• বইমেলায় বিক্রি ২৮ কোটির, শেষ দিনে 'বিজয়া দশমীর মনখারাপ' মাঠজুড়ে...
    আজকাল | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • রিয়া পাত্রবই পার্বণের শেষ দিন। কেউ কেউ বলছেন চতুর্দশীতে বিজয়া। গত কয়েকমাস ধরে প্রকাশক, লেখক, গিল্ডের যে অসম্ভব ব্যস্ততা থাকে, এবং বছর ভরের অপেক্ষা থাকে পাঠকদের, আজ তার সমাপ্তি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেলার শেষ দিনে ভিড় বাড়লেও, একটু লক্ষ্য করলেই বোঝা যাচ্ছে, স্পষ্ট হচ্ছে মেলা ভাঙার আয়োজন। মন কেমন মাঠ জুড়ে। সেই মনকেমনের সুর শোনা গেল গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশু শেখর দে, সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়ের গলায়। ভারাক্রান্ত প্রকাশক, পাঠক সকলের মন। বুধবার এসবিআই অডিটোরিয়ামে উপস্থিত ছিলেন গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশু শেখর দে, সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়, কোষাধক্ষ্য তাপস সাহা, যুগ্ম সম্পাদক রাজু বর্মন, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, কমিশনার অফ বিধান নগর আইপিএস গৌরব শর্মা সহ বহু বিশিষ্ট জন। সকলেই জানালেন ১৪ দিনের বইমেলার কথা, তার আগের লম্বা প্রস্তুতির কথা এবং পরের মনখারাপের কথা। গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশু শেখর দে বইমেলা ২০২৪ সফল করার জন্য ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশ, ইউনাইটেড কিংডম, জার্মানি, কেএমডিএ, বিধাননগর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর, বিধাননগর সিটি পুলিশ, দমকল বিভাগ, পরিবহন দপ্তর, বন দপ্তর, স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া, মেঘবেলা, পিয়ারলেস, সি এসি লিমিটেড, এসএনইউ, জাগো বাংলা সহ সকলকে। ধন্যবাদ জানিয়েছেন সকল প্রকাশকদের, পাঠকদের। প্রতি বছর প্রশ্ন থাকে, বইমেলায় ভিড় হল কত? বিক্রি হল কতটা? গিল্ডের পরিসংখ্যান বলছে ২০২৩- এর বইমেলায় যেখানে ২৫ লক্ষ মানুষ এসেছিলেন, ২০২৪ এর বইমেলায় তাঁর থেকে অনেক বেশি মানুষ এসেছেন। প্রায় ২৯ লক্ষ মানুষ গত কয়েকদিন এসেছেন বইমেলা প্রাঙ্গণে। বিক্রি হয়েছে প্রায় ২৮ কোটির। বিক্রির টাকার পরিমাণ বেশি হলেও গতবছরের তুলনায় বিক্রির হার কিছু কম। কারণ? সুধাংশু শেখর দে বলছেন, মাসের শেষের দিকে হওয়ায় অনেকেই হয়ত সমস্ত কেনাকাটা করে উঠতে পারেন নি। আগামী বারের বইমেলার দিন ছুটির, মাসের শুরু সব সামঞ্জস্য রেখেই করা হবে বলে জানিয়েছে গিল্ড। তবে বইমেলার সময় কিছুটা এগিয়ে আসায় যে সুবিধাও হয়েছে সেকথা শোনা গেল ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়ের গলায়। তিনি বলেন, "বইমেলা এবার কিছুটা এগিয়ে আসায় মানুষ একটা ভাল আবহাওয়া পেয়েছে। শেষের দিকে একটু বৃষ্টি, গরমের ভাব থাকলেও শুরুর দিন ভাল কেটেছে।" সঙ্গেই তিনি বলেন, এবার বইমেলায় গিল্ড নতুন বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে, তিনি আশাবাদী আগামী দিনেও গিল্ড নতুন নতুন উদ্যোগ নেবে। ১৪ দিনের বইমেলার শেষ দিনে গিল্ডের সভাপতি জানালেন, " এবার লক্ষ্য করেছি জনসমাগম বেশি, তরুণ প্রজন্ম মাঠে আসছে। বই উপহার দেওয়া শুরু হয়েছে। বইয়ের বিকল্প নেই আসলে।" বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, বইমেলা যেন বাড়ির উৎসব। বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার জানান, মাসখানেক আগে থেকেই তাঁদের যে প্রস্তুতি থাকে। সকলে মিলে আগত পাঠকদের যাতে কোনও অসুবিধে না হয় সেদিকে নজর রাখেন। ১৪ দিনের বইমেলা তাঁর কাছে এক সুন্দর উৎসব। শেষ দিনে জনালেন, বইমেলায় কোনও চুরি, পকেটমারি, ইভটিজিংয়ের মতো ঘটনা ঘটেনি। তাঁর মতে এটি একদিকে সামাজিক পরিবর্তনকে ইঙ্গিত করে। বইমেলার সামগ্রিক সাফল্যের সঙ্গে যারা জড়িয়ে, সেসব দপ্তর এবং সংস্থার হাতে সম্মান জ্ঞাপনার্থে স্মারক তুলে দেওয়া হয়। বড় স্টল গুলির মধ্যে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় পারুল প্রকাশনী প্রাইভেট লিমিটেডের হাতে। ছোট স্টলগুলির মধ্যে পুরস্কার তুলে দেওয়া হল কল্পবিশ্ব পাবলিকেশন অ্যান্ড প্রতিশ্রুতি এবং মান্দাস প্রকাশনের হাতে।
  • Link to this news (আজকাল)