শ্রীকান্ত ঠাকুর: দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বুনিয়াদপুর পৌরসভা পরিচালিত সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। সেখানে ডাক্তার ছাড়াই চলছে স্বাস্থ্য পরিষেবা। পৌর নাগরিকদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দিচ্ছেন একজন নার্স। রোগী দেখা ,ওষুধ দেওয়া সবই সামলাচ্ছে তিনি। ডাক্তারবাবু চলে গেছেন নভেম্বর মাসে। সময় গড়িয়েছে তিন মাসেরও বেশি। ডাক্তারবাবু যাওয়ার আগে রোগীদের যে প্রেসক্রিপশন লিখিয়েছিলেন সেই প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী একই ওষুধ দিচ্ছেন এই নার্স।
পৌরসভা গঠনের আট বছর পর বুনিয়াদপুর শহর বাসীদের স্বাস্থ্যপরিষেবা দিতে তৈরি হয়েছিল সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। কিন্তু পরিষেবা চালু হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই তা আবার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর অভাবে বন্ধ হওয়ার মুখে একজন নার্সকে দিয়েই চালানো হচ্ছে স্বাস্থ্য পরিষেবার মত গুরুত্বপূর্ণ একটি পরিষেবা। অবশ্য পৌর প্রশাসক বলছেন, তিনি তৃণমূলের জেলা সভাপতি থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য আধিকারিক সকলকে জানিয়েছেন সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।বুনিয়াদপুর পীরতলার পুরনো পুরসভা ভবনের দোতালায় চালু হয় সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। ২০২৩ সালে ঘটা করে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্বোধন হয়। একজন ডাক্তার ও দুইজন নার্স দিয়ে শুরু হয় স্বাস্থ্য পরিষেবার কাজ। সাড়ে চার মাসের মধ্যে একজন নার্স ও ডাক্তার অন্যত্র স্থানান্তর হয়। নভেম্বর থেকে তিন মাস যাবত সেই সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চলছে একটিমাত্র নার্সকে নিয়ে। পুরনো রোগীর প্রেসক্রিপশন দেখে ওষুধ দেওয়া, প্রেসার মাপা, তিনটি রেজিস্টার সামলানো সবরই করছেন একজন নার্স।শুরুর দিন থেকেই শহরের প্রাণকেন্দ্র পিরতলায় পুরসভার সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে রোগীদের চাপ ছিল যথেষ্ট। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন রোগীকে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিতে আসেন সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে আর স্বাস্থ্যপরিসেবা দিতে হচ্ছে নার্সকে। পুরনো প্রেসক্রিপশন দিয়ে কতক্ষণ একটা রোগীর একই ওষুধ চলবে তা নিয়ে যেমন রোগীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে, তেমনি নতুন রোগী এলে তার কি ওষুধ হবে তা নিয়েও সমস্যায় পড়ছেন রোগীরা। পুরনো রোগীদের প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে রিপিট ওষুধ নিতে কোন সমস্যা নেই। সমস্যায় পড়েছে চিকিৎসা করতে আসা নতুন রোগীরা।শুধুমাত্র জ্বর, সর্দি ,কাশি, কাট ইঞ্জুরি হলেই নতুন রোগীরা পরিষেবা পাচ্ছেন ওই নার্স থেকে। বাকিদের সেই আগের মত ৫ কিলোমিটার যাতায়াত করে রশিদপুর গ্রামীণ হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরিসেবা নিতে ছুটতে হচ্ছে পৌরবাসীদের। শুধুমাত্র তিন মাস আগে পুরনো প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে ডাইবেটিক ও হাইপার টেনশনের রোগীরা রিপিট ওষুধ পাচ্ছেন সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সম্প্রতি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য ডাক্তার এবং নার্স নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বেশ কয়েকজন নার্স আবেদনপত্র জমা দিলেও কোন ডাক্তার আবেদনপত্র জমা করেননি। এও জানা গিয়েছে কয়েকমাস আগে মালদা জেলার এক ডাক্তারকে এই সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল। তিনি নিযুক্ত হননি। পুরোবাসি প্রশান্ত সরকার বলেন, অত্যন্ত সুস্থ ভাবে এবং সারা জাগিয়ে এই পরিষেবা চালু হয়েছিল হঠাৎ কেন মাঝপথে তা বন্ধ হয়ে গেল জানি না। পুরোবাসীর স্বার্থের কথা মাথায় রেখে একে আবার দ্রুত চালু করা উচিত। বুনিয়াদপুর পুরসভার পৌর প্রশাসক অখিল বর্মন জানিয়েছেন, তিনি নার্স ও ডাক্তারের কথা জানিয়েছেন জেলা পার্টির সভাপতি সহ স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের। সমস্ত স্তরেই চেষ্টা চলছে খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।