্ষের বেশি ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার প্রায় দেড় লক্ষ, সব মিলিয়ে সাড়ে পাঁচ লক্ষ উপভোক্তাকে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা তুলে দেওয়া হল। তারমধ্যে মঞ্চ থেকে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতীকি হিসাবে ৫০ জনের হাতে পরিষেবা তুলে দিলেন।
এদিন শুধু পূর্ব বর্ধমান নয়, পশ্চিম বর্ধমান জেলার ও বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন তিনি। সভা থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা দার্জিলিংকে পুরো তুলে এনেছি কলকাতায়। দার্জিলিংয়েও বোধহয় এত ঠান্ডা পড়েনি। জেলাগুলোতেও প্রচুর ঠান্ডা পড়েছে। বর্ধমান জেলা হচ্ছে শস্যের ভান্ডার। বর্ধমান আর পাশের বীরভূম জেলা আমাদের ধান দেয়। আমার সেক্রেটারিয়েটের নাম আমি সেই জন্য নবান্ন রেখেছি। এর জন্য আমি গর্বিত। আমাদের মতো এত সমাজ সংস্কার, এত মানবিক উন্নয়ন সারা পৃথিবীতে কেউ করতে পারেনি। রাজ্যে দুই কোটি মহিলা 'লক্ষ্মীর ভান্ডার' পায়। 'সবুজ সাথী' সাইকেল পেয়েছে এক কোটি আঠাশ লক্ষ। ৮৫ লক্ষ কন্যাশ্রী। ১৬ লক্ষ ২০ হাজার মেয়ে 'রূপশ্রী' পেয়েছে। আমি আজ তাদের মধ্যে দুইজনকে নিজের থেকে বেনারসি শাড়ি দিলাম।রামায়ন, মহাভারত, কোরাণ, বাইবেল সবই শেষ হয়ে যাবে, তবু আমার প্রকল্পের কথা বলা শেষ হবে না। ১৩ লক্ষ মহিলা নতুন করে লক্ষীর ভান্ডার পাবেন ১ ফেব্রুয়ারি থেকে, যারা এখনও পাননি। কন্যাশ্রী এখনও পর্যন্ত ৮৫ লক্ষ মেয়ে পায়। আরও ১০ লক্ষ দেওয়া হচ্ছে। আমি সেঞ্চুরি দেখতে চাই। ওবিসি-র সব টাকা সেন্ট্রাল বন্ধ করে দিয়েছে। আমি আপনাদের স্কাই হাই দেখতে চাই। কেউ প্লেন চালাবেন, কেউ ডাক্তার হবেন।আপনাদের এখানে চাকরি হবে। ২৫ লক্ষ নাম আমরা লিখিয়েছি পরিযায়ী শ্রমিক ডেভলপমেন্ট বোর্ড এর মাধ্যমে। আপনাদের বলবো বাইরে যাবেন না। এখানে যদি দশ হাজার টাকাও পান আর বাইরে যদি এক লক্ষ টাকাও পান, সমমূল্য খরচ হয়ে যায়। নিজের বাড়িতে থাকুন, এর থেকে আনন্দ আর কিছুতে নেই। দশ হাজার কোটি টাকার উপর খরচ করে আমরা চাল কিনি। সেই চাল আমরা বিনা পয়সায় রেশনে দিই। মা মাটি মানুষের সরকার ই বিনা পয়সায় রেশন দিই।আরেকটা হয়েছে ঠুঁটো জগন্নাথ। ঠুঁটো মানে কিছু না করেই বসে আছে। বাক্সটা একদিন হয়ে যাবে ফুটো। পঁচাত্তর শতাংশ টাকা আমরা দিই, আর ২৫ শতাংশ টাকা দিয়ে বলছে সব নাকি ওরা দিচ্ছে। ওদের নাম লিখতে হবে। হাজার টাকার গ্যাসে ফুটছে বিনা পয়সার চাল আর এই তো দেশের হাল। আমাকে গালি দেওয়া বাকি আছে। কিছু রাজনৈতিক দলের নেতা আছে তাদের নেই কাজ তো খই ভাজ।যখন রেল রোজ অ্যাক্সিডেন্ট করছে, লোক মারছে, তখন কোথায় থাকো। যখন সংখ্যালঘুদের পিটিয়ে মারছে, তখন কোথায় থাকো ? ২২/২৩ সালে একশো দিনের কাজের এক টাকাও দেয় নি। তাই বলে আমাকে দূর্বল ভেবো না। আমি এই অবস্থাতেও বছরে ৪০ দিনের কাজ করিয়েছি। আপনারা কোন সাধু ? আপনারা সাধু নন, আপনারা শুধু মানুষকে বিঁধতে জানেন। আমরা বলেছি তোমার টাকা চাই না, তোমার ছবিও লাগাতে দেবো না, তোমার প্রচারও করতে দেবো না।আজ তুমি ধর্মের নামে ছুটি দিয়ে দিচ্ছ। তুমি প্রোগ্রাম করবে বলে ধর্মের নামে ছুটি দিয়ে দিলে আর দেশের জন্য জীবন দিলেন যে নেতাজি তার জন্মদিনে ছুটি দিলে না! তোমরা আজ স্বামীজিকে অপমান করছ, নেতাজিকে অপমান করছো। বাংলাকে অপমান করছ। মনে রেখে বাংলা যদি না থাকতো তাহলে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এত সফল হত না।"পথশ্রী ১" প্রকল্পে ১ লক্ষ ও "পথশ্রী ২" প্রকল্পে ১২ হাজার এর পর "পথশ্রী ৩" প্রকল্পে আরো ১২ হাজার নতুন গ্রামীণ রাস্তা তৈরি করা হবে বলে ঘোষণা করছি। দেড় কোটি ছেলে মেয়েরা শুধু মাত্র ক্ষুদ্র শিল্পে কর্মসংস্থান হয়েছে। ইয়াং ছেলে মেয়েদের চাকরি আটকে রেখে দিয়েছে কয়েকটা রাম, বাম, কং এর পান্ডারা। আপনারা আওয়াজ তুলুন। কেউ কেউ ভোটে জেতে না, কোর্টে চলে যায়। বিচারপতির বিরুদ্ধে কিছু বলা যায় না, কিন্তু বিচার নিয়ে বলা যায়। আমি নিজে আইনজীবী, আমি জানি। আমি মহামান্য আদালতের কাছে আবেদন করবো প্লিজ ভ্যাকান্সিগুলো পূরণ করার ব্যবস্থা করে দিন।লোকালি কেউ কেউ কিছু ভুল ত্রুটি করতে পারে। কিন্তু আমাকে ভুল বুঝবেন না। আবার দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে যান, যদি কিছু এখনও না পেয়ে থাকেন, তাহলে পেয়ে যাবেন। আরে বাবা বর্ষাকালে রাস্তা তো একটু ভাঙেই। আমরা বড় বড় গাড়ি গ্রামীণ রাস্তায় অ্যালাও করছি না। কিন্তু কেউ যদি টাকা খেয়ে করে তাহলে তার বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করুন। বাংলার মনীষীদের অসন্মান করা হলে আমরা নিজেদের অসন্মানিত বলে মনে করব।