বীরেন ভট্টাচার্য,দিল্লি: বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না হওয়ার জন্য একমাত্র দায়ী অধীররঞ্জন চৌধুরী। আজ দিল্লিতে সাংবাদিকদের জানাল তৃণমূল। দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন সাংবাদিকদের বলেছেন, অধীর চৌধুরীই জোটের কবর খুঁড়েছেন। তাঁর মতে, দৈনিক মমতা ব্যানার্জি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন করে এবং সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে জোট রাজনীতির ব্যাকরণ অবমাননা করেছেন অধীর। জোটের পরবর্তী সম্ভবনার প্রশ্নের জবাবে ডেরেক ও ব্রায়েন বলেছেন, পরবর্তী অধ্যায়ে চলে গিয়েছে বেশ কয়েকটি বিষয় এদিন তুলে ধরেছেন ডেরেক। তিনি বলেন, "বিজেপি নেতাদের ভাষায় কথা বলেছেন অধীর চৌধুরী। অথচ কখনও বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা বা মনরেগা সহ নানান প্রকল্পে টাকা বাকেয়া রাখার প্রসঙ্গে একদিনও একটি বাক্যও উচ্চারণ করেননি। বাংলায় ইডি এবং সিবিআই হানা দিলে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রায় দৈনিক সাংবাদিক সম্মেলন করে মমতা ব্যানার্জি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন অধীর চৌধুরী।" তিনি বলেছেন, যে কথা অধীর চৌধুরী বলেন, সেটি তিনি নিজে বললেও, তা রচনা করে দেয় বিজেপি নেতৃত্ব। অধীর চৌধুরীর তৃণমূল বিরোধিতার লাগাম দেওয়ার জন্য একাধিকবার কংগ্রেস হাইকম্যান্ডকে বার্তা দেওয়া হয়েছিল। যদিও তাতে কোনও ফল হয়নি। কেন অধীর চৌধুরীকে এত বেশি গুরুত্ব? তার ব্যাখাও দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা। তিনি বলেন, "অধীর চৌধুরী রাজ্য বা অন্য কোনওস্তরের নেতা বা পদাধিকারী নন। একদিকে তিনি যেমন বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, তেমনই কংগ্রেসের লোকসভার নেতা। রাজ্যসভায় তাঁর পদে রয়েছেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। অর্থাৎ তাঁরা দুজনেই একই পদাধিকারী।" ডেরেকের কথায়, "অধীর চৌধুরী নিয়ম করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিবৃতি এবং সাংবাদিক সম্মেলন করলেও তৃণমূলের কোনও সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী কখনও কংগ্রেস বা তাদের নেতাদের নামে কোনও বিরূপজোট প্রসঙ্গে ডেরেক বলেছেন, "আমরা জোটের ব্যাকারণ মেনে অনেক ধৈর্য এবং উদার থাকার পরীক্ষা দিয়েছি। " তিনি বলেন, বাংলার রাজনীতির বাস্তবতা বুঝতে হবে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডকে। তিনি এদিন জানিয়েছেন, পাটনার বৈঠকের সময়েই জোটের প্রসঙ্গে আলোচনা হয়ে গিয়েছিল এবং মুম্বই বৈঠকেই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। তারপর শুধুমাত্র আসন সমঝোতার বিষয়টিই বকেয়া ছিল বলে দাবি ডেরেকের। তাঁর বক্তব্য, "আসন সমঝোতার নির্দিষ্ট ফর্মূলাও আলোচনা হয়েছিল। তারপর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও কোনও অগ্রগতি হয়নি। ধৈর্যের একটা সীমা রয়েছে।" ১৯ ডিসেম্বর শেষবার বৈঠক হয় ইন্ডিয়া জোটের। সেই বৈঠকে আসন সমঝোতার জন্য ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা দেওয়া হয়। ডেরেক ও ব্রায়েন বলেন, সেই সময় পেরিয়ে গেলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। তবে জোট ভেস্তে যাওয়ার পর কংগ্রেসের তরফে তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতা এবং জোট নিয়ে ব্যাকচ্যানেল আলোচনা শুরু করা হয়েছে। যদিও তৃণমূল সূত্রের দাবি, "অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই পাতা উল্টে নিয়েছি।"