• রাজ্যের দুর্গাপুজোয় এবার অনুদান কেন্দ্রের, ধর্মীয় বিভাজনের প্রতিযোগিতা বলল সিপিএম-কংগ্রেস
    ২৪ ঘন্টা | ২৮ জানুয়ারি ২০২৪
  • কমলাক্ষ ভট্টাচার্য: দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে রাজ্য সরকারের অনুদান দেওয়াকে কেন্দ্র করে বরাবরই সরব বিরোধীরা। এবার একই কাজ করতে চলেছে কেন্দ্র সরকার। লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যের ৩৫টি পুজো কমিটিকে দেওয়া হবে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা অনুদান। ওই ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। তুষ্টিকরণের রাজনীতি বলে বিজেপিকে নিশানা করল বিরোধী সিপিএম, কংগ্রেস।

    বাংলার ক্লাবগুলিকে যে অনুদান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেন তার সমালোচনা বারেবারেই শোনা গিয়েছে বিজেপির মুখেও। এবার পরিস্থিতি একেবারে উল্টে গেল। আগামিকালই কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের তরফে রাজ্য়ের কোনও ক্লাবকে ১ লাখ, আবার কোনও ক্লাবকে ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেবে। বিজেপির একটি সামাজিক সংগঠনের হাত ধরে রবিবার সেই টাকা ওইসব ক্লাবের হাতে তুলে দেওয়া হবে। ওইসব ক্লাবের মধ্যে রয়েছে কলকাতার সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার, বেহালা ক্লাব, সন্তোষপুর ত্রিকোণ পার্কের মতো  ক্লাব রয়েছে। সবেমিলিয়ে সংখ্যাটা ৩৫।কেন্দ্রের ওই অনুদান নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অরূপ চক্রবর্তী বলেন, আমরা যে পথে চলি তা প্রথমে ওঁর সমালোচনা করেন। পরে তাদের ওই পথেই  চলতে হয়। লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে একই কাজ করেছিল বিজেপি। পরে মধ্য প্রদেশের ভোটের সময় চালু করতে হয়েছিল লাডলি বহেনা। এরাজ্যের বহু দুর্গাপুজো কমিটিগুলোকে অনুদান দেয়। রাজ্য সরকার যখন কোনও সিদ্ধান্ত নেয় তখন সবার কথা ভেবেই নেয়। কিন্তু ওঁরা কিসের ভিত্তিতে ৩৫টি ক্লাব বাছাই করেছেন তা জানি না। ওইসব ক্লাবগুলি শুভেন্দু অধিকারী নাকি সুকান্ত মজুমদার ঠিক করে দিয়েছেন তা দেখতে বলুন। এই বেছে নেওয়ার রাজনীতির মধ্যেই ওদের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য।অন্যদিকে, বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য এনিয়ে বলেন, কীসের ভিত্তিতে ওই অনুদান দেওয়া হবে তা আমার জানা নেই। না জেনে কিছু বলা সম্ভব নয়। কিন্তু যখন কেন্দ্র সরকার ৩৫টি ক্লাবকে চিহ্নিত করেছেন তখন নিঃসন্দেহে কিছু গাইডলাইস রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার যেটা করছে সেটা নির্দিষ্ট আঙ্গীকে করছে। কেউ যদি অনুদান না দেয় তাহলেও দুর্গাপুজো হবে। মানুষের ভক্তি আছড়ে পড়বে। কেন্দ্র যা করছে তা কোনও উত্কর্ষতার উপরে ভর করেই দেওয়া হবে।কেন্দ্রের ওই অনুদানের কঠোর সমালোচনা করেছেন সিপিএম নেতা ও আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। বিকাশবাবু বলেন, শুনে আমি বিস্মিত। আরএসএসের কর্মসূচিই হল প্রশাসনকে দিয়ে ধর্মীয় আবেগ তৈরি করা। তা করে মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা। আরএসএসের হয়ে ওই কাজটা মমতাই এরাজ্যে শুরু করেছেন। রাম মন্দির তৈরির পর কেন্দ্র নতুন করে একটা ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরি করেছে। সেটাকে আরও তোল্লাই দেওয়ার জন্য এবার পুজো কমিটিগুলিকে অনুদান দেওয়া হচ্ছে। আমরা যেটা বলি, প্রতিটি বিন্দুতে বিন্দুতে আরএসএসে কর্মসূচি মমতা প্রয়োগ করছেন। আরএসএস-বিজেপির শক্তি বাড়াচ্ছেন। ধর্মীয় বিভাজন তৈরির ক্ষেত্রে মমতা ও মোদী একই নৌকার যাত্রী হচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গবাসীকে সচেতন হতে হবে।এনিয়ে সরব রাজ্য কংগ্রেসও। দলের নেতা সৌম্য আইচ রায় বলেন, যেটা তৃণমূল করবে সেটা বিজেপি করবে। অনুদানের বিপক্ষে আমরা নয়। কিন্তু সরকারের কাজ কি এটা? সরকার ডিএ দিতে পারে না, চাকরি দিতে পারে না। বাংলাতেও এই কাজ করতে চাইছে বিজেপি। সরকারের এটা কি কোনও কাজ? আর এরা ধর্মীয় মৌলবাদের প্রতিযোগিতা করছে। বিজেপি, তৃণমূল আসার আগে কি দুর্গাপুজো হতো না? দুর্গাপুজোকে নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি এমন নগ্ন রাজনীতি বাংলা আগে কখনও দেখেনি।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)