• নীতীশের গড়ে রাহুলের ন্যায় যাত্রা 
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৯ জানুয়ারি ২০২৪
  • পাটনা, ২৯ জানুয়ারি ?  রাজনীতিতে নানা ডামাডোলের পরই  রাহুল গান্ধির  ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ সোমবার সকালে প্রবেশ করল  বিহারে।বিহারের রাজনীতি নিয়ে এখন তোলপাড় দেশ।  রবিবারই নীতিশ কুমার আবার এনডিএ-তে ফিরেছেন। রবিবার নবমবারের জন্য শপথ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পদে।  তারপর সোমবারই বিহারের কিষাণগঞ্জে প্রবেশ করে রাহুলের ন্যায় যাত্রা।  

    ১৪ জানুয়ারি যখন মণিপুর থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন রাহুল, তখন বিহারে ক্ষমতায় ছিল ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকার, যে জোটের শরিক ছিল তাঁর দল কংগ্রেসও। কিন্তু সোমবার যখন কিষাণগঞ্জে প্রবেশ করল রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রা , তখন সেখানে সরকারে বদল ঘটেছে। ‘মহাগঠবন্ধন’ থেকে বেরিয়ে রবিবার বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ-তে যোগ দিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তার পরেই জেডিইউ-এর সহযোগিতায় সে রাজ্যে সরকার গড়েছে বিজেপি, যে জোট সরকারে মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন নীতীশ কুমারই।


    সোমবার সকালে উত্তর দিনাজপুরের সোনাপুর থেকে যাত্রা শুরু হয়ে সকাল ১১টা নাগাদ বিহারের কিষাণগঞ্জে পৌঁছয়। মুসলমান অধ্যুষিত এই এলাকায়  ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচন থেকেই কিষাণগঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রটি কংগ্রেসের দখলে রয়েছে। ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা আগামী কাল পূর্ণিয়া এবং পরশু কাটিহার দিয়ে যাবে। দু’টি জেলাই জেডিইউ-এর শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। যখন যাত্রা শুরু হয়েছিল, তখন এই এলাকাগুলি কংগ্রেসের ‘পক্ষে’ ছিল। 
    এদিন বিহারে প্রবেশের পর কিষাণগঞ্জে রাহুল বলেন, ? অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করছিলেন এই যাত্রার উদ্দেশ্য কি ? আমরা বলেছি, এক ধর্ম যখন অন্য ধর্মের সঙ্গে লড়াই করছে তখন আমরা একটি দোকান খুলেছি।  বিদ্বেষের বাজারে ভালোবাসার দোকান।  এই যাত্রা দেশের রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে।  আমরা দেখিয়েছি আদর্শ আর মহব্বত। ? জাতিগণনা নিয়ে বলতে গিয়ে রাহুল বলেন, ? জাতিগণনা হলেই জনজাতি এবং ওবিসি তাঁদের প্রাপ্য সম্পর্কে জানতে পারবেন।  এখন তাঁরা নিজেদের প্রাপ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রয়েছেন। ? 
    এদিন মণিপুর ইস্যুতেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নীরবতা নিয়ে আবার প্রশ্ন তোলেন রাহুল। তাঁর কথায়, বিজেপি হিংসা ছড়াচ্ছে। মানুষ আর্থিক, সামাজিক ন্যায় পাচ্ছেন না। সেই ঘৃণার রাজনীতির মাঝে ‘ভালবাসার দোকান’ খুলেছেন তাঁরা।
    ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর এই প্রথম বিহারে এলেন রাহুল। ২০২০ সালের নির্বাচনে এনডিএ জোট নীতীশ কুমারের অধীনে সরকার গঠন করে। কিন্তু ২ বছর পর, ২০২২ সালের আগস্টে এনডিএ জোট থেকে বেরিয়ে যান নীতীশ। আরজেডি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে পুনরায় হাত মেলান তিনি। সরকার গড়ে ‘মহাগঠবন্ধন’ জোট। লোকসভা নির্বাচনের আগে মূলত তাঁর উদ্যোগেই  বিজেপি বিরোধী  ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সৃষ্টি । কিন্তু সেই জোট থেকে বেরিয়ে রবিবারই বিজেপির হাত ধরে নবম বারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন তিনি।
    ৩১ জানুয়ারি বিহার থেকে ফের বাংলায় ঢুকবে রাহুলের ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা। মালদহের সুজাপুর থেকে ফের শুরু হবে বাংলায় রাহুল গান্ধির দ্বিতীয় পর্যায়ের যাত্রা। মালদহ হয়ে পৌঁছবে অধীর চৌধুরীর গড় মুর্শিদাবাদে ।  তার পর প্রবেশ করবে ঝাড়খণ্ডে।এদিকে পাটনার রাজনৈতিক পালাবদল ইন্ডিয়া জোটের কাছে বড়সড় ধাক্কা। জোটের মূল উদ্যোক্তা নীতীশ কুমার রাতারাতি এনডিএ শিবিরে যোগ দিয়েছেন। এই পরিস্থিতির মধ্যেই বিহারে প্রবেশ করেছে রাহুল গান্ধির ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা। তবে বক্তব্য রাখতে উঠে নীতীশ সম্পর্ক একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি রাহুল। তাঁর ভাষণে একবারের জন্যও উল্লেখ ছিল না নীতীশ কুমারের রাজনৈতিক ভোলবদলের কথা।
    রমেশ বলেন, ?কাল বিহারে রাজনৈতিক পালাবদলের পর আজ রাহুল গান্ধিকে দু?হাত বাড়িয়ে স্বাগত জানিয়েছেন এখানকার মানুষ। ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা এখানে প্রচুর মানুষের সমর্থন পাচ্ছে। আমরা আগেই নীতীশ কুমারকে এই যাত্রায় রাহুলজির সঙ্গে যোগদান করার আহ্বান জানিয়েছিলাম। কী করে জানব তিনি একজন গিরগিটি।?
    ৩১ জানুয়ারি বিহার থেকে ফের বাংলায় ঢুকবে রাহুলের ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা। মালদহের সুজাপুর থেকে ফের শুরু হবে বাংলায় রাহুল গান্ধির দ্বিতীয় পর্যায়ের যাত্রা। মালদহ হয়ে পৌঁছবে অধীর চৌধুরীর গড় মুর্শিদাবাদে । তারপর প্রবেশ করবে ঝাড়খণ্ডে।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)