• কেবল সম্মাননা নয়, কর্পূরীর ‘‌ভাগীদারী মডেল’‌ বাস্তবায়নের দাবি বিরোধীদের...
    আজকাল | ২৫ জানুয়ারি ২০২৪
  • ‌আবু হায়াত বিশ্বাস:‌  বিহারের প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কর্পূরী ঠাকুরকে মরণোত্তর ভারতরত্ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বিরোধী দলগুলি। একই সঙ্গে তারা বিজেপি সরকারকে মনে করিয়ে দিচ্ছে, কেবল ভারতরত্ন সম্মাননা দিলেই হবেনা, অনগ্রসর শ্রেণির সংরক্ষণের রূপকার, সোশ্যালিস্ট (সমাজবাদী) নেতা কর্পূরী ঠাকুরের ‘‌ভাগীদারী’ বা অংশগ্রহণমূলক মডেলকে কার্যকর করতে হবে।‌ মোদি সরকারের উদ্দেশে কংগ্রেস বলছে, যদি জননায়ক কর্পূরী ঠাকুরকে সত্যিকারের শ্রদ্ধা জানাতে হয়, তাহলে তার অংশগ্রহণমূলক মডেলটি বাস্তবায়ন করতে হবে এবং জাতগণনা করাতে হবে। বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, দশ বছর চুপ থাকার পর এখন ভোটের আগে ভারত রত্ন দেওয়ার কথা মনে পড়ল মোদি সরকারের!‌ জাতভিত্তিক গণনা ও এবং অনগ্রসরদের সংরক্ষণের জন্য যে চাপ তৈরি করেছে বিরোধী শিবির, তাতে চাপে পড়েছে বিজেপি সরকার। কর্পূরী ঠাকুরকে ভারতরত্ন সম্মান দেওয়ার সিদ্ধান্তের পর কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘‌যদিও সামাজিক ন্যায়বিচারের পথপ্রদর্শক জননায়ক কার্পুরী ঠাকুরকে ভারতরত্ন প্রদান করা মোদি সরকারের হতাশা ও ভণ্ডামিকে প্রকাশ করে, তবুও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস মরণোত্তর ভারতরত্ন পুরস্কারকে স্বাগত জানাচ্ছে।’‌ তিনি বলেন,‘‌দেশব্যাপী জাতগণনা করতে অস্বীকার করেছে কেন্দ্র। তা করলেই জননায়ক কর্পূরী ঠাকুরকে উপযুক্ত সম্মান প্রদান করা হত।’‌ যদিও বিহারের সামাজিক ন্যায় আন্দোলনের প্রয়াত নেতা কর্পূরী ঠাকুরকে ভারতরত্ন সম্মান দেওয়ার দাবি পুরনো। দীর্ঘ দিন ধরে এই দাবি করে আসছে জেডি(‌‌ইউ)‌‌, আরজেডি। দেরিতে হলেও কর্পূরী ঠাকুরের ভারতরত্ন সম্মান মেলায় খুশি তারা। বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব বলেছেন,জাত ভিত্তিক সংরক্ষণের জন্য যে চাপ তৈরি করেছে জোট,সেই চাপে পড়েই মোদি সরকার সিদ্ধান্ত!‌ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বক্তব্য, ‘‌ভাগীদারী ন্যায়’‌ ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার পাঁচ ন্যায়ের অন্যতম একটি এবং সামাজিক সাম্যের কেন্দ্রবিন্দু, যা জাত গণনার পরেই শুরু হতে পারে। প্রকৃত অর্থে, এই পদক্ষেপ জননায়ক কর্পুরী ঠাকুরজি এবং অনগ্রসর ও বঞ্চিতদের অধিকারের জন্য তাঁর সংগ্রামের প্রতিও একটি সত্যিকারের শ্রদ্ধা হবে। রাহুলের বক্তব্য, দেশে ‘‌সাংকেতিক রাজনীতি’ নয় ‘‌বাস্তবিক ন্যায়’-‌এর প্রয়োজন।‌‌এদিকে, সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব বলেছেন,‘‌জননায়ক কর্পূরী ঠাকুরজিকে মরোনোত্তর ভারতরত্ন ঘোষণা আসলে ‘‌সামাজিক ন্যায়’ আন্দোলনেরই জয়। এমনকি সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সংরক্ষণের প্রথাগত বিরোধীরাও এখন পিডিএর ৯০ শতাংশ লোকের ঐক্যের সামনে মাথা নত করতে হচ্ছে। পিডিএ ঐক্য ফল দিচ্ছে।’‌ উল্লেখ্য, ১৯৭৮ সালে জনতা পার্টির সরকারের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন কর্পূরী ঠাকুর প্রথম বিহারে অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) জন্য সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। জনতা জমানাতেই গঠিত হয়েছিল মণ্ডল কমিশন। যাকে হাতিয়ার করে রাজনৈতিক উত্থান লালুপ্রসাদ যাদব, নীতীশ কপমার, মুলায়ম সিং যাদবদের। অনেকেই মনে করছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে কর্পূরী ঠাকুরকে মরণোত্তর ভারতরত্ন দেওয়ার ঘোষণা অনগ্রসর ভোটব্যাঙ্কেই বিজেপি র ভাগ বসানোর কৌশল হতে পারে।
  • Link to this news (আজকাল)