রোমহর্ষক! বাঘের ডেরায় তাড়া করে দুই জলদস্যুকে পাকড়াও, মিলল হরিণপোড়া ছাইও...
২৪ ঘন্টা | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: পিছু ধাওয়া করে দুই বাংলাদেশি জলদস্যু তথা ডাকাতকে পাকড়াও। তা-ও আবার যেখানে-সেখানে নয়, খোদ বাঘের ডেরায়। দুঃসাহসিক, রোমাঞ্চকর কাজটি করলে সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ। উদ্ধার হল বন্ধুক-সহ ধারালো অস্ত্রশস্ত্র।
দক্ষিণরায়ের আপন দেশে খেল দেখাল সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ! পিছু ধাওয়া করে দুটি নৌকা-সহ দুই বাংলাদেশি ডাকাত তথা জলদস্যুকে গ্রেফতার করল সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ। ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনে ন্যাশানাল ইস্ট পার্ক রেঞ্জ এলাকায়। ধৃতরা হল আজিজ সরদার,আব্দুল গফ্ফর হাওলাদার। ধৃতদের বাড়ি বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এলাকায় বলে জানা যায়। ধৃতদের কাছ থেকে দুটি নৌকা, একটি একনলা বন্দুক, ১টি হরিণের শিং, ৬টি দা, ১টি কুঠার, ৬টি মোবাইল ফোন, ২টি বাংলাদেশি সিমকার্ড, বাংলাদেশি ৫৫০ টাকা, নেপালের একটি ২০ টাকার নোট, ১০টি গেঁওয়া কাঠ-সহ অন্যান্য সামগ্রী।জানা গিয়েছে, ধৃতরা মৎস্যজীবীদের বেধড়ক মারধর করে ৬টি কাঁকড়া ধরার নৌকা ও একটি মাছ ধরার নৌকা ছিনতাই করে। আরও জানা গিয়েছে, সুন্দরবনের ন্যাশনাল ইস্ট পার্ক রেঞ্জ-সংলগ্ন খালের ধারে সুন্দরবনে ন্যাশনাল ইস্ট পার্ক রেঞ্জের রেঞ্জার স্বপনকুমার মাঝি-সহ ৭ সদস্যের একটি দল নজরদারি করছিল। সেই সময় তারা ৪ টি নৌকা দেখতে পায়। রেঞ্জার স্বপনকুমার মাঝি-সহ বাকিরা দ্রুততার সঙ্গে নৌকার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেন।কিছু একটা গোলমাল ঘটেছে বুঝে দুটি নৌকার ৭ জন নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সুন্দরবন জঙ্গলে বাঘের ডেরায় লুকিয়ে পড়ে। সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের সদস্যরা তাতে পিছপা হননি। তাঁরা সুন্দরবন জঙ্গলে নেমে চিরুনি তল্লাশি চালান। দীর্ঘ প্রায় দুঘণ্টা বাঘের আস্তানায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে দুই বাংলাদেশি ডাকাতকে অবশেষে ধরে ফেলেন তাঁরা। অন্যান্যরা পালিয়ে গা-ঢাকা দেয় বলে জানা যায়। তবে তাদের খোঁজে সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ তল্লাশি অভিযান জারি রেখেছে। ধৃত দুই ডাকাতকে আলিপুর এসিজেএম আদালতে তোলা হবে।ঘটনা প্রসঙ্গে ন্যাশানাল ইস্ট পার্কের ট্রেনি রেঞ্জার নবকুমার সাউ জানিয়েছেন, 'ধৃত ডাকাতরা সুন্দরবনের জঙ্গলে ডাকাতি করার পাশাপাশি একটি হরিণ মেরে পুড়িয়ে খেয়েছে। প্রমাণস্বরূপ সুন্দরবন জঙ্গলে পোড়া জায়গাটি পাওয়াও গিয়েছে।'বর্তমানে সুন্দরবনে প্রচুর পর্যটকদের আনাগোনা। এ সময়ে অসংখ্য ভিড় পর্যটকদের। সুযোগ বুঝে জলদস্যুরা অসামাজিক কাজ করার উদ্দেশ্য নিয়েই ভারতে প্রবেশ করেছিল। তবে সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের তীক্ষ্ণ নজরদারি জারি ছিল বলে ধরা পড়ে যায় বাংলাদেশি ডাকাতরা। গত ৯ মাসের মধ্যে ৪ বার এ ধরনের সাফল্য পায় সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ। তবে গত পাঁচ বছরে এমন বড় সাফল্য আসেনি তাদের। যা অত্যন্ত বিরল বলে মনে করছেন সুন্দরবনবাসীরাও।